চাঁদপুর

চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে চোরের উপদ্রব : কাজে আসছে না সিসি ক্যামেরা

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে রোগ সারাতে এসে চোরের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন রোগীরা। রেহাই মিলছে না তাদের সেবায় নিয়োজিত আত্মীয়-স্বজন এমনকি রোগী দেখতে হাসপাতালে আসা দর্শনার্থীদেরও।

যখন তখন চুরি হচ্ছে অর্থকড়ি, মোবাইল ফোন, অলঙ্কার। খোয়া যাচ্ছে রোগীর চিকিৎসা সামগ্রী, ঔষধ আর পথ্যও। বিশেষ করে হাসপাতালের টিকেট ও ঔষধ কাউন্টারের সামনে প্রতিদিনই ঘটছে কোন না কোন চুরির ঘটনা।

মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে হাসপাতালের সামনে এক নারীর কাছ থেকেও তার ভেনটি ভ্যাগ ছিনতাই করার সময় মোবারক হোসেন নামে এক ছিনতাই কারীকে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। পরে তাকে উত্তম মাধম দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রতিদিনই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং টিকেট কাউন্টারের সামনে রোগীদের কাছে নগদ অর্থ, মোবাইল ও স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র। চোরের হাত থেকে বাঁচতে হাসপাতালের বিভিন্নস্থানে স্থাপন করা সিসি ক্যামেরাও কোন কাজে আসছে না।

তারা আরো জানায় সাধারণ ওয়ার্ড এমনকি কেবিনের ভেতরে প্রায় প্রতিদিনই চুরি-চামারি হচ্ছে। হাসপাতালের ২য় তলায় চিকিৎসাধীন হাইমচর উপজেলার আলগী গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকালেও হাসপাতালের বেড থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইলটি চুরি হয়ে যায়।

সুমন এবং শুভ নামে দু,জন যুবক জানান, একইদিন দুপুরে হাসপাতালের টিকেট কাউন্টারের সামনে দুই জন নারীর ব্যাগ থেকে নগদ কয়েক হাজার টাকা চুরি করে নেয় চোর চক্র।

বহিরাগত লোকজন রুগীর স্বজন সেজে ওয়ার্ড-কেবিনে ঢুকে মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে অনায়াসে সরে পড়ছে। এমনি ভাবে প্রায় প্রতিদিনই হাসপাতালের বিভিন্নস্থানে ঘটছে নানা চুরির ঘটনা। এছাড়া কিন্তু এসব ব্যাপার দফায় দফায় হাসপাতাল কর্তাদের কানে তুলেও কাজ হচ্ছে না। বরং চুরির মাত্রা যেন বেড়েই চলেছে দিন দিন।

গত দেড় মাসে এ ধরনের প্রায় ১৫/ ২০ টিরও বেশি চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সিসি ক্যামেরা স্থাপনের পরেও প্রতিদিন হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং টিকেট কাউন্টরের সামনে অহরহ এমন চুরি থেকে রোগীরা রেহাই পাবে কি ? এমনটাই প্রশ্ন সচেতন মহলের।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর এমও) ডাঃ আসিবুল আহসান চৌধুরী চাঁদপুর টাইমসকে জানান, হাসপাতালে এসব চুরি রোধ করার জন্য আমরা বিভিন্নস্থানে একাধিক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছি। তবুও এসব চুরির ঘটনা রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে হাসপাতালের ওষুধ এবং টিকেট কাউন্টারের সামনে এসব চুরির ঘটনা ঘটে থাকে। সেখানে অনেক নারী এবং পুরুষ ভিড় করে টিকেট করার সময় চোরচক্ররা ভিড়ের মধ্যে ঢুকে তাদের জিনিসপত্র এবং টাকা পয়সা চুরি করার কারণে সেটি সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ছে না।

তাঁর মতে অনেক সময় দেখা যায় অনেক লোকজন হাসপাতালে রোগীকে দেখতে আসলে কিছু বহিরাগত চোর তাদের সঙ্গের লোকজন সেজে বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং কেবিনে ঢুকে রোগীদের মালামাল চুরি করছে। তাই এসব চুরির ঘটনা রোধ করার জন্য পাস বই করার সিন্ধান্ত নিয়েছি।

এদিকে হাসপাতালে নিয়মিত পুলিশ সদস্য দিয়ে টহল দেয়ার জন্য চাঁদপুরের পুলিশ সুপার বরাবর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আবেদন করেছে। পুলিশ সুপার আশ্বাস দিয়েছেন যত দ্রুত সম্ভব তিনি হাসপাতালে নিয়মিত পুলিশ সদস্য টহলের ব্যবস্থা করবেন, আর সেটি হলে হয়তো বা চুরির ঘটনা অনেকটা রোধ করা সম্ভব হবে।

প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি
২২ জানুয়ারি, ২০১৯

Share