চাঁদপুর

শাবিতে বৃত্তি দিচ্ছে চাঁদপুরের মনোয়ারা বেগম ট্রাস্ট ফান্ড

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করছে মনোয়ারা বেগম ট্রাস্ট ফান্ড। এই ট্রাস্ট ফান্ড ইতোমধ্যে বিভাগের ভালো ফলাফলধারী ও অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে।

এই শিক্ষাবৃত্তি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অভ্যন্তরীণ প্রথম কোনো শিক্ষাবৃত্তি।
জানা যায়, ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে এক চুক্তির মাধ্যমে এ শিক্ষা ট্রাস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। ট্রাস্ট ফান্ড গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট বৃত্তির চেক হস্তান্তর করেন।

চলতি বছরের জুন মাসে বিভাগের চারজন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি তালিকায় মনোনিত করে ট্রাস্টের শিক্ষাবৃত্তি কার্যক্রম শুরু হয়। বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা হলেন ২০১৭-১৮ এর নিকলেশ চন্দ্র দাশ ও একই বর্ষের রোমা আক্তার, ২০১৬-১৭ এর রুবেল মিয়া ও আইরিন আক্তার লিনজা। মনোয়ারা বেগম শিক্ষা ট্রাস্ট ফান্ডের দাতা পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে সার্বিক দায়িত্বে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও মনোয়ারা বেগমের কনিষ্ঠ কন্যা ড. নিলুফা আক্তার।

মনোয়ারা বেগম শিক্ষা ট্রাস্ট ফান্ডের দাতা পক্ষের প্রতিনিধি ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. নিলুফা আক্তার বলেন, আমার মা বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। এবং শিক্ষকতা পেশায় বাংলা বিভাগের সাথেই ছিলেন। আর আমিও বাংলা বিভাগের শিক্ষক। সুতরাং শিক্ষক হিসেবে নিজের বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রতি ভালোবাসা আর দায়বদ্ধতা তো থাকবেই। সেই ভাবনা থেকেই স্ব-বিভাগে বৃত্তিটা চালু করেছি। মনোয়ারা বেগম ট্রাস্ট ফান্ড এর আর্থিক সহায়তায় যদি একজন শিক্ষার্থী জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে, তবে একটা পরিবার উঠে দাঁড়াবে। এটাই এই ট্রাস্টের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

এই বিষয়ে বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড.আশ্রাফুল করিম বলেন, বাংলা বিভাগের জন্য প্রথম বারের মতো এধরনের বৃত্তি অবশ্যই এটি মহৎ বিষয়। বিষয়টি আরও ভালো লাগার যে আমাদের বিভাগের শিক্ষক নিজ উদ্যোগে আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য এরকম একটি মেধাবৃত্তির সুযোগ তৈরি করেছেন। আশা রাখবো এই মেধাবৃত্তি বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য পড়াশোনা এবং ভালো রিজাল্টের আগ্রহ তৈরি করবে।

বৃত্তিদাতা মনোয়ারা বেগম চাঁদপুর জেলার লেডি প্রতিমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষিকা। ১৯৩৫ সালের ১ মার্চ চাঁদপুর জেলার আলিমপাড়াস্থ “সিরাজ মঞ্জিল” এ তাঁর জন্ম। তাঁর পিতা মরহুম সিরাজুল ইসলাম এবং স্বামী মরহুম আবদুল হাকিম উভয়ই ছিলেন ওই অঞ্চলের খ্যাতনামা আইনজীবী।

তিনি ১৯৫১ সালে লেডি প্রতিমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ১৯৫৬ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর ১৯৬২ সালে ইডেন কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করার পর শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৯৫ সালে শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণ করলেও শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা রাখতে তিনি এই উদ্যোগ নিয়েছেন।

Share