Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জ / জুমাতুল বিদা,শবে কদর ও ঈদের জামাত আয়োজনে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ
জুমাতুল

জুমাতুল বিদা,শবে কদর ও ঈদের জামাত আয়োজনে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ

ওয়াকিফ ও মোতোয়াল্লি মরহূম আহমদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) ওয়াকফ এ্যাস্টেট কর্তৃক পরিচালিত হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে মাহে রমজান উপলক্ষে বিশেষ ব্যবস্থ গ্রহণ করা সহ পবিত্র রমজান মাসের শেষ জুমা বা জুমাতুল বিদা ৫ এপ্রিল শুক্রবার এ জুমআতুল বিদা, ৭ এপ্রিল শবে কদর এবং পরবর্তীতে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ব্যাপক আয়োজন ও প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এ জুমাতুল বিদা’র নামাজে উপজেলা ও জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশগ্রহণ করে থাকেন। যার ফলে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয় হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কর্তৃপক্ষকে।
জুমার নামাজকে গরিবের হজ বলে আখ্যায়িত করা হয়।

আর পবিত্র রমজানের মাসের শেষ শুক্রবারে অনুষ্ঠিত জুমার নামাজকে জুমাতুল বিদা বলা হয়। এ নামাজে ধর্ম-প্রাণ মুসল্লিদের স্বাচ্ছন্দে অংশগ্রহণের জন্য প্রতিবছরের মতো এবারো জেলার সর্ববৃহৎ, প্রাচীন ও ঐতিহাসিক হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে জুমাতুল বিদা’র দিনে সকাল ১০টা থেকেই জেলার বিভিন্ন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, ছাত্রসহ অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ মসজিদে সমবেত হন।

মুসল্লিদের সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নামাজ আদায় করতে মসজিদ কমপ্লেক্সসহ সড়কে প্রয়োজনীয় কাপড়ের দস্তর বিছানোর ব্যবস্থা রাখা হবে। মসজিদ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাগ্রহণে আন্তরিক রযেছেন মসজিদ কমিটি। এছাড়া পবিত্র শবে কদর ও ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ। ঈদুল ফিতরের ৩টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত ঈদের দিন সকাল ৭ টায় ২য় জামাত সকাল ৮টয় ও শেষ জামাত সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত হবে।

মসজিদের মোতোয়াল্লি, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক মেধাবী ছাত্র,ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের ল’ গ্রেজুয়েট এবং বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী প্রিন্স শাকিল আহমদ বলেন, ‘ মুসল্লিদের সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নামাজ আদায় করতে মসজিদ কমপ্লেক্সসহ প্রাঙ্গণে প্রয়োজনীয় কাপড়ের দস্তর বিছানোর ব্যবস্থা রাখা ও সামিয়ানা টানানো,পর্যাপ্ত ওযুরস্থান ব্যবস্থাকরণ, রাতভর এবাদতের জন্যে নিরবিচ্চিন্ন বিদ্র্যুৎ ব্যবস্থা জোরদার, নামাজ ও আযানের সাইন্ডসিস্টেম বজায় রাখা, ওয়াশব্লক সম্পূর্ণ পরিস্কার-পরিছন্নতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ, রাতে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, জুমার দিনে মহিলাদের নামাজ আদায়ে প্রয়োজনীয় পর্দাসহ ওযুর ব্যবস্থা রাখার ইতোমধ্যেই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’

ঐতিহাসিক হাজীগঞ্জ বড় মসজিদে বিশেষ ব্যবস্থ গ্রহণ সম্পর্কে মোতোয়াল্লি আরোও বলেন, ‘মুসলিম উম্মার জন্যে জুমাতুল বিদার এ দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রতিবছরের মতো এবারো ঐতিহাসিক হাজীগঞ্জ বড় মসজিদে জুমাতুল বিদা পালনেও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে দায়িত্ব বন্টন করা হয়েছে। মুসল্লিদের সুবিধার্থে ও ক্রমাগত সংখ্যা বৃদ্ধিতে নতুন নতুন ব্যবস্থা ও প্রাসঙ্গিক সকল সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পবিত্র রমজানের মাসের প্রারম্ভেই ৫ ওয়াক্ত নামাজ তারাবীহ আদায়,পবিত্র কোরআন তেলায়েত, জিকির-আজকার,তসবীপাঠ ও অন্যান্য নফল এবাদত করার লক্ষ্যে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ধর্ম-প্রাণ মুসল্লিদের স্বাচ্ছন্দ্যে অংশগ্রহণের জন্য জেলার সর্ববৃহৎ, প্রাচীন ও ঐতিহাসিক হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ পৌরসভা,উপজেলা প্রশাসন, চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১, হাজীগঞ্জ থানা ও ট্রাফিক পুলিশ, হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতি এবং ব্যবসায়ীসহ এলাকার লোকজন সার্বিক সহযোগিতা চেয়ে চিঠির মাধ্যমে অনুরোধ জানানো হয়েছে। দিন দিন মুসল্লিদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে ও বর্তমান আবহাওয়ার কথা চিন্তা করে মসজিদ কমপ্লেক্সের পাশাপাশি হাজীগঞ্জ টাওয়ার মার্কেট, রজনীগন্ধ্যা মার্কেট, কাওমী মাদরাসা ও মার্কেট, আলীয়া মাদরাসা ও প্লাাজা মার্কেটে নামাজ আদায়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকবে।

তিনি বলেন, ‘আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থা, আইন-শৃংখলা রক্ষায় পুলিশ ও প্রায় ২ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। মসজিদ এরিয়া ছাড়াও হাজীগঞ্জ বাজার রোডে বিভিন্ন সুবিধাজনক স্থানে বিশেষ ওজুর ব্যবস্থা রাখা হবে বলে তিনি জানান। বর্তমানে শতাধিক এতেকাফ অংশগ্রহণকারীর বিভিন্ন প্রকার সেবা প্রদানে মসজিদ কমিটি কাজ করে যাচ্ছে। নামাজ পড়াবেন মসজিদের খতিব ও পেশ ইমাম মুফতি আবদুর রউফ।’

এদিকে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে সকল জুমায় ও জুমাতুল বিদা’র দিনে সকাল ১০টা থেকে জেলার বিভিন্ন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা,ব্যবসায়ী,ডাক্তার,অধ্যাপক, ইঞ্জিনিয়ার,শিক্ষক,পর্দনশীল মহিলা ও ছাত্রসহ অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ মসজিদে সমবেত হতে শুরু করেন। মসজিদ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাগ্রহণে আন্তরিক রয়েছেন বলে জানা গেছে। ওয়াকফ এ্যাস্টেটের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ ও সব সময়েই সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। এছাড়াও পবিত্র শবে কদর ও ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সবদিক খেয়াল রেখে থাকেন কর্তৃপক্ষ। ঈদুল ফিতরের পর পর ৩ টি জামাত অনুষ্ঠানের সব দিকের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মুসলিম উম্মার জন্যে এ দিনটি জুমাতুল বিদা ও জুমার দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রতিবছরের মতো এবারো জুমা ও জুমাতুল বিদা পালনে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে ওয়াকিফ ও মোতোয়াল্লি মরহূম আহমদ আলী পাটওয়ারী (রহ.) ওয়াকফ এ্যাস্টেট কর্তৃক পরিচালিত হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদে যে সব সেবা প্রতিনিয়তই নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়ে থাকে। তা হলো :

১. বছরে লাখ-লাখ মানুষের নামাজের আদায়ের জন্য সেবা প্রদান, ২. ওয়াজ মাহফিলসহ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা প্রদান, ৩. পবিত্র রমজান মাসে সম্মানিত রোজাদারদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম, ৪. রোজাদার মুসল্লিসহ এতেকাফকারীদের জন্য সাধ্যমত সুবিধা প্রদান, ৫. সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য বাজারের দোকানে পানির ক্ষেত্রে আর্সেনিক মুক্ত বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা, ৬. পয়:নিষ্কাশনসহ টয়লেট ব্যবস্থাপনা জোরদারকরণ, ৭. বড় মসজিদ কমপ্লেক্সের বিশাল অবকাঠামেরক্ষণাবেক্ষণ, ৮. এস্টেটের সম্পদ সম্পত্তি হেফাজত, সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, ৯. এস্টেটের স্থায়ী আয় বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ, ১০. সম্মানিত ভাড়াটিয়াদের সেবার মানের ব্যবস্থানা নিশ্চিতকরণ, ১১. মাদ্রাসাসমূহের সংস্কার, উন্নয়ন ব্যবস্থাপনায় সাধ্যমত সহযোগিতা প্রদান। ১২. নিরাপত্তা প্রহরি ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থাপনা। ১৩. বাজারে ক্রেতা হিসেবে কিংবা অন্য কোন প্রয়োজনে আগত মা-বোনদের জুমার নামাজের সুযোগ এর ব্যবস্থা, ১৪. বাজারে অগ্নিনির্বাপনে তাৎক্ষণিক পানি সরবরাহের উন্মুক্ত ব্যবস্থা, ১৫. দুঃস্থ, অসহায় ব্যক্তিদের সাধ্যমত দান-অনুদান প্রদান, ১৬. যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্থানীয় পর্যায়ে সহযোগিতা এবং সামাজিক কার্যক্রমে সাধ্যমত আর্থিক সহযোগিতা প্রদান ১৭. ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় দিবস সমূহ উদযাপনে সহযোগিতা প্রদান, ১৮. মসজিদ ছাড়াও মার্কেট সমূহের সার্বিক নিরাপত্তায় প্রহরী, সিসি ক্যামরা ব্যবস্থাপনা,ও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা। ১৯. সাধ্যমত ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দান অনুদান- এসব কার্যক্রম চালু থাকায় হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ কমপ্লের প্রতি মানুষের আকর্ষণ রয়েছে।

তাই প্রতি বছর জুমাতুল বিদায় হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের আশেপাশে পুরো এলাকা মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে বিশাল জামাতে পরিণত হয়। জুমাতুল বিদায় মুসল্লিদেও সুন্দর পরিবেশে নামাজ আদায়ের এবারও আহমাদিয়া আলীয়া মাদ্রাসা,আহমাদিয়া কাওমী মাদ্রাসা, রজনী গন্ধা মার্কেট, হাজীগঞ্জ টাওয়ার মার্কেট, হাজীগঞ্জ প্লাজা মার্কেটসহ সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীগণের সহযোগিতায় পূর্ববাজার পুরোটাই নামাজ আদায়ের জন্য প্রস্তুত রাখা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানা যায় ।

স্টাফ করেসপন্ডেট, ৩ এপ্রিল ২০২৪