রাজনীতি

কাউন্সিলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মহাসচিব পদ ঘিরে যে চমক রয়েছে

বিএনপির কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিন বছরের জন্য ফের নির্বাচিত হয়ে গেছেন। তবে কাউন্সিলে এখন চমক বাকি রয়েছে। আর তা দলের মহাসচিব পদককে ঘিরে।

এই নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যেও কৌতূহলের শেষ নেই। তবে সকল কিছুর অবসান ঘটিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরই বিএনপির পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব হতে যাচ্ছেন বলে দলের একাধিক জানিয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে বিএনপির মহাসচিব পদ উত্থাপন করা হবে। কাউন্সিলরদের মতামত নিয়েই মহাসচিব পদে মির্জা ফখরুল ইসলামকে পাস করানো হবে। যেহেতু দলীয় প্রধানের মৌন সমর্থন থাকবে মির্জা ফখরুলের দিকে, তাই কাউন্সিলরা এর বাইরে যাবেন না। এছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যের নামও নির্ধারণ হতে পারে।

পর্যায়ক্রমে দলের নির্বাহী কমিটি ও সম্পাদকদের নাম প্রকাশ করা হবে।

এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু মঙ্গলবার বলেন, ‘১৯ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সম্ভবত মির্জা ফখরুলই বিএনপির মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। ইতোমধ্যে তিনি সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। চেয়ারপারসন যখন সিদ্ধান্ত নিবেন তখনই হবে। এখন ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে।’

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান বলেন, ‘দলের মহাসচিব গণতান্ত্রিকভাবে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ীই করা হবে। কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত করা হবে। চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়ে গেলে ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) কাউন্সিলররা ক্ষমতা দিবেন তিনি মহাসচিব ও নির্বাহী কমিটি গঠন করতে পারবেন।’

মহাসচিব পদে কে আসছেন এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যিনি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) দায়িত্ব পালন করছেন উনার বাইরে তো আর কাউকে দেখি না। তিনি এখনো এককভাবেই আছেন। এখন অপেক্ষা করতে হবে ১৯ মার্চ পর্যন্ত।’

এ বিষয়ে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম জানান, মির্জা ফখরুলেই বিএনপি মহাসচিব হতে যাচ্ছেন। বিএনপির বর্ষীয়ান মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর সুদূরপ্রসারী ও দীর্ঘকালীন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়৷ ২০১০ সালের ১৬ মার্চ খোন্দকার দেলোয়ার মারা যান। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব নেওয়ার পর সাতবার জেল খেটেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৮৪ মামলা। ৩৫টি মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিটও গ্রহণ করা হয়েছে। দফায় দফায় কারাগারে যাওয়ার পর বেশ কয়েকটি জটিল রোগেও আক্রান্ত বিএনপির এই নেতা। এরপরও ‘ভারপ্রাপ্ত’ মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

দলের সহ-তথ্য গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবীব বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দলে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি প্রায় ৮৮টি মামলার আসামি, জেল খেটেছেন। তার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই। ম্যাডামের কথার অবাধ্য হবেন না, সব কিছু মিলিয়ে উনার প্রতি কর্মীদের মধ্যে এক সহানুভূতি আছে। এছাড়া সুশীল সমাজও উনাকে পছন্দ করেন।’ ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দীর্ঘ নয় বছর পর ১৯ মার্চ বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কাউন্সিল করতে সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে দলটি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ জানান, বিএনপির ৬ষ্ঠ কাউন্সিল সফলের জন্য ৯৮ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।

সূত্র : দ্য রিপোর্ট

চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক ||আপডেট: ০১:২০ অপরাহ্ন, ১৬ মার্চ ২০১৬, বুধবার

এমআরআর

Share