Home / চাঁদপুর / আমাদের শেষ পযর্ন্ত মাঠে থাকতে হবে : জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট চাঁদপুর
আমাদের শেষ পযর্ন্ত মাঠে থাকতে হবে : জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট চাঁদপুর

আমাদের শেষ পযর্ন্ত মাঠে থাকতে হবে : জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট চাঁদপুর

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট চাঁদপুর জেলা শাখার নেতৃবৃন্দরা স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন।

শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মনোনিত চাঁদপুরের ৫টি আসনের ধানের শীষ মনোনিত প্রাথীরাও উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট চাঁদপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক সফিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অ্যাড. সেলিম আকবরের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. ফজলুল হক সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. হামিদ মাস্টার, সদস্য সাবেক এমপি রাশেদা বেগম হিরা, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনিত ধানের শীষ মনোনিত চাঁদপুর-২ আসনের প্রার্থী ডা. জালাল হোসেন, চাঁদপুর-৩ আসনের শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, চাঁদপুর-৪ আসনের আলহাজ্ব এমএ হান্নান।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট চাঁদপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক সফিউদ্দিন আহমেদে তার বক্তব্যের শুরুতেই ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিসবে সকল শহীদ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল বীর সেনাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

তিনি বলেন, বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনাই। অনেকেই বলেছেন বিএনপি কেনো ২০১৪ সনের নির্বাচনে অংশ নেয়নি। সেটি প্রমান করতেই আমরা এবার নির্বাচনে এসেছি। অথচ নির্বাচন কমিশন সরকারের ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে এসে তাদের নিজস্ব সত্ত্বা প্রমান করতে পারেনি। আমাদের মাঝে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে মাঠে নেমেছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা হিংসাত্মক রাজনীতি চাই না। আমরা চাই দেশের মানুষ যাতে নিশ্চিন্তে এবং নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারে। আমরা ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে বলেছি ভোট ডাকাতি করতে নয়। যাতে সাধারণ মানুষের ভোট কেউ ডাকাতি করতে না পারে এজন্য আমাদের নেতাকর্মীরা কেন্দ্র পাহারা দিবে। কেউ যাতে জাল ভোট দিতে না পারে। আমাদের মারো-কাঁটো যা-ই করো নির্বাচনের মাঠ ছাড়বো না। শেষ পযর্ন্ত মাঠে থাকবো।

অ্যাড. সেলিম আকবর বলেন, আমাদের প্রার্থীদের নানানভাবে হয়রানি করছে। নেতাকর্মীদের গায়েবী মামলা দিয়ে হয়রাণি এবং আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাদের হামলার শিকার হচ্ছে। জাতীয় এবং স্থানীয়ভাবে আমাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য চক্রান্ত শুরু হয়েছে। সমান ফিল্ড তৈরী করার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান করছি। ফরিদগঞ্জ, কচুয়ার, চাঁদপুর সদরের প্রার্থীদের শান্তিপূর্ণ মিছিল ও সমাবেশে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা করে আবার মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমাদের প্রতি যে অত্যাচার করা হচ্ছে তা আপনাদের মাধ্যমে তুলে ধরতে চাই। যাতে করে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

চাঁদপুর-৩ সদর-হাইমচর আসনের প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক বলেন, ‘আপনারা পোস্টার-ব্যানার লাগাতে গেলে বাঁধা দেয়া হচ্ছে। পোস্টার-ব্যানার পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি, কিন্তু তারা কোনো সুরাহা করেনি। আমাদের নেতাকর্মীদের মোটরসাইকেল আটকে দেয়া হচ্ছে। আমরা উঠোন বৈঠক করে আসার পর ওই স্থানে আমাদের নেতাকর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে পুলিশ নিজেরাই আমাদের সভা-সমাবেশে বাঁধা দিচ্ছে। আচরণ বিধি লঙ্গণ করে নৌকার বড় বড় ব্যানার ও তোড়ন করা হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘তফছিল ঘোষণার পর ডা. দীপু মনি শহরের প্রধান সড়ক বন্ধ করে জনসভা করেছে। এখনো বিভিন্ন স্থানের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দখল করে সভা করছে। চাঁদপুর সদরের প্রার্থী হিসেবে তিনি টানা ১০ বছর এমপি ছিলেন। তিনি যদি এলাকায় উন্নয়ন করে থাকেন তবে তার এতো ভয় কোনো। এটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা সাবার সহযোগিতা চাই।’

চাঁদপুর-৪ ফরিদগঞ্জ আসনের প্রার্থী আলহাজ্ব এমএ হান্নান বলেন, ‘প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্ধ দেয়ার পরে সকল প্রার্থীরা আনন্দ মিছিল করে এলাকায় গিয়েছে। কিন্তু চাঁদপুরে আমরা তা পারিনাই। আমার নির্বাচনী এলাকায় আনন্দ মিছিল করার সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো পুলিশ হামলা করেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করেনি। উল্টো তারা বলে আমাদের নেতাকর্মীরা আমাদের পুলিশের উপর হামলা হয়েছে। এরপর থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের আটক করা শুরু হয়েছে। আমি ওসি সাহেবের প্রত্যাহার চেয়ে ইসি, সিইসির কাছে চিঠি দিয়েছি। আমার বড় ভাই সাংসাবিদক শফিকুর রহমান এই আসানে আমার প্রতিদ্বন্ডি হিসেবে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন। তিনি খুব ভালো মানুষ। আমি আপনাদের মাধ্যমে আমার বড়ভাইকে জানাতে চাই আপনি সৎ মানুষ তাহলে নির্বাচন নিয়ে এতো ভয় কেনো। মানুষকে ভোট দেয়ার পরিবেশ দিন।’

চাঁদপুর-২ মতলব আসনের প্রার্থী ড. জালাল হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, আমার আসনে নেতাকর্মীরা সঙ্কিত, আতংঙ্কিত। কোনো কারণ ছাড়াই নেতাকর্মীদের আটক, হামলা-মামলা হয়রাণি করা হচ্ছে। এতো আতংঙ্কর মাঝে কিভাবে একটি সুষ্ঠ নির্বাচন হবে। আগামী ৩দিনের মধ্যে যদি সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করা না হয়, তবে আমি জনগণকে সাথে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের ডাক দিবো। আমরা চাই সুষ্ঠ পরিবেশে নির্বাচন হোক, মানুষ তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিন্তে প্রয়োগ করুক। সেখানে যেই নির্বাচিত হবে, আমি মেনে নিবো।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক মির্জা জাকির, সাবেক সভাপতি ইকরাম চৌধুরী, কাজী শাহাদাত, শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, গোলাম কিবরিয়া জীবন, শহীদ পাটওয়ারী, বিএম হান্নান, শরীফ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মিলন, রহিম বাদশা, সোহেল রুশদী, জিএম শাহীন, চাঁদপুর টেলিভিশস সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আল ইমরান শোভন, সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌস, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি কেএম মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক তালহা জুবায়েরসহ সকল পর্যায়ের সাংবাদিকরা।

মতবিনিময় সভায় জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. সলিম উল্যাহ সেলিমসহ জেলা বিএনপি, উপজেলা বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদক: আশিক বিন রহিম/শরীফুল ইসলাম
১৪ ডিসেম্বর,২০১৮

Leave a Reply