Home / সারাদেশ / দাফনের ১১দিন পরে জীবিত উদ্ধার : স্ত্রীসহ তিন জন কারাগারে
death after

দাফনের ১১দিন পরে জীবিত উদ্ধার : স্ত্রীসহ তিন জন কারাগারে

দাফনের ১১ দিনের মাথায় এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করেছে কক্সবাজার জেলা ডিবি পুলিশের একটি দল। বৃহস্পতিবার ভোররাতে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার বার আউলিয়া এলাকা থেকে আবদুল খালেক (২৮) নামের একজনকে আটক করে পুলিশ।

ইনি সেই খালেক যাকে মৃত ভেবে দাফন করেছিলো স্বজনরা।

জানা গেছে, ১১ দিন আগে গত ২১ এপ্রিল কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও কলেজ গেইট ব্রিজ এলাকার খালপাড় থেকে উদ্ধার হওয়া বস্তাবন্দি একটি মরদেহ পরিচয় শনাক্তের পর দাফন করা হয়। সদরের ঝিলংজা ইউপির খরুলিয়া ঘাটপাড় এলাকার মৃত হাজী আবু ছৈয়দের ছেলে মু. আবদুল খালেক (২৮) হিসেবে স্বজনরা তাকে গ্রহণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে দাফনও করে।

কক্সবাজার ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মানস বড়ুয়া জানান, ১৯ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার হবার দু’দিনের মাথায় খালেকের পরিবারের লোকজন কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে এসে তাকে খালেক হিসেবে শনাক্ত করে লাশ গ্রহণের পর নিয়ে যান। এ ঘটনায় কক্সবাজার সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয় (৬১/২০১৮)। স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে খালেক খুন হয়েছেন সন্দেহ করায় ৫৪ ধারায় খালেকের স্ত্রী জোবাইদা বেগম, স্ত্রীর বড় বোন মোবারকা ও ভগ্নিপতি ফারুককে পুলিশ সন্দেহজনকভাবে আটক করে ২৩ এপ্রিল আদালতে উপস্থাপন করে। আদালত তাদের কারাগারে পাঠান।

তিনি আরও জানান, এরপর মামলাটি তদন্তাধীন ছিল। এর ভেতর গত তিন দিন আগে খালেকের ব্যবহৃত সিম থেকে একটি কল আসে ভাই আবদুল্লাহর কাছে। সেই বিষয়টি স্থানীয় মেম্বারকে জানালে মেম্বার ডিবিতে এসে নম্বরটি দেয়। তা পেয়ে এর ক্লু উদঘাটনে মাঠে নামে ডিবি পুলিশ। প্রযুক্তির মাধ্যমে খালেকের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরটি ট্র্যাক করা হয়। দাফনের আগে থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া সিমটি সচল করা হয়েছে এবং সরোয়ার নামের এক যুবক তা ব্যবহার করছে। সরোয়ার খালেকের আত্মীয়। তার কাছ থেকে খালেকের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পেরে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।

তাকে সামনে এনে বৃহস্পতিবার বিকেলে এসপি কার্যালয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে খালেক জানিয়েছে স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্যের পর ১৪ এপ্রিল তিনি সীতাকুন্ড চলে গিয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করছিলেন। এসময় ৬-৭ দিন তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও বন্ধ করে রাখে।

তাই কক্সবাজারে তাকে নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার কিছুই তিনি জানতে পারেননি। কিন্তু দাফনের পরের দিন তার আত্মীয় সরোয়ারের মাধ্যমে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে দাফন করা হয়েছে জানার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন খালেক। এরপর তিনি নিজ থেকে তার ভাই (মৃত খালেক হিসেবে শনাক্তকারী) আবদুল্লাহকে কল করলে তাকে চিনে না বলে ফোন কেটে দেয়।

এতে কিংকর্তব্যমিমূঢ় খালেক আজকালের মধ্যে এলাকায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এর আগেই পুলিশ তাকে আটক করে কক্সবাজার নিয়ে আসে।

এদিকে মৃত খালেককে জীবিত আটক করে আনার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সবাই খালেককে এক নজর দেখতে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের ডিবি অফিসে ভিড় জমান।

বার্তা কক্ষ

Leave a Reply