চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কাউটিং কার্যক্রম নেই । জেলার ৮ উপজেলায় ১ হাজার ১ শ’ ৪৪ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে কেবলমাত্র ৪শ’ ৬২টি প্রাথমিকে এবং ৪শ’৭০টি বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসার মধ্যে ১শ’ ৬৮ টি স্কুল ও মাদ্রাসায় কাব ও স্কাউটিং কার্যক্রম আছে।
প্রাপ্ত তথ্যে মতে, জেলার ৬ শ’৮২ সরকারি ও ৩ শ’২ টি মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসায় এ কার্যক্রমই নেই। বাংলাদেশ স্কাউট চাঁদপুর জেলা শাখার প্রদত্ত এক তথ্যে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
চাদঁপুর সদরে,১১৩ টি কাব দল ও ২৬ টি স্কাউট দল,ফরিদগঞ্জে ১২০ টি কাব দল ও ৫১ টি স্কাউট দল, হাজীগঞ্জে ৫৪ টি কাব দল ও ১৭ টি স্কাউট দল,কচুয়ায় ৩২ টি কাব দল ও ১০ টি স্কাউট দল,শাহরাস্তিতে ৩৭ টি কাব দল ও ২৩ টি স্কাউট দল,মতলব উত্তরে ২৮ টি কাব দল ও ১৭ টি স্কাউট দল, মতলব দক্ষিণে ৫৪ টি কাব দল ও ১৬ টি স্কাউট দল এবং হাইমচরে ১৩ টি কাব দল ও ৮ টি স্কাউট দল পরিচালিত হচ্ছে ।
১৯৯৪ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ স্কাউটের যৌথ স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রের আলোকে বলা হয়েছে, দেশের সকল সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসায় স্কাউটিং,সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাব স্কাউটিং, কলেজে রোভার স্কাউটিং ও সরকারি-বেসরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে গালর্স গাইড দল গঠন করে পরিচালনা করা বাধ্যতামূলক।
এ ক্ষেত্রে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে দল গঠন ও পরিচালনার জন্য স্কাউটিং বিষয়ে বেসিক ইউনিট লিডার কোর্স প্রশিক্ষণ গ্রহণের শর্ত রয়েছে। প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ স্কাউট ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। এ দিকে
সব প্রতিষ্ঠানকে দল পরিচালনা করতে বাৎসরিক ২০ টাকা হারে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রশিদের মাধ্যমে আদায় করে শিক্ষার্থী প্রতি ৫ টাকা হারে জেলা স্কাউট ও ২ টাকা হারে উপজেলা স্কাউট তহবিলে জমা প্রদান করতে নির্দেশ রয়েছে।
বাকি ১৫ টাকা দিয়ে ওই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ইউনিট লিডার দলের নামে স্ব স্ব ব্যাংক হিসেব খুলে মাসে ১শ’টাকা সম্মানী হিসেবে গ্রহণ করবেন ও ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট ইউনিট দলটি পরিচালনা করবেন-এমনই সরকারি আদেশ রয়েছে।
অথচ খোদ জেলা স্কাউট এর প্রদত্ত তথ্য মতে, চাঁদপুর জেলার বেশিরভাগ সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসায় স্কাউটিং,সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাব স্কাউটিং,কলেজে রোভার স্কাউটিং ও সরকারি-বেসরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে গালর্স গাইড কার্যক্রম চলছে না।আবার দল আছে অথচ পরিচালনার ক্ষেত্রে সক্রিয় নয় ।
স্কাউটিং কার্যক্রম অনুশীলনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেধা বিকাশ,সৎ, আদর্শ,দায়িত্বশীল,চরিত্রবান,
সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশ ও নৈতিক গুণাবলীর একজন সু-নাগরিক হতে সাহায্য করে। স্কাউটিং কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীরাই দেশ, জাতিগঠনে এবং জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলায় স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকায় অসামান্য অবদান রাখতে পারে।
দেশের জাতীয় উৎসবে ও দিবসে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শহরে স্কাউটবৃন্দ রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম নিয়ন্ত্রণ,টীকা দিবসে সার্বিক দায়িত্ব পালন, রক্তদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও অন্যান্য সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করে থাকে।
বাংলাদেশ স্কাউট চাঁদপুর জেলা শাখার কমিশনার অজয় ভৌমিক এক প্রশ্নের উত্তরে চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘‘আমাদের জেলার বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার বাহিরে মেধাবিকাশে তেমন কোনো চেষ্টা করেন না ।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইউনিট লিডার ও প্রয়োজনীয় ফান্ড গঠনের ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও স্কাউটিং কার্যক্রম পরিচালনা করছেন না । আমি দৃঢ়চিত্তে বলতে পারি স্কাউটিং করেছে এবং বর্তমানে করছে এমন শিক্ষার্থীরা কখনো মাদকসেবী,জঙ্গিবাদি,সন্ত্রাসী ও ইভটিজিং কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারে না।
তিনি স্কাউটিং এর পাশাপাশি বিতর্ক, দেয়াল পত্রিকা প্রকাশ, কবিতা আবৃতি,কূইজ ও চিত্রাঙ্গন ইত্যাদি প্রতিযোগিতার আয়োজনের ব্যবস্থা করে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল প্রতিভাধারী হওয়ার জন্য স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান প্রধানগণের প্রতি আহবান জানান।’
চাঁদপুর টাইমস রিপোর্ট : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ২:১০ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬, রোববার
ডিএইচ