Home / চাঁদপুর / চেয়ারম্যান ঢাকায় থেকে বলেন চাঁদপুরে : অগ্রিম স্বাক্ষর করেন খালি জন্ম সনদে
balia-union-parishad

চেয়ারম্যান ঢাকায় থেকে বলেন চাঁদপুরে : অগ্রিম স্বাক্ষর করেন খালি জন্ম সনদে

চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯নং বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম। তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে কার্যালয়ে থাকার কথা থাকলেও বেশিরভাগ সময়ে থাকেন ঢাকায়। ব্যবসা করেন ঢাকায়।

আর সপ্তাহে ২ থেকে ৩দিন থাকেন চাঁদপুরে। ইউনিয়ন পরিষদ এর কার্যক্রম পরিচালনা করেন সচিব মনসুর। এক সময় এই ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবাকেন্দ্র ছিলো উপজেলার মধ্যে প্রথম স্থানে। চেয়ারম্যান না থাকায় সেটিও এখন জিমিয়ে চলছে।

সোমবার (২১ অক্টোবর) সকাল ১০টায় ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায় সচিব মো. মনসুর কাজ করছেন। জিজ্ঞাসা করা হয় চেয়ারম্যান কোথায়? তিনি বলেন, চাঁদপুরেই আছেন কিছুক্ষণ পরে আসবেন। প্রায় ১ঘন্টা অপেক্ষা করা হলো, চেয়ারম্যান আসলেন না।

সচিবের কার্যালয়ে দেখাগেলো জাতীয়তা সনদপত্র বইটি। ওই বইতে চেয়ারম্যান আগেই স্বাক্ষর করে রেখেছেন। কোন নাগরিক আসলে ইউপি সদস্য, সচিব কিংবা অফিসের কম্পিউটার অপারেটন হাতে লিখে নাগরিক সনদপত্র লিখে দিচ্ছেন। বইটি নিয়ে দেখাগেলো ২৪০১-৫৫০০ নম্বরের মধ্যে ২৪০৩, ৪, ৯, ১০, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ৩২, ৩৩, ৩৯, ৪৬, ৫৮নম্বর সনদপত্রের মুড়িতে কোন তথ্য নেই। এসব সনদপত্র কি কোন রোহিঙ্গা নিয়েছে, নাকি স্থানীয় নাগরিক নিয়েছে এমন কোন তথ্য ও স্বাক্ষর নেই মুড়িতে।

এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয় ইউপি সচিব মো. মনসুর এর কাছে। তিনি বলেন, সনদপত্র ইউপি সদস্যরা লিখে নেন, আমরাও লিখি। মুড়িতে তথ্য লেখা থাকে।

ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান কার্যালয়টি চেয়ারম্যান না থাকলেও তালা খুলে রেখে আটকিয়ে রাখা হয়। যাতে বুঝা যায় চেয়ারম্যান আছেন, কোথায় কাজে গেছেন। অভিনব কায়দায় চলে চেয়ারম্যানের কার্যালয়।

সকাল ১১টায় চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামকে ফোন দেয়া হয় তিনি অফিসে আসবেন কিনা। তিনি বলেন আমি বিকেলে আসবো। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, তিনি সোমবার অফিসে আসেননি। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১টায় খোঁজ নিয়ে জানাগেছে চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম অফিসে আসেননি। তিনি ঢাকায় থেকে বলেন আমি চাঁদপুরে আছি।

চাঁদপুরের স্থানীয় সরকার এর উপপরিচালক (উপ-সচিব) মোহাম্মদ শওকত ওসমান এর সাথে বালিয়া ইউনিয়নের পরিষদের চলমান অবস্থার বিষয়গুলো অবগত করা হয়।

তিনি বলেন, চেয়ারম্যানরা ৯টা-৫টা অফিস করতে হয় না। তাদের কাজ জনগণের সাথেই বেশি। তবে দিনে একবার হলেও অফিসে এসে প্রয়োজনীয় কাজ করতে হয়।

মি. ওসমান বলেন, যদি তিনি উপস্থিত না থাকেন এবং নাগরিকত্ব সনদপত্র পুর্বেই স্বাক্ষর করে রেখে যান এবং কাউন্টার পার্টে স্বাক্ষর না থাকে। বিষয়টি তদন্ত করে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ২৩ অক্টোবর ২০১৯