Home / ইসলাম / ই’তিকাফ-লাইলাতুল ক্বদরে আত্মশুদ্ধি প্রাপ্তির সিলেবাস
ই’তিকাফ-লাইলাতুল ক্বদরে আত্মশুদ্ধি প্রাপ্তির সিলেবাস

ই’তিকাফ-লাইলাতুল ক্বদরে আত্মশুদ্ধি প্রাপ্তির সিলেবাস

ই’তিকাফের শাব্দিক অর্থ অবস্থান করা। শরীয়তের পরিভাষায় পুরুষের জন্যে নিয়্যতসহ সংসার জীবনের নানা ব্যস্ততা হতে মুক্ত হয়ে নিরবিচ্ছন্নভাবে আল্লাহর ঘর মসজিদের নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করাকে ই’তিকাফ বলা হয়। আর মহিলাদের জন্যে ই’তিকাফ হল, নিয়্যতসহ ঘরের ভিতর নামাযের জন্যে নির্দিষ্ট কোনো স্থানে অবস্থান করা।

সহীহ হাদীসের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায় – মহানবী (সাঃ) রমযানের শেষ ১০ দিন ই’তিকাফ করতেন। মাহে রামযানের সবচেয়ে বরকময় রাত হলো লাইলাতুল ক্বদর।

এ রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। রমযানের শেষ ১০ দিন ই’তিকাফ করলে ‘লাইলাতুল কদরের’ ফজীলত লাভের আশা করা যায়। বস্তুতঃ মহানবী (সাঃ) লাইলাতুল ক্বদরের ব্যাপারে খুবই উদগ্রীব ছিলেন। তিনি সারা রমযানেই ইবাদতে মশগুল থাকতেন। তবে বিশেষ করে রমযানের শেষ ১০ দিন তা বহু গুণে বাড়িয়ে দিতেন। ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূল (সাঃ) রমযান মাসের শেষ ১০
দিন ই’তিকাফ করতেন (মুসলিম)। রাসূল (সাঃ) যে বছর ইন্তেকাল করেন সে বছর তিনি ২০ দিন ই’তিকাফ করেছিলেন।

হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (সাঃ) রমযান মাসের শেষ ১০ দিন ই’তিকাফ করতেন এবং এটা অব্যাহত ছিল যতক্ষণ না আল্লাহ ত’আলা তাঁর জান কবজ করলেন ।(তিরমিযী)

ই’তিকাফের অত্যধিক গুরুত্বের কারণেই রাসূল (সাঃ) রাষ্ট্র পরিচালনার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজসহ যাবতীয় কাজ থেকে মুক্ত হয়ে প্রত্যেক রমযান মাসের শেষ ১০ দিন মসজিদে ই’তিকাফে মশগুল থাকতেন।। রাসূল (সাঃ) সাহাবীদেরও ই’তিকাফ করার জন্য বিশেষ তাকীদ দিতেন। মুসলমানদের উচিত ই’তিকাফের মাধ্যমে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হওয়া।

ই’তিকাফকারী ব্যাক্তি আল্লাহর নৈকট্য লাভের নিমিত্তে নিজেকে স্পূর্ণরূপে তাঁর ইবাদতে নিয়োজিত রাখবে এবং দুনিয়াদারী কাজ-কর্ম থেকে দূরে থাকবে। ই’তিকাফের আদব হলে নেকের কথা ছাড়া অপ্রয়োজনীয় কথা না বলা, বেশি বেি শ নফল নামায আদায় করা, কুরআন মজীদ তিলাওয়াত ও মুখস্ত করা, হাদীস শরীফ পাঠ করা, ইল্ম শিক্ষা করা, যিকর করা, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) ও অন্যান্য নবীর সীরাত ও ইসলামী গ্রন্থাদি পাঠ করা ইত্যাদি।

ই’তিকাফে অবস্থানকারী মুমিন বান্দাহদের জন্য একটি গবেষণাধর্মী সময়সূচি/সিলেবাস
ঘুম থেকে উঠা (রাতে)-১:৩০
ইস্তেঞ্জ,অযু-১:৩০-১:৪৫
তাহাজ্জুদের নামায-১:৪৫-৩:১৫
সেহরী-৩:১৬-৩:৪০
ফজরের নামায-৩:৪১-৪:১৫
অর্থসহ কুরআন তেলওয়াত, মুখস্ত-৪:১৬-৬:০০
সালাতুদ্দোহা (চাশতের নামায)-৬:০০-৬:৩০
ঘুম-৬:৩০-৯:০০
অযু, গোসল ৯:০০-৯:৩০
নফল নামায, সীরাত, সাহাবাদের জীবনে ও ইসলামী বই থেকে পাঠ ৯:৩০-১:০০
যোহরের নামায-১:০০-১:৪৫
পবিত্র কুরআনের আলোকে মানুষের করণীয় ও বর্জনীয় বই থেকে পাঠ-১:৪৫-২:৩০
নফল নামায-২:৩০-৩:৩০
বিশ্রাম-৩:৩০-৪:৩০
আসরের নামায-৪:৩০-৫:১৫
হাদীসের অনুবাদ পাঠ, তাসবীহ পাঠ-৫:১৬-৬:৪০
ইফতার ও মাগরিবের নামায-৬:৪১-৭:৩০
ইফতার পরবর্তী বিশ্রাম, মসজিদের ভেতরে হাঁটাহাঁটি, তাসবীহ-৭:৩০-৮:৩০
এশা ও তারাবীর নামায-৮:৩০-১০:৩০
রাতের খাবার ও মসজিদের ভেতরে হাঁটাহাঁটি, তাসবীহ-১০:৩০-১১:০০
ঘুম-১১:০১-১:৩০

লেখক- মাও. শামছুদ্দিন

Leave a Reply