Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরকে আদালতে প্রেরণ
জাহাঙ্গীরকে আদালতে প্রেরণ

চাঁদপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরকে আদালতে প্রেরণ

চাঁদপুর সদরের তরপুরচন্ডিতে ৫ম শ্রেণির ছাত্রী (১৩) ধর্ষণ এবং অবৈধ গর্ভপাতের অভিযোগে আটক জাহাঙ্গীর দর্জি (৪০) কে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চাওয়া স্থানীয় শালিসি দালাল চক্রের বিরুদ্ধেও ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

১৩ জুলাই সোমবার দুপুরে চাঁদপুর মডেল থানায় প্রেস বিফিংয়ের মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়।

প্রেস বিফিংয়ে চাঁদপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো.জাহেদ পারভেজ চৌধুরী জানান, তরপুরচন্ডি আনন্দবাজার এলাকায় ৫ শ্রেণির এক স্কুছাত্রীকে (১৩) জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়। পরে ৪ মাসের অঃন্তসত্ত্বা মেয়েটিকে অবৈধ গর্ভপাত করানো হয়। বিষয়টি আমরা জানতে পারার সাথে সাথে ধর্ষক জাহাঙ্গীর দর্জিকে আটক করি। আমরা জানতে পেরেছি মেয়েটির পরিবার ভয়ে থানায় আসতে পারে নি। আমরা তাদের অভয় দেবার পর তারা থানায় এসে আইনী সহায়তা নিয়েছে। আজকে আমরা আটক জাহাঙ্গীরকে নারী ও শিশু ধর্ষণ মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে প্রেরন করেছি।

তিনি আরো জানান, এই কাজের সাথে আর কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা প্রয়োজনে আদালতের কাছে আটক ব্যক্তির রিমান্ড চাইবো।পাশাপাশি ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চাওয়া স্থানীয় দালাল চক্রের বিরুদ্ধেও ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

জানা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচন্ডি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের আনন্দবাজার এলাকার বেপারী বাড়ির ৫ শ্রেণির স্কুলছাত্রীটিকে প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে পাশ্ববর্তি জাহাঙ্গীর দর্জি। হতদরিদ্র পরিবারের অসহায় কিশোরী মেয়েটি স্থানীয় আব্দুল আওয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীতে লেখাপড়া করতো।

এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় একটি শালিসি দালাল চক্র ছলনার আশ্রয় নিয়ে কিশোরীর পরিবিরকে প্রথমে ক্ষতিপূরণ দেবার কথা বলে আইনের আশ্রয় নেয়া থেকে বিরত রাখে। এরপর শহরের একটি হাসপাতালে এনে কিশোরীকে জোরপূর্বক অবৈধ গর্ভপাত করায়। গর্ভপাত করানোর পর থেকেই শালিসি দালাল চক্রটি স্বর পাল্টিয়ে কিশোরীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। যাতে করে তারা আইনের আশ্রয় না নেয়।

কিশোরী মা মনোয়ারা বেগম জানায়, আমার শিশু মেয়েটিকে প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জাহাঙ্গীর দর্জি বহুবার ধর্ষণ করে। পরে তার শারীরিক পরিবর্তন দেখে জিজ্ঞেস করলে সে বিষয়টি স্বীকার করে। পরে লম্পট জাহাঙ্গীরেরর স্ত্রীর এসে আমার মেয়েকে চাঁদপুরে নিয়ে গর্ভপাত করায়।

মনোয়ারা বেগম আরো জানায়, আমি বিষয়টি ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার রুহুল আমিন সুকদার, ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও আব্দুল আওয়াল সপ্রাবির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোস্তফা মাল, বিএনপি নেতা হাসান দেওয়ানসহ স্থানীয়দের জানিয়েছি। আমরা অসহায় বলে বিচার পাচ্ছি না। আমরা যাতে মামলা না করি, তার জন্যে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমি এই লম্পটের বিচার চাই।

ধর্ষণের শিকার কিশোরী জানায়, সে বাড়ির পাশে খেলতে গেলে জহাঙ্গীর দর্জী তাকে টাকার লোভ দেখিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে যায় এবং আমার মুখ চেপে খারাপ কাজ করে। এরপর সে আমাকে ভয় দেখিয়ে আরো কয়েকবার এই কাজ করেছে। আমি যাতে কাউকে না বলি এজন্যে ভয় দেখিয়েছে।

এদিকে ধর্ষনের খবরটি স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ পাবার পর চাঁদপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জাহেদ পারভেজ চৌধুরীর নির্দেশে এবং চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে এসাই রেজাউল করিম, সেলিম, শাখাওয়াত হোসেনসহ পুলিশের চৌকশ টিম শহরের বাবুরহাট এলাকা থেকে ধর্ষক জাহাঙ্গীর দর্জিকে আটক করে।

প্রতিবেদক: আশিক বিন রহিম,১৩ জুলাই ২০২০