হাজীগঞ্জ

শাহরাস্তিতে দু:খী মনোহরের দায়িত্ব নিলেন মেজর রফিক

এক জনম দু:খী মনোহর আলী। চাঁদপুরের শাহরাস্তির সূচিপাড়া উত্তর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে তার বসবাস। জন্মগতভাবেই অন্ধ মনোহর আলী ভিক্ষা করেই তার জীবন চলছে। ৩ মেয়েকে নিয়ে থাকেন একটি ঝুঁপড়ি ঘরে। আপনজন বলতে স্ত্রী আশরাফী বেগম, ৩ মেয়ে জোসনা, সালমা ও নাজমা।

গত কয়েক দিন ধরেই মনোহর আলীর দু:খ-দুর্দশা নিয়ে লেখা-লেখি হচ্ছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে। এক পর্যায়ে সংবাদকর্মীদের বদৌলতে ঝুঁপড়ি ঘরে অন্ধ মনোহর আলীর বসবাস বিষয়টি ভাইরাল হয়ে পড়লে চাঁদপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মেজর অব.রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম’র নজরে আসে। তিনি স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অন্ধ মনোহর আলীর বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে বলেন।

ইউএনও শিরিন আকতার মনোহর আলীর খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারে সত্যই একজন অসহায় ও দু:স্থ। তার পরই সংসদ সদস্য রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। সংসদ সদস্যের নির্দেশে ইউএনও শিরিন আকতার তাকে কিনে দেয় চাল,ডালসহ সকল নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য। আরো দিলেন নগদ ৫ হাজার টাকা।

রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম সরাসরি মনোহর আলী ও তার পরিবারকে দেখতে যান শোরসাক গ্রামে। সেখানে অন্ধ মনোহর আলী এমপিকে তার ঘরে আসলে তাঁকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

এ সময় রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম এমপিসহ তার সাথে আগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরিন আকতার,পৌর মেয়র আলহাজ¦ আবদুল লতিফ মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান মিন্টু, ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মজুমদারসহ নেতা-কর্মীদের কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণ হয়।

অন্ধ মনোহর আলী তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন,‘অনেক বছর ধরে খুবই কষ্টে আছি। কেউ কখনো খোঁজ খবর নেয় নি। আপনি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমারা আল্লাহর কাছে দোয়া করি আল্লাহ আপনার সহায় হউক।’ তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যেও হাত তুলে দোয়া করেন।

মেজর অব.রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম অন্ধ মনোহর আলীকে আশ্বস্থ কওে বলেন,‘ আপনার জন্যে ৩ শতাংশ জায়গা কিনে একটি বাড়ি করে দেয়া হবে। আপনার ২ মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। যেই পর্যন্ত আপনার বাড়ি না হবে সে পর্যন্ত আপনি বাসা ভাড়া থাকবেন। সেই টাকা আমরা আপনাকে দেবো।’

এ সময় সংসদ সদস্য মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম অন্ধ মনোহর আলীর হাতে নগদ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন এবং তার ঝুঁপড়ি ঘরে ডুকে কিছুক্ষণ অবস্থান করেন।

মেজর অব.রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন,‘আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। জনগণের খোঁজ খবর নেয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’

তিনি বলেন,‘দেশের আনাছে কানাছে অনেক মনোহর আলী পড়ে আছে। বঙ্গবন্ধু’র কন্যা শেখ হাসিনা মানুষের দু:খ কষ্ট লাঘবে কাজ করছে। সেখানে একজন মনোহর আলী স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে এভাবে দু:খ কষ্টে থাকবে তা মেনে না যায়না।আমরা তাকে জায়গা কিনে প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরূপ একটি ঘর প্রদান করবো।’

তিনি সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্য করে আরো বলেন,‘আপনার গ্রাম-গঞ্জের এসব চিত্র তুলে ধরবেন। অসহায়দের পাশে থাকবেন। আপনাদের লেখনির মাধ্যমে গ্রাম-গঞ্জের অবহেলিত চিত্র উঠে আসবে। ঔ দিন দুপরে হাজীগঞ্জে শেখ হাসিনার উপহার আশ্রহয়ন প্রকল্প-২‘যার জমি আছে,ঘর নেই’প্রকল্পের আওতায় ২৪০ জন গৃহহীন পরিবারের মাঝে তিনি ঘরের চাবি তুলে দেন।

শরীফুল ইসলাম
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

Share