Home / সারাদেশ / ইউপি চেয়ারম্যানের বয়স ৪৫ কনের ১৫: রক্ষক যখন ভক্ষকের ভূমিকায়
রক্ষক এখন ভক্ষকের, রক্ষক এখন ভক্ষকের

ইউপি চেয়ারম্যানের বয়স ৪৫ কনের ১৫: রক্ষক যখন ভক্ষকের ভূমিকায়

রক্ষক এখন ভক্ষকের ভূমিকায়। সরকারের বাল্যবিয়ে প্রতিরোধের পবিত্র যে দায়িত্ব ইউপি চেয়ারম্যানের কাঁধে; সেই চেয়ারম্যানই এখন বাল্যবিয়ের পিঁড়িতে।

কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুরে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে (১৫) বিয়ে করে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন ৪৫ বছর বয়সী আবু তালেব সরকার নামে এক ইউপি চেয়ারম্যান। তৃতীয়বারের মতো বিয়ের পিঁড়িতে বসে সমালোচনার মুখে পড়েছেন উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকার।

সরকার বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা করার পরও একজন ইউপি চেয়ারম্যান নিজেই কীভাবে বাল্যবিয়ে করতে পারেন, তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের দোলন গ্রামের প্রতিবন্ধী বাচ্চু মিয়ার মেয়ে বকশীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী বন্নি আক্তারের ওপর কুনজর পড়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকারের। এরপর ওই শিক্ষার্থীকে নানাভাবে ফুঁসলিয়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং হতদরিদ্র মেয়ের পরিবারটিকে আর্থিক সহায়তার প্রলোভন দেখাতে থাকেন।

এরই একপর্যায়ে রোববার রাতে মেয়েটির পরিবারের লোকজন চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার বিয়ে দেন। ব্যক্তিগত জীবনে ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকারের এক স্ত্রী ও কলেজ পড়ুয়া এক কন্যাসন্তান রয়েছে। তবে এর আগেও তিনি আরেকটি বিয়ে করলে সেটি বেশি দিন টেকেনি।

চেয়ারম্যানের তৃতীয় বিয়ের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সদ্য নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান প্রকাশ্যে বাল্যবিয়ে করলেও প্রশাসন কোনো আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ায় জনমনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

বকশীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুজ্জামান বলেন, ওই শিক্ষার্থী আমার স্কুলের মানবিক বিভাগের নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। বিয়ে হওয়ার কথাটি আমি বিভিন্ন লোকমুখে সোমবার শুনতে পেরেছি। বিয়ে হওয়ায় এখন আমাদের আর কিছুই করার নেই।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন বন্ধ করে রাখায় কোনোভাবেই যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।

উলিপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, যেহেতু বাল্যবিয়ে হয়ে গেছে, সেখানে মোবাইল কোর্ট করার সুযোগ নেই। তবে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কুড়িগ্রাম জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বাল্যবিয়ে করা একটা অপরাধ। বিয়ে হয়ে গেলেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ রয়েছে।

বার্তা কক্ষ,২ নভেম্বর ২০২০