স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষচিপ) চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন ও নির্বাচনকে সামনে রেখে সরগরম হয়ে উঠেছে চিকিৎসকদের রাজনীতির মাঠ । এতদিন সভাপতি পদে অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলানসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়রের নাম শোনা গেলেও নির্বাচনী উত্তাপ তেমনটা ছিল না।
কিন্তু বুধবার বিএমএ’র সাবেক মহাসচিব ও সিনিয়র চিকিৎসকদের কাছে জনপ্রিয় নেতা ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যোগদানের পরই পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। নির্বাচনের মাঠ হয়ে উঠেছে সরগরম।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় তিনি বিএমএ ভবনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় বৈঠকে বসেছেন। তবে তিনি প্রার্থী হচ্ছেন কিনা এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু না জানালে প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর সমর্থকরা সকাল থেকে গভীর রাত অবধি প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় পর আগামী ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সম্মেলন ও নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৩ সহস্রাধিক ভোটারের কাছ থেকে ভোট আদায়ের কৌশল খুঁজতে মরিয়া নেতাকর্মীরা।
পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে সফলতা বিফলতা তুলে ধরার পাশাপাশি গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে সমর্থন আদায়ের জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। ব্যক্তিগত যোগাযোগ, মোবাইল ফোন, তারবার্তা ও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।
ইকবাল আর্সলানের অনুসারীরা জানান, দেশের সকল শ্রেণির চিকিৎসক বিশেষ করে সিনিয়রদের মাঝে ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ভীষণ জনপ্রিয় হলেও নির্বাচনে জয়লাভ করা দুরুহ হয়ে পড়বে। কেননা, এক সময় তিনি চিকিৎসক সমাজের আর্দশ হলেও জাতীয় রাজনীতিতে যোগদানের কারণে তার দুরত্ব বেড়েছে। নতুন প্রজন্মের চিকিৎসকরাদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ না থাকায় ইকবাল আর্সলানের মতো তিনি জনপ্রিয় নন।
তবে মোস্তফা জালালের অনুসারীরা জানান, ডা. ইকবাল আর্সলান ১৩ বছর ধরে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছেন। রীতি অনুযায়ী সংগঠন পরিচালনা না করে অপেক্ষাকৃত কিছু চিকিৎসক নেতাকর্মীদের মাধ্যমে আপন বলয় সৃষ্টি করে দল পরিচালনা করেছেন তিনি।স্বাচিপের দুর্দিনের কাণ্ডারি ও ত্যাগী সিনিয়র নেতাদের মতামতকে বরাবর উপেক্ষা করেছেন। জুনিয়র সিনিয়রদের মধ্যে দুরত্ব সৃষ্টি করেছেন। বর্তমান সরকারের শাসনামলে তার পছন্দের লোকজনদের পদোন্নতি দিয়ে ভাল পদে বসিয়েছেন। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দুনীর্তি দমন কমিশনে (দুদক) মামলাও চলছে। এখনও তাদের নিয়েই নির্বাচনী বৈতরণী পার হবেন বলে বড়াই করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইকবাল আর্সলানকে ঠেকাতে ডা. জালালের পক্ষে প্রকাশ্যে যে সব নেতা মাঠে নেমেছেন তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ডা. জুলফিকার লেনিন অন্যতম। সরাসরি মুখ না খুললেও বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, বিএমএ’র সাবেক মহাসচিব ও বর্তমানে বিএসএমএমইউ’র উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন ভূঁইয়া, অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, ডা. জামালউদ্দিন চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান মিলন, ডা. আবুল হাশেমের মধ্যে দুই একজন আগে সভাপতি পদপ্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও পরে ডা. জালালকে সমর্থন দিয়েছেন। তাই তাদের কেউ কেউ সভাপতি/মহাসচিব পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলে জানা গেছে।
অপরদিকে ইকবাল আর্সলানের অনুসারীরা জানান, নেতার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির কোনো অভিযোগ নেই। তিনি চিকিৎসকদের পাশে সর্বদা থেকেছেন। ১/১১ পরবর্তী সময়ে বড় নেতাদের অনেকেই পর্দার অন্তরালে থাকলেও তিনি রাজপথে প্রতিবাদে নেমেছিলেন। এছাড়া নতুন সাত হাজার চিকিৎসক নিয়োগ, তাদের পদায়ন ও পদোন্নতির ব্যবস্থা করেছেন। কারও কারও অন্যায় আবদার রাখতে না পেরে আর্সলান তাদের বিরাগভাজন হয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তার অনুসারীরা।
নিউজ ডেস্ক ||আপডেট: ০৬:২৬ পিএম, ০৫ নভেম্বর ২০১৫, বৃহস্পতিবার
এমআরআর