ফরিদগঞ্জে ইউপি কার্যালয়ে আটকে রেখে যুবককে মারধর

হাওলাতের টাকা চাইতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি ডেকে আনলেন উপজেলার ১২নং চরদুঃখিয়া ইউনিয়নের লড়াইচর গ্রামের আবদুল লতিফ তপাদারের ছেলে মো.রাসেল হোসেন (৩৪)।

চায়ের দোকান থেকে তুলে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় রাসেলকে ইউপি কার্যালয়ের একটি রুমে আটকে রেখে দলবদ্ধভাবে মেরে রক্তাক্ত জখম করে। ঘটনায় রাসেলের মা মোসা. খালেদা বেগম বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগের আলোকে জানা যায়, প্রবাস ফেরত মো.রাসেল হোসেন ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে মো. সুজন হোসেনকে ৫/৬ মাস আগে ৫০ হাজার টাকা হাওলাত দেয়। এর মধ্যে সে ৩ হাজার টাকা ফেরত দেয়। বাকী টাকা চাইতে গেলে সে রাসেলের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।

গত ২৩ মে রোববার রাত ৯টায় ১২নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসান আব্দুল হাই এর ছেলে মো.মনির হোসেন (২৮) ও নাতী মো.শাকিল হোসেন একটি চায়ের দোকান থেকে তুলে নিয়ে যায় রাসেলকে। সুজন দূরে থেকে মনির, শাকিল, ব্লাক মামুন, হিরনকে দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে আটক রেখে কাঠ ও রড দিয়ে এ্যালোপাথাড়ি ভাবে মেরে রক্তাক্ত করে।

এসময় তারা জিনারিযুক্ত কাঠ দিয়ে আঘাত করে পায়ে জখম করে। রড দিয়ে আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। পরবতর্ীতে সেখানে তারাই ৫টি সিলাই দিয়ে বাড়ী পাঠিয়ে দেয়। তারা মো.রাসেল হোসেনের কাছে থাকা নগদ ৩৮৭৪ টাকা এবং জোর করে তার বিকাশের পাসোওয়ার্ড আদায় করে সেখান থাকা ২,৯০০ টাকা নিয়ে যায় এবং একটি স্মাট ফোনও নিয়ে যায়।

এ সময় তারা ১০০ টাকার স্ট্যাম্পে এই মর্মে রাসেলের স্বাক্ষর নেয় যে, বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে যাতে ঝামেলা না করে। যদি করে তাহলে পাঁচ লাখ টাকা আদায় করবে। বিবাদীরা গভীর রাতে রাসেলকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়।

পরদিন ২৪ মে সকালে রাসেলকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে ভর্তি করানো হয়। একই দিন বিকালে খালেদা বেগম বাদী হয়ে মো. মানির হোসেন, মো.ব্লাক মামুন মিজি, মো. শাকিল হোসনে, মো.হিরন হোসেন, মো.সুজন হোসেনকে বাদী করে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

ইউনিয়ন পরিষদে একজন যুবককে আটক করে নির্যাতন করা মহা অপরাধ। এর দায় চেয়ারম্যান কোন অবস্থায়ই এড়াতে পারে না। তার উপর তার ছেলে ও নাতি এসব নেক্কারজনক কাজ করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান হাসান আব্দুল হাই বলেন, ২৩ মে রোববার আমরা এক ডাকাতকে আটক করি। এসময় ডাকাতের সাথে থাকা রাসেলকে জনগন আটক করে। পালিয়ে যাওয়ার সময় সে মাথায় আঘাত পায়। আমি তাকে পুলিশে দিতে চাইলে সাবেক চেয়ারম্যান মো. নুরুল হুদা তাকে জিম্মায় নিয়ে যায়।’

এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রতিবেদকঃশিমুল হাছান

Share