এক সপ্তাহেরও কম সময়ের ব্যবধানে দেশের বন্যাদুর্গত চার জেলা- জামালপুর, কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ ও গাইবান্ধায় ৩৯ জন অবুঝ শিশুর করুণ মৃত্যু হয়েছে।
তাদের মধ্যে ৩৬ জন পানিতে ডুবে ও তিনজন সাপের কামড়ে মারা গেছে। এদের সবাই অবুঝ শিশু। বয়স দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত-আট বছর। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে শিশুদের মৃত্যুর নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে।
সূূত্র জানায়, নিহত শিশুদের মধ্যে জামালপুর জেলায় সর্বোচ্চসংখ্যক ১৬ শিশুর মৃত্যু হয়। এছাড়া কুড়িগ্রামে ১০, সিরাজগঞ্জে ৮ ও গাইবান্ধায় ৫ শিশুর মৃত্যু হয়। সাপের কামড়ে মৃত তিন শিশুর মধ্যে দুজন জামালপুরে ও একজন সিরাজগঞ্জে মারা যায়। মোট মৃতের ১৩ জন মেয়ে শিশুও।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ন্যাশনাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার ও রোগ নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ইনচার্জ ডা. আয়েশা আখতার আজ (রোববার) সকালে জানান, বন্যায় আশ্রয়স্থল ডুবে যাওয়ায় পানিতে ডুবে মৃত্যুঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে।
বন্যার পানির কারণে বাড়িঘর ডুবে যাওয়ায় ক্ষুদে শিশুদের নিয়ে পরিবারগুলো রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। একদিকে পানিতে পড়ে যাওয়া, অন্যদিকে সাপে কাটার ভয় তাড়া করে ফিরছে পরিবারগুলোতে। রোববার দুপুর পর্যন্ত সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যানুসারে চার জেলায় ৩৯ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
বন্যাকবলিত জেলাগুলো গত ২৫ থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুসারে পানিবাহিতসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি ডায়রিয়া, তীব্র শ্বাসকষ্ট, সাপেকাটা, চর্মরোগ, চোখের প্রদাহে মোট ২ হাজার ৪৯৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
আক্রান্তদের মধ্যে ডায়রিয়ায় ৯৩৫ জন, তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত ২৫৯ জন, চর্ম ১১৪ জন, চোখের প্রদাহে ১৫১ জন, সাপেকাটা চারজন, বিভিন্ন ধরনের আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ১৮৫ জন ও অন্যান্য রোগে ১৩৩ জন রয়েছেন। রোগব্যাধি দেখা দিলেও এসব জেলায় পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে বলে দাবি করেন ডা. আয়েশা।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে নদীসংলগ্ন রাজবাড়ি, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য অবনতি অব্যাহত থাকতে পারে। ঢাকার আশপাশের বুড়িগঙ্গা, বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে সূত্র জানায়।(জাগো নিউজ)
নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট ০৭:৩৬ পিএম,৩১ জুলাই ২০১৬,রোববার
এইউ