Home / বিশেষ সংবাদ / তার হৃৎপিণ্ড বুকে নয়, ব্যাগে!
তার হৃৎপিণ্ড বুকে নয়, ব্যাগে!

তার হৃৎপিণ্ড বুকে নয়, ব্যাগে!

সত্যিকারের কোনো হৃৎপিণ্ড নেই যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা সালহা হোসাইনের দেহের ভেতর। অবাক হয়ে হয়তো ভাবছেন, তাহলে তিনি বেঁচে আছেন কী করে? আসলে তাঁর সঙ্গে সব সময় থাকে একটি ব্যাগ; সেই ব্যাগের ভেতরই থাকে তাঁর হৃৎপিণ্ড, যা কৃত্রিম।

সালহা হচ্ছেন যুক্তরাজ্যের প্রথম নারী, যাঁর শরীরের বাইরে একটি কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড লাগানো হয়েছে। হৃৎপিণ্ডের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার পর দেশটির চিকিৎসকরা তাঁকে এই কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড লাগিয়ে দেন। যত দিন তিনি একজন হৃৎপিণ্ডের ডোনার না পাচ্ছেন, তত দিন তাঁকে এটি বয়ে বেড়াতে হবে।

সালহা বলেন, ‘আমার মেয়ের বয়স যখন ছয় বছর, একদিন সকালে বুকে ভয়াবহ ব্যথা শুরু হয়। সেই সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। আমি বুঝতে পারছিলাম এটা মারাত্মক কিছু হয়েছে। দ্রুত হাসপাতালে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা জানালেন, আমার হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করতে হবে। কিন্তু আমি এতটাই অসুস্থ ছিলাম, তাঁরা আমাকে একটি কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড সংযোজন করে দিতে বাধ্য হন।’

ব্যাগের ভেতর বহনযোগ্য যন্ত্রটি সালহার শরীরের রক্ত সরবরাহ ঠিক রাখে। নানা টিউবের মধ্য দিয়ে শরীরের রক্ত এই কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড এসে পরিশোধিত হয়ে আবার টিউবের মাধ্যমে শরীরে চলে যায়। তাঁর শরীরের ভেতরেও এ রকম প্লাস্টিকের কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড রয়েছে, যেগুলো সত্যিকারের হৃৎপিণ্ডের মতোই রক্ত পাম্প করে শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পাঠিয়ে দেয়।

যুক্তরাজ্যে সালহার মতো কয়েক শ রোগী আছে, যারা হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু তাদের সবাই সময়মতো ডোনার পায় না। ২০১৬-১৭ সালে এ রকম অপেক্ষার তালিকায় থাকা ৪০ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তবে কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড স্থাপনের পর সালহার চিন্তাভাবনায় বড় পরিবর্তন এসেছে।

সালহা বলেন, ‘মৃত্যুশয্যায় শুয়ে অনেক কিছুই আমি উপলব্ধি করতে পেরেছি। এর একটি হলো, যেসব বিষয় নিয়ে আমরা চিন্তা করি, এই যেমন—বয়লার সমস্যা, গাড়ির সমস্যা বা মানুষের সমস্যা, এগুলো আসলে কিছুই না। আমি এখন জীবনকে আরো ভালোভাবে উপলব্ধি করতে শিখেছি।’

(বিবিসি)

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৬: ১০ পি.এম, ০৯ ফেব্রুয়ারি২০১৮,শুক্রবার ।
এএস.