Home / খেলাধুলা / বাবা হয়েও প্রশ্নবিদ্ধ তাসকিন, অতঃপর ‘নোংরা’ মন্তব্যের জবাব
বাবা হয়েও প্রশ্নবিদ্ধ তাসকিন, অতঃপর ‘নোংরা’ মন্তব্যের জবাব

বাবা হয়েও প্রশ্নবিদ্ধ তাসকিন, অতঃপর ‘নোংরা’ মন্তব্যের জবাব

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এবার নোংরা কমেন্টের শিকার হলেন জাতীয় দলের বাইরে থাকা পেসার তাসকিন আহমেদ। শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পুত্র সন্তানের বাবা হওয়ার পর স্ত্রী এবং নবজাতকের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে ভক্তদের আনন্দের খবর জানাতে চেয়েছিলেন তিনি। স্ত্রী ও সদ্যজাত ছেলের সঙ্গে একটি সেলফি তুলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করেন তিনি।

‘আলহামদুলিল্লাহ, মাই বয়’ লেখা তাসকিনের ওই পোস্টে অনেকে আবার নোংরা মন্তব্যও করেন। তার বিয়ে ও সন্তানের জন্ম নিয়ে নানা ধরনের ‘কুরুচিপূর্ণ’ প্রশ্ন তোলেন অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী। তাসকিনের স্ত্রী বিয়ের আগেই গর্ভবতী ছিলেন কি না- এমন নোংরা সব কমেন্টে ভরে উঠে তাসকিনের কমেন্টবক্স! শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশি ফেসবুক ইউজারদের এসব নোংরামির জবাব না দিয়ে থাকতে পারেননি ইনজুরি আক্রান্ত এই পেসার। একই সঙ্গে তাসকিনের পাশে দাঁড়িয়ে নোংরা কমেন্টের জবাব দিয়েছেন বেশ কিছু শিক্ষিত নেটিজেনরাও।

তবে বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে তাসকিনই যে প্রথম ফেসবুকে নেটিজেনদের এমন বিকৃত মানসিকতার শিকার হয়েছেন তা কিন্তু নয়। এর আগে সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, নাসির হোসেনদেরও এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। আর ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি তো একবার তার ফেসবুক আইডি বাংলাদেশের জন্য ‘রেস্ট্রিকটেড’ করে দিয়েছিলেন!

তাদের সন্তানের জন্ম ‘এত তাড়াতাড়ি’ কীভাবে হলো; সেটা নিয়ে বিকৃত মানুষগুলোর ‘গবেষণা’র শেষ নেই! একের পর এক বাজে মন্তব্যের ধেয়ে আসার পর ঠাণ্ডা মস্তিষ্কে এবং ভদ্র ও মার্জিত ভাষায় জবাব দেন তাসকিন।

সেই পোস্টেই তাসকিনকে মন্তব্য করেন, ‘সবার উদ্দেশ্যে একটা কথা বলি, কেউ মনে কিছু নিয়েন না, আমার বিয়ে হইছে ১১ মাস। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ থেকে এসেই বিয়ে করলাম ৩১ অক্টোবর এবং বিয়ের বয়স হলো ১১ মাস, সাউথ আফ্রিকা ছিলাম ৪৮ দিন, সব মিলিয়ে হলো ১২ মাস ১৮ দিন। আমার পুত্র সন্তান হইলো ৯ মাস ২৭ দিনে.. যদি বিয়ের আগে আমার স্ত্রী প্রেগন্যান্ট হইতো তা হলে আমার বাচ্চা বিয়ের ৬ মাস এর মধ্যেই দুনিয়াতে থাকত..যাই হোক যাদের ভুল ধারণা ছিল আমাদের প্রতি; তাদের জন্য এই মেসেজটি। ধন্যবাদ!’

আমাদের উচিত ছিল তাসকিনকে ধন্যবাদ দেওয়া। এভাবে সরাসরি চপেটাঘাত আমাদের যুব সমাজের যে বড় দরকার ছিল। একজন মানুষ তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় নিয়েও কথা বলতে বাধ্য হচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ব্যক্তিগত ব্যাপারে সন্দেহ দূর করানোর জন্য কথা শুনতে হচ্ছে তাঁকে! একজন গর্বিত পিতা তাঁর আনন্দের সংবাদ জানাচ্ছেন, সেখানে কিছু মানুষ নর্দমার কীটের মতো অশালীন ভাষায় মন্তব্য করে যাচ্ছেন।

একজন ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করে যাচ্ছেন কোনো দ্বিধা ছাড়াই! অভিনন্দন বার্তার চেয়ে এসব মন্তব্যেই মানুষ তাঁদের ভালোবাসা ও পছন্দের কথা জানিয়ে যাচ্ছেন। পরিস্থিতি কতটা খারাপ হলে, একজন তারকা এমন একটা ব্যস্ত সময়েও নিজের পোস্টে আবার মন্তব্য করতে বাধ্য হন! এমন নয় যে বাংলাদেশের সমর্থকদের এমন আচরণ নতুন কিছু।

এদিকে, তাসকিনের এই কমেন্ট করতে বাধ্য করাকে বাঙালি জাতির জন্য লজ্জা বলে মনে করছেন তার ভক্তরা।

বার্তা কক্ষ
সেপেটম্বর ৩০,২০১৮

Leave a Reply