Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে সরকারি কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ ও গাড়ি ভাংচুরের চেষ্টা
Bangchor oborodh

চাঁদপুরে সরকারি কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ ও গাড়ি ভাংচুরের চেষ্টা

চাঁদপুর সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা কলেজের সামনে রাস্তা অবরোধ করে গাড়ি ভাংচুরের চেষ্টা করায় চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ আন্দোলনরতদের ধাওয়া করে রাস্তার যানজট স্বাভাবিক করে।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় চাঁদপুর সরকারি কলেজ সামনে এ ঘটনা ঘটে।

আন্দলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, ‘এটা সারা জীবনের বিষয়। বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ হয়েছে। তারা এখনও সময় আছে বলে কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলেছে। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে পাত্তা দিচ্ছেন না। আমাদের এ দাবি মানতে হবে। তা না হলে আমরা আরোও কঠিন আন্দোলনে যাবো।’

এ সময় দায়িত্বরত চাঁদপুর মডেল থানার এস আই বিপ্লব সাহা বলেন, শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করছিল। তাই তাদেরকে বাধা প্রদান করে রাস্তা থেকে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জানুয়ারি চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ ও চচাঁদপুর সরকারি কলেজ শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ ও সড়কে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের অকৃতকার্য ২৪১ শিক্ষার্থী এ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

একপর্যায়ে তারা কলেজের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। এসময় কলেজের ভেতরে আটক পড়েন এইচএসসি ও অনার্সের প্রায় ৯শ’ শিক্ষার্থী। প্রায় ২ ঘণ্টা পর খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ এসে তালা খুলে আটকে থাকা শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে।
অপরদিকে বিকেল সাড়ে ৩টায় একই ইস্যু নিয়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজের সামনে মরহুম আব্দুল করিম পাটওয়ারী সড়কে অগ্নিসংযোগ করে তারা। এতে ওই সড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। আশপাশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে এসময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আফজাল হোসেন ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার্থী প্রিয়াংকা ও ফারজানা জানায়, তারা আইসিটিসহ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক স্বল্পতার কারণে অকৃতকার্য হয়েছেন। কিন্তু তারা অন্যান্য সব বিষয়ে ভালো ফলাফল করেছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ এর আগে তাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন তাদের পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হবে।
অভিভাবক দিলিপ ঘোষ ও শাহানারা বেগম জানান, কলেজের অধ্যক্ষ তাদের কয়েকদিন আগে বলেছেন এক বিষয়ে অকৃতকার্যদের সম্পর্কে বোর্ডে যোগাযোগ করে সিদ্ধান্ত জানাবেন। কিন্তু তিনি আজকে কলেজেই আসেননি। অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে অন্য শিক্ষকরা জানিয়েছেন অকৃতকার্যদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। এ অবস্থায় আমরা কি করবো।
সরকারি মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মো. মাসুদ হোসেন জানান, আমরা বোর্ডের নীতিমালা অনুযায়ী অভিভাবকদের জানিয়েছি অকৃতকার্যদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কোনো সুযোগই নেই। তারা একত্রিত হয়ে কলেজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। শিক্ষা অধিদপ্তরের নীতিমালার বাইরে আমরা কোনো শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিতে পারব না।

চাঁদপুর সরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক নির্বাচনী পরীক্ষায় ৩ বিভাগে অংশগ্রহণ করে ৪১২ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয় ২৯৮ জন। অকৃতকার্য হয় ১১৪ জন।
চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. এএসএম দেলওয়ার হোসেন বলেন, আমরা বোর্ডের নীতিমালার বাইরে কোনো কাজ করতে পারিনা। বোর্ডের নির্দেশনার আলোকে অকৃতকার্যদের বাদ দেয়া হয়েছে। কলেজের বাইরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও অগ্নিসংযোগ বিষয়ে কিছুই বলতে পারবো না। কলেজের অভ্যন্তরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

মাজহারুল ইসলাম অনিক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০:০৩ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০১৮, শনিবার
ডিএইচ