জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের সময় বৈষ্যম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর গরম পানি নিক্ষেপের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ছাত্রলীগ ঘটিয়েছেন, হুমকি দিয়েছিলেন ‘৭ মিনিটে ঢাকা খালি’ করার। এ সবই করেছেন তারা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে।
পদ-পদবির সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমতাধর হয়ে উঠেছিলেন ছাত্রলীগের নেতারা। পিছিয়ে ছিলেন না সংগঠনটির নেত্রীরাও। শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, হলে সিট-বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাণিজ্য, ব্ল্যাকমেইলসহ কোনো কিছুতেই পিছিয়ে ছিলেন না তারা।
তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না দাপুটে, মারমুখী এসব নেত্রীদের। বেশিরভাগই চলে গেছেন আত্মগোপনে, কয়েকজন পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশে, কেউ বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন।
গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েন দল ও সংগঠনের নেতা-নেত্রীরা। খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ক্ষমতাধর কাউকে।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল শাখার সভাপতি আতিকা বিনতে হোসাইনের হয়রানিতে অতিষ্ঠ ছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মিছিলে যেতে বাধ্য করা, অন্যত্থায় মারধরের শিকার হওয়ার ভয়ে আতিকা ছিলেন শিক্ষার্থীদের এক আতঙ্কের নাম। বগুড়ার মেয়ে আতিকা ছিলেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের খুব ঘনিষ্ঠজন। এর সুবাদে ক্যাম্পাসে তার ছিল সীমাহীন ক্ষমতা। কমিটি বাণিজ্য, সচিবালয়ে তদবিরসহ নানা অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। সাদ্দাম-ইনান যে কয়টি কমিটি ঘোষণা করেছেন, সেখানে লেনদেন বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে আতিকার বিরুদ্ধে।
আতিকার ঔদ্ধত্য ছিল ১৫ জুলাই রাতেও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘৭ মিনিটে ঢাকা ক্লিয়ার’-এর হুমকি দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরির অপচেষ্টা করেন তিনি। এরপর আর শেষ রক্ষা হয়নি। ১৭ জুলাই রাতে ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি ও হালকা উত্তম-মধ্যম দিয়ে আতিকাসহ ছাত্রলীগের সাত নেত্রীকে রোকেয়া হল থেকে বের করে দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর পরই আত্মগোপনে চলে যান তিনি। তাকে আর দেখা যায়নি জনসম্মুখে।
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের ঘোষণায় প্রকাশ্যে না আসায় নেটিজেনরা আতিকাকে নিয়ে নানা রকম পোস্ট দিচ্ছেন। অনেকেই জানতে চাচ্ছেন, ছাত্রলীগের এই নেত্রী এখন কোথায়। তবে তিনি আত্মগোপনে থাকায় তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক/ ২৫ অক্টোবর ২০২৪
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur