চাঁদপুর

চাঁদপুরে ইলিশ শিকারে প্রস্তুত মেঘনা পাড়ের জেলেরা

চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৯০ কিলোমিটার এলাকায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ইলিশসহ সকল ধরণের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এই সময় মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মওজুদ ও সরবরাহ আইনত দন্ডনীয়।

এ কারণে জাটকা রক্ষা কর্মসূচী বাস্তবায়নে দুই মাস পদ্মা-মেঘনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করছেন জেলা টাস্কফোর্স। কিন্তু সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিছু অসাধু জেলে ইলিশের পোনা জাটকা নিধনযজ্ঞে মেতে উঠেন। জনবল সংকট হওয়ার কারণে জাটকা রক্ষা কর্মসূচী শতভাগ সফল করা সম্ভব হয়না প্রশাসনের।

আর মাত্র ২/৩ দিন পরে অর্থাৎ ১ এপ্রিল রাত ১২টার পর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। জেলেরা নামবে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ আহরণ করতে। তাই এখন থেকেই জেলার নিবন্ধিত ৫১ হাজার ১৯০জন জেলে পরিবারে চলছে মাছ আহরণের প্রস্তুতি। নৌকা ও জাল মেরামত এবং নতুন করে জাল তৈরী করতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় করছেন জেলেরা। সদর উপজেলার জেলে পাড়াগুলো ঘুরে এমন চিত্রই দেখাগেছে।

বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের সাখুয়া গ্রামের নদী পাড় জেলে পাড়াগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, জেলেদের জাল ও নৌকা মেরামত করার কাজে ব্যস্ততা।

রামদাসদী গ্রামের জেলে হাসান বেপারী জানান, সরকারি নিষেধাজ্ঞা সময়ে তারা নদীতে মাছ আহরণ করেন না। সরকারে যেটুকু সহযোগিতা করেন, তা দিয়ে তাদের সংসার চলে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে মাছ আহরণে নামবেন তারা। সেই জন্য জাল ও নৌকা প্রস্তুত করছেন।

একই এলাকার জেলে আনোয়ার হোসেন রাঢ়ী জানান, সরকারি নিষেধাজ্ঞা তারা মানলেও এক শ্রেণীর জেলে তা না মেনে জাটকা নিধন করেন। আর এ কাজের সাথে জড়িত রয়েছে নৌ-পুলিশ। এজন্য তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই ধরনের অভিযান কিংবা জাটকা রক্ষা কর্মসূচি দিয়ে কি লাভ হবে এমন মন্তব্য জেলে আনোয়ার হোসেন এর।

জেলে শাহজাহান গাজী জানান, দুই মাস তারা মাছ আহরণ করেন না। সরকার এই সময়ের জন্য ফেব্রুয়ারী থেকে মে মাস পর্যন্ত প্রত্যেক জেলেকে ৪০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা হিসেবে যে চাল দেন, সেটা তারা পেয়ে আসছেন। কিন্তু তাদের পেশা জেলে হওয়ার কারণে এই সময়ে অন্য কোন কাজে যোগদেন না। ১ এপ্রিল থেকে মাছ আহরণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যদি আল্লাহর ইচ্ছা থাকে তাহলে ইলিশ পাবেন এমন আশা আকাঙ্খা তাদের। তবে জাটকা নিধনের কারণে ইলিশ উৎপাদন কমে যায় এমন ক্ষোভ প্রকাশ করলেন জেলে শাহাজাহান।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি বলেন, চাঁদপুরে জাটকা রক্ষা কর্মসূচীতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শতভাগ চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিছু সংখ্যক জেলেরা নিয়ম-নিতি তোয়াক্কা না করেই নদীনে মাছ আহরণ করেছে। এছাড়া তালিকাভূক্ত জেলে ছাড়াও সব জেলেরা নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার সাথে সাথে নদীতে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

প্রতিবেদক:শরীফুল ইসলাম
২৭ এপ্রিল ২০১৯

Share