Home / উপজেলা সংবাদ / কচুয়া / কচুয়ায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড ও চাচা শ্বশুরের যাবজ্জীবন
কচুয়ায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড ও চাচা শ্বশুরের যাবজ্জীবন

কচুয়ায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড ও চাচা শ্বশুরের যাবজ্জীবন

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার সাদীপুরা গ্রামে যৌতুকের দাবিতে শ্বাসরোধে শাহিনুর বেগম (২০) নামে গৃহবধূকে হত্যার দায়ে স্বামী এরশাদ উল্যাহকে মৃত্যুদণ্ড ও চাচা শ্বশুর আবু তাহের মুন্সীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) দুপুরে চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ মো. জুলফিকার আলী খাঁন এ দণ্ডাদেশ দেন। হত্যার শিকার শাহিনুর একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী গ্রামের শহীদুল্লাহ মিয়াজীর মেয়ে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত স্বামী এরশাদ সাদীপুরা গ্রামের মুন্সী বাড়ির রুহুল আমিনের ছেলে এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত চাচা শ্বশুর আবু তাহের একই বাড়ির আব্দুল খালেক মুন্সীর ছেলে। এরশাদ সম্পর্কে আবু তাহেরের ভাতিজা।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি এরশাদ উল্যাহর সঙ্গে শাহিনুরের বিয়ে হয়। ওই সময় ছেলেকে কনের বাবা আড়াই লাখ টাকা যৌতুক দেন। কিন্তু আরও যৌতুকের দাবিতে এরশাদ উল্যাহ নিজ বাড়িতে পরিবারের লোকজনসহ শাহীনুরকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন।

ঘটনার দিন ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে এরশাদ ও শাহিনুরের মধ্যে যৌতুক নিয়ে ঝগড়া বিবাদ হয়। এসময় এরশাদ উল্যাহ তার চাচা আবু তাহের মুন্সীর সহযোগিতায় ওই গৃহবধূকে মারধর করে। পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ওই গৃহবধুর বাবা শহীদুল্লাহ মিয়াজী জানান, ঘটনার পর চাচা আবু তাহের মেয়ে অসুস্থ্য বলে খবর দেন। কিন্তু তারা এসে শাহিনুরকে এরশাদের বসতঘরের বারান্দায় চাদর দিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় দেখতে পান। এসময় আবু তাহের ও জামাই এরশাদ জানান ‘শাহীনুর আত্মহত্যা করেছে।

কোনো মামলা করার প্রয়োজন নেই’ বলে চাপ প্রয়োগ করেন। এরপরে শহীদুল্লাহর বিষয়টি সন্দেহ হলে কচুয়া থানা পুলিশকে জানায়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় ১ মার্চ শাহিনুরের বাবা কচুয়া থানায় এরশাদ ও আবু তাহেরকে আসামি করে ৩০২/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তাদের গ্রফতার করে আদালতে পাঠিয়ে দেয়।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) আমান উল্যাহ বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কচুয়া থানার তৎকালীন সময়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তফা চৌধুরী একই বছরের ১০ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। প্রায় তিন বছর মামলাটি চলমান অবস্থায় আদালত ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

সাক্ষ্য প্রমাণ ও নথি পর্যালোচনা করে বিচারক আসামিদের উপস্থিতিতে শাহিনুরের স্বামী এরশাদ উল্যাহকে মৃত্যুদণ্ড এবং চাচা শ্বশুর আবু তাহের মুন্সীকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেন। রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) ছিলেন মোক্তার আহম্মেদ এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন সেলিম আকবর।

প্রতিবেদক- মাজহারুল ইসলাম অনিক

Leave a Reply