Home / জাতীয় / রাজনীতি / ‘খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন হতে দেয়া হবে না’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

‘খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন হতে দেয়া হবে না’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। তাকে (খালেদা জিয়া) কারাগারে রেখে যারা নির্বাচনের কথা ভাবছেন তারা অলিক স্বর্গে বাস করছেন।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, দেশে বর্তমানে কোনো গণতন্ত্র নেই, মানুষের ন্যূনতম অধিকার নেই। গণতন্ত্র ও অধিকার ফিরিয়ে আনতে দুর্বার আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলন করেই গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। একই সঙ্গে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে।

তিনি বলেন, দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে হটিয়ে জনগণের সরকার আনতে হবে। দেশনেত্রীকে (খালেদা জিয়া) অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে। মুক্তি দেয়া না হলে দেশের কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গতকাল (৮ মার্চ, বৃহস্পতিবার) আমরা আমাদের নেত্রীর মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলাম। কিন্তু এ অবৈধ সরকার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা উপেক্ষা করে কর্মসূচির মধ্যে অতর্কিতভাবে প্রবেশ করে এক ছাত্র নেতাকে বিভৎস করে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। সেই ছেলে নিজেকে বাঁচানোর জন্য আমাকে জড়িয়ে ধরেছিল। কিন্তু আমার দুঃখ এই যে, আমি তাকে রক্ষা করতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘এই দানব সরকার আজকে বাংলাদেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। শুধুমাত্র ক্ষমতায় ঠিকে থাকবার জন্য। যেভাবেই হোক, ভয়াবহ দুঃশাসন চালিয়েও তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়। এখানে গণমানুষের কোনো অধিকার নেই। জীবনের নিশ্চয়তা নেই। এ সঙ্কট শুধু বিএনপির নয়, এ সঙ্কট সমস্ত জাতির। বাংলাদেশের অস্তিত্বের সঙ্কট।’

বিএনপি এ নেতা বলেন, যে মামলার রায়ে দেশনেত্রীকে কারাগারে রাখা হয়েছে সে মামলাটি সম্পূর্ণ জাল নথির ওপর ভিত্তি করে দায়ের করা। এ ধরনের মামলায় সাজা হওয়ার পরই জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু সে অধিকারে হস্তক্ষেপ করে মামলায় বিচারকার্যের আইন-কানুনকে উপেক্ষা করে তাকে (খালেদা জিয়া) জামিন দেয়া হয়নি। এর একটিই উদ্দেশ্য, সেটি হচ্ছে বিএনপিকে দূরে রাখার ২০ দলীয় জোটকে দূরে রাখা। যাতে করে তারা (আওয়ামী লীগ) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবারও ক্ষমতায় যেতে পারে।

তিনি বলেন, বর্তমানে নির্বাচন কমিশন সরকার যা চাইছে সেটাই বাস্তাবয়ন করছে। এ কমিশন বসানোই হয়েছে আওয়ামী লীগকে পুনরায় ক্ষমতায় আনার জন্য। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এটি একটি নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। আবারও সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন দেয়া হবে। কিন্তু এখন তিনি সেটা ভুলে গেছেন। এখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আবার বলা হচ্ছে সংবিধানের আলোকেই নির্বাচন হবে।

ফখরুল প্রশ্ন রেখে বলেন, কোন সংবিধানের আলোকে নির্বাচন? যে সংবিধান বারবার সংশোধন করে পরিবর্তন করা হয়েছে, সে সংবিধানের আলোকে? তাদের একটাই উদ্দেশ্য, চিরকাল ক্ষমতায় থাকতে হবে। এক সময় তারা চিরকাল ক্ষমতায় থাকতে বলে বাকশাল গঠন করেছিল। আজকেও একই থিউরিতে এসব পথ বেছে নিয়েছে।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে তিনি বলন, আপনারা সারকারি টাকায় ৭ই মার্চ উদযাপন করলেন। খুব ভালো কথা। কিন্তু আমাদের কেন সভা করতে দিচ্ছেন না? আপনারা বলছেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ছাড়া করতে দেবেন না। অথচ আমাদের প্রতিটি সমাবেশই শন্তিপূর্ণ। এসব করে বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন না।

ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীসহ সমস্ত রাজনীতিকদের মুক্তি দিতে হবে। জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে।

জাতীয় পার্টি (একাংশ) আয়োজনে এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. টি আই এম ফজলে রাব্বি চৌধুরী। সভায় ২০ দলীয় জোটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।