কচুয়া

কচুয়ায় অরুন বৈদ্য গংদের বিরুদ্ধে যেনো অভিযোগের শেষ নেই

চাঁদপুর কচুয়ার জলা-তেতৈয়া গ্রামে অরুন বৈদ্য গংদের শোষণ অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে অবশেষে রাস্তায় নেমে এসে ঝাড়ু মিছিলসহ তার কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে গ্রামবাসী।

সবশেষে বৃহস্পতিবার(৪ এপ্রিল) ঐ গ্রামের নিবাস চন্দ্র বৈদ্য ও শোভা রানী বৈদ্যের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার(৫ এপ্রিল) বিকেলে অরুন বৈদ্য গংদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকার শত শত নারী পুরুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রায় ঘণ্টা ব্যাপি সড়ক অবরোধ করে মানব বন্ধন করা হয়।

আজ বেলা ৪ টায় জলা-তেতৈয়া পশ্চিমপাড়া হতে মিছিলটি শুর হয়। মিছিলটি পূর্বপাড়া হয়ে জলাতেতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তার কুশপুত্তলিকা দাহ শেষে প্রতিবাদ সভায় মিলিত হয়।

প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন- ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব মোল্লা, ইউপি সদস্য মোস্তফা কামাল, গাজী আব্দুল হালিম, সাবেক ইউপি সদস্য কানু লাল সরকার ও স্থানীয় অধিবাসী অর্পন সরকার, জয় চন্দ্র সরকার, দীলিপ চক্রবর্তী ও লাকী রানী।

বক্তব্য বলেন-‘অরুন বৈদ্য গংরা এলাকায় চড়া সুদের ব্যবসা চালিয়ে এলাকার শত শত পরিবারকে নিঃস্ব করে ফেলেছে। অপন চন্দ্র সরকার অরুন বৈদ্য গংদের অত্যাচারে আমার বৃদ্ধা মা দু’বছর যাবৎ ঘরে অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন। এমনিভাবে অরুন গংদের বিরুদ্ধে এলাকার একাধিক লোকজন নানান অভিযোগ তুলেন। এ যেন অভিযোগের শেষ নেই অরুন বৈদ্য গংদের বিরুদ্ধে।’

প্রতিবাদকারীরা বলেন, ‘প্রায় ৮ বছর পূর্বে একই গ্রামের লিটন ও মানিক ভৌমিক নিবাসের কাছ থেকে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় নিবাস চন্দ্র বৈদ্যের কাছ থেকে। ধার-কর্জ করে এই টাকা জোগাড় করে নিবাস। প্রতারক লিটন ও মানিক রাজিবকে দিবেসে না পাঠিয়ে টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। এদিকে নিবাস যাদের কাছ থেকে টাকা ধার-কর্জ করেছে তারা পাওনা টাকা পাওয়ার জন্য পর পর চাপ সৃষ্টি করলে সে দিশেহারা হয়ে নিজের বসত ভিটা বিক্রি করে দেনা পরিশোধ করে।’

পরে মানবিক কারনে গ্রাম্য শালিশীদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক হাতিয়ে নেয়া টাকা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত পরিবার পরিজন নিয়ে মানিক ও লিটনের বাড়িতে আশ্রয় নেয় নিবাস চন্দ্র বৈদ্য। কিছুদিন পর প্রতারক লিটন ও মানিক এলাকার ভূমিদস্যু অরুণ বৈদ্যের সাথে আতাত করে তাদের বসত ভিটা বিক্রি করে দেয়। সেও রাজিবের টাকা ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত নিবাস তার পরিবার পরিজন নিয়ে তার বাড়িতে অবস্থান নেয়ার শালিসীদের সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষণ করে।

বছর যেতে না যেতে অরুণ বৈদ্য নিবাসকে বাড়ি ছেড়ে দিতে বললে নিবাস তার পাওনা টাকা বুঝিয়ে পাওয়া সাপেক্ষে তার বাড়ি ছাড়ার কথা বলে। তখনই বিবাদ শুরু হয় নিবাস ও অরুণ বৈদ্যের মধ্যে। অরুণ বৈদ্য তাকে টাকা না দিয়েই বিভিন্ন ভাবে চলছাতুরি বাড়ি থেকে তারানোর চেষ্টা নেয়। এ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার শালিস বৈঠক বসে।

এনিয়ে গত বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে অরুণ বৈদ্য তার দলবল নিয়ে নিবাস ও তার স্ত্রীর উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদেরকে বেদম মারধর করে জোড়পূর্বক ঘর থেকে বের করে দেয়।

এসময় তাদের ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে অরুণ বৈদ্যের হাত তাদেরকে রক্ষা করে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

এ ব্যাপারে শোভা রানী বাদী হয়ে অরুণ বৈদ্য গংদের বিরুদ্ধে কচুয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।

এদিকে কেবল নিবাসের পরিবারের উপরই নয় এলাকার আরো বেশ কিছু হিন্দু-মুসলিম পরিবারের লোকজনরা অরুন বৈদ্য গংদের দ্বারা দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্নভাবে শোসন, নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়ে আসছে এতদিন যাবৎ প্রভাবশালী অরুন গংদের বিরুদ্ধে ভয়ে মুখ খুলেনি।

কিন্তু আজ অরুন গংদের বিচারের দাবীতে মানব বন্ধন ও ঝাড়ু মিছিলের ডাক দেওয়া হলে এলাকার ভোক্তভূগীরা স্বতস্পূর্তভাবে অংশ গ্রহণ করে অরুন বৈদ্য গংদের জোড়ালো শাস্তির দাবি জানান।

এ ব্যাপারে অরুন বৈদ্য ও তার সহযোগীদের বক্তব্য নেয়ার জন্য বাড়িতে গিয়ে না পেয়ে পরে বার বার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য জানতে মোবাইল ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি।

কচুয়া থানা ওসি মো.ওয়ালী উল্যাহ অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্টাফ করেসপন্ডেট
৫ এপ্রিল,২০১৯

Share