ইসরায়েলি বাহিনী গাজা শহরে তাদের অবিরাম হামলায় একের পর এক হত্যা করছে ফিলিস্তিনিদের, সঙ্গে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে তাদের বাড়িঘর। এরকমই এক হামলায় গতকাল মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) মিকবিল পরিবারের বাড়িটি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়। হামলায় মারা যায় পরিবারটির ১৫ জন সদস্য এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েন আরও কয়েকজন।
বাড়িটির মালিকের একজন আত্মীয় কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরাকে বলেন, ‘এটা আমার ভাইয়ের বাড়ি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে নারী, শিশু ও প্রতিবেশীরা বাড়িটিতে আটকা পড়েছিলেন। তারা ছিলেন খুবই শান্তিপ্রিয় মানুষ…রোজা রাখার আগে সেহ্রী করে ঘুমাচ্ছিলেন তারা।’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নেতারা ও হোয়াইট হাউসের মধ্যে সম্পাদিত একটি চুক্তির আলোকে দেশটির সামরিক বাহিনী, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও অন্যান্য কর্মসূচির আওতায় ২০২৫ সালের মার্চ মাস নাগাদ জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক সাহায্য সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএকে সহায়তা প্রদান বন্ধ রাখবে বলে জানা গেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক তথ্যে বলা হয়, এ বিষয়ে প্রণীত আইন জনসম্মুখে প্রকাশ করা হলেই গাজায় সাহায্য পাঠানোর বিকল্প বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা যাবে। যুক্তরাষ্ট্র হলো ইউএনআরডব্লিউর সবচেয়ে বড় দাতা দেশ, যা ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রতি বছর ৩০ থেকে ৪০ কোটি ডলার প্রদান করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র গত জানুয়ারিতে ফিলিস্তিনি সংস্থাটিকে সাহায্য প্রদান বন্ধ করে দেয়। তাদের অভিযোগ ওই সংস্থাটির ১২ জন স্টাফ সদস্য ইসরায়েলে গত বছরের ৭ অক্টোবরের হামলায় সরাসরি অংশ নিয়েছিল।
এদিকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর এক ঘোষণায় জানিয়েছে, দেশটির উদ্যোগে দুই হাজার টন খাদ্য সহায়তা জর্ডান হয়ে গাজায় পাঠানো হয়েছে। তারা বলেছে, এই পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে দুই লাখ ৭৫ হাজার ফিলিস্তিনির মাঝে বিতরণ করা হবে। পররাষ্ট্র দপ্তর আরও জানিয়েছে, তারা ইউনিসেফের মাধ্যমে ১৫০ টন সহায়তা পণ্যও গাজায় সরবরাহ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে তাঁবু ও কম্বল।
অন্যদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের একজন কর্মকর্তা সূত্রে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্ট আগামী সপ্তাহে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগে একটি দ্বিপাক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন।
গাজায় ইসরায়েলের চাপিয়ে দেওয়া বর্বর যুদ্ধের কারণে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ২৩ লাখ অধিবাসী এখন অবশ্যম্ভাবী দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মুখে। গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলের অবিরাম হামলায় এ পর্যন্ত ৩১ হাজার ৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আহত হয়েছে আরও ৭৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। আহতরা এখন এমন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার স্থাপনার ওপর নির্ভরশীল, যা ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে বা হামলার মুখে রয়েছে।
চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক/ ২০ মার্চ ২০২৪