Home / উপজেলা সংবাদ / চাঁদপুর সদর / চাঁদপুরে বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিল জুঁহি
বাবার

চাঁদপুরে বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিল জুঁহি

চাঁদপুরে বাড়িতে বাবার লাশ রেখে চোখে জল নিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে ফেরদৌসী আক্তার জুঁহি। বুধবার সকাল ৭টার দিকে ফেরদৌসী আক্তার জুঁহির বাবা মকবুল হোসেন বেপারী শারীরিক অসুস্থ হয়ে মারা যান। এদিন সকাল ১০টায় পরীক্ষায় অংশ নেয় জুঁহি। এক হাতে চোখ মোছে, অন্য হাতে লিখে পরীক্ষা দেয় সে। পরীক্ষা শেষে বাড়িতে এসে বাবাকে শেষ বিদায় দেয় সে।

মকবুল হোসেন চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ভাটেরগাঁও গ্রামে গ্রামের বেপারী বাড়ির মৃত আবুল হাশেম বেপারীর ছেলে।

ফেরদৌসী আক্তার জুঁহি উপজেলার শাহাতলী জোবাইদা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চলতি বছর ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। বুধবার তার ইংরেজি (আবশ্যিক) দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা ছিল। এদিন সকালে বাবা মারা যাওয়ায় ভেঙে পড়ে জুঁহি। পরে স্বজনদের পরামর্শে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয় সে। এক হাতে চোখের অশ্রু মুছে আর অন্য হাতে কলম চালিয়ে পরীক্ষা দেয় ফেরদৌসী।

স্থানীয়রা জানান, বুধবার সকাল ৭টার দিকে দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর মারা যান ফেরদৌসী আক্তার জুঁহির বাবা মকবুল হোসেন। বাবাকে হারিয়ে ভেঙে পড়ে দুই বোনের মধ্যে ছোট জুঁহি। অন্যদিকে সকাল ১০টায় তার পরীক্ষা। বাবার মৃত্যুতে বারবার মূর্ছা যাওয়া ফেরদৌসীর পক্ষে পরীক্ষা দেওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এ সময় তার পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনরা তাকে বুঝিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠায় এবং সে এম এম নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সোহাগ পাটোয়ারী বলেন, মৃত মকবুল হোসেন বেপারী দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এর আগে তিনি ব্রেনস্ট্রোক করেন। সর্বশেষ দুদিন আগে তিনি জ্বর ও পেটব্যথা নিয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন। পরিবারটির অবস্থাও তেমন একটা ভালো না। সকালে তিনি মৃত্যুবরণ করলে তার মেয়েকে পরিবারের সবাই বুঝিয়ে পরীক্ষা দিতে যেতে বলে। সবার কথায় সে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সোহেল রুশদী বলেন, ফেরদৌসী মেধাবী শিক্ষার্থী। তার বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক তাদের বাড়িতে আমাদের বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক গিয়েছেন। আমরা ফেরদৌসীর পাশে আছি এবং সে যেন কোনোভাবেই মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ে সেই চেষ্টা করছি। সামনে যাতে সবগুলো পরীক্ষায় সে অংশগ্রহণ করে সেজন্য আমরা তাকে সহযোগিতা করব।

স্টাফ করেসপন্ডেট, ৪ মে ২০২৩