Home / জাতীয় / চূড়ান্ত দরকষাকষিতে ঐক্যফ্রন্টকে যেসব আসনে ছাড় দেবে বিএনপি

চূড়ান্ত দরকষাকষিতে ঐক্যফ্রন্টকে যেসব আসনে ছাড় দেবে বিএনপি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন বণ্টন নিয়ে জটিলতা কাটেনি দুই বৃহৎ জোটে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও রাজপথের বিরোধী দল বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট এখনও নির্ধারণ করতে পারেনি কোন দল কতটি আসনে নির্বাচন করবে।

আসন ভাগাভাগি নিয়ে সবচেয়ে জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি বিএনপি। দলটির নির্বাচনী সঙ্গী এবার দুটি বৃহৎ রাজনৈতিক মোর্চা।

দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী ২০-দলীয় জোটে (সম্প্রসারিত ২৩ দল) আছে ২৩ দল। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আছে বিএনপি ছাড়া চারটি দল। সব মিলিয়ে দুটি জোটে ২৭ দল এবার নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গী।

এ ছাড়া জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যানারে বেশ কিছু নেতা এবার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চায়।

সারা দেশে ২৯৫ আসনে বিএনপির ৬৯৬ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে ২৫৭টিতেই ২-৫ জন করে প্রার্থী আছেন। একক প্রার্থী রয়েছে ৩৮ আসনে।

বিএনপি ছাড়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলো ২৪০ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। এর মধ্যে সবার্ধিক ১০০ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে গণফোরাম।

জেএসডি জমা দিয়েছে ৬০ আসনে। নাগরিক ঐক্য ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ জমা দিয়েছে ৪০টি করে আসনে। ২৪০ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও বিএনপির কাছ থেকে সম্মানজনক আসন পেতে দরকষাকষি করছে ঐক্যফ্রন্টের শরিক চারটি দল।

জানা গেছে, বিএনপির পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে সর্বোচ্চ ২০ আসনে ছাড় দেয়া হতে পারে। এ নিয়ে ফ্রন্টের শরিকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেও কোনো সমঝোতা হয়নি।

শেষ পর্যন্ত যার যার মতো করে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হয়। ফ্রন্টের শরিক নাগরিক ঐক্য নয়টি আসনে ধানের শীষ নিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছে। তবে চূড়ান্তভাবে এ দলটিকে সর্বোচ্চ দুটি আসনে ছাড় দেয়া হতে পারে।

ওই দুটি আসন হচ্ছে-মাহমুদুর রহমান মান্নাকে বগুড়া-২ আসন আর এসএম আকরামকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সারা দেশে দলীয়ভাবে ৪০ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত কাদের সিদ্দিকীকে সর্বোচ্চ দুটি আসনে ছাড় দেয়া হতে পারে।

এর মধ্যে কাদের সিদ্দিকী রাজী থাকলে ঢাকার একটি আসন দেয়া হতে পারে। নতুবা টাঙ্গাইল-৪ আসনে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। তার দলের যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকীকে গাজীপুর-৩ আসনটি দেয়া হতে পারে।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী যুগান্তরকে বলেন, দলীয়ভাবে আমরা ৪০ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। তবে ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক বিএনপির সঙ্গে যেসব আসনে সমঝোতা হবে, সেগুলো রেখে বাকি প্রত্যাহার করা হবে।

ফ্রন্টের আরেক শরিক জেএসডি দলীয়ভাবে ৬০ মনোনয়পত্র জমা দিয়েছে। তবে তাদের সর্বোচ্চ দুটি বা তিনটি আসনে ধানের শীষ দেয়া হতে পারে।

জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবকে লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে আর তানিয়া রবকে ঢাকার একটি আসন দেয়া হতে পারে। দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতনকে কুমিল্লার একটি আসন দিতে পারে বিএনপি।

এ প্রসঙ্গে দলটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন বলেন, ফ্রন্টের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে বাকি আসনের মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হবে।

গণফোরামের পক্ষ থেকে সারা দেশে শতাধিক আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে গণফোরাম ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার প্রার্থীদের সর্বোচ্চ ১৫ আসনে ছাড় দেয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে।

গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল নির্বাচন করছেন না। তার দল থেকে যারা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারেন, তারা হলেন- মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, রেজা কিবরিয়া, আবু সাইয়িদ প্রমুখ।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল দুদিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে ইঙ্গিত দিয়েছেন, ২০-দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টকে সর্বোচ্চ ৬০ আসন দেয়া হবে।

বিএনপি নেতারা বলছেন, সে ক্ষেত্রে ২০ দলকে ৪০ আসন আর ঐক্যফ্রন্টের জন্য বরাদ্দ থাকছে ২০ আসন।

বার্তা কক্ষ
৩০ নভেম্বর, ২০১৮