শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, জন্মের পর থেকে নারীদের জন্য দেয়াল তুলে দেওয়া হয়। তাদের ওপর নির্দেশ দেওয়া হয়, এটা করবে না, ওটা করবে না।
তবে নারীরা এখন সেই দেয়াল ভেঙে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। দেয়াল ভাঙা নারীদের সংখ্যা এখন দিন দিন বাড়ছে।
শনিবার (২৬ জুন) শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এই ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
এতে সভাপতিত্ব করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নারীরা এগিয়ে চলেছেন।
নারীরা এখন সমান অধিকার ভোগ করছেন। তবে নারীদের নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন শব্দ ব্যবহার করেন, যেটা পুরুষের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় না। যেমন ‘সম্ভ্রমহানী’ শব্দটি শুধু নারীর ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়, এটা পুরুষের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় না। তবে সম্ভ্রমহানি পুরুষের ক্ষেত্রেও ব্যবহার হতে পারে।
ওয়েবিনারে জাহানারা ইমাম স্মারক বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল কথাশিল্পী সেলিনা হোসেনের। তবে তিনি উপস্থিত না থাকলেও তার তার বক্তৃতা পড়ে শোনানো হয়।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন সমাজকর্মী মালেকা খান, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী প্রমুখ।
জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক: ধর্মনিরপেক্ষ মানবতার আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য প্রতি বছরের মতো এ বছরও বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ও সংগঠনকে ‘জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক’ দেওয়া হয়। চলতি বছর ব্যক্তি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর সরকারের সময় মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের পুনর্বাসন কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত সমাজকর্মী মালেকা খান এবং সংগঠন হিসেবে ‘বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ’কে জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক দেওয়া হয়। গত বছর করোনা মহামারি সংক্রমণজনিত লকডাউনের কারণে জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক দেওয়ার অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছিল। যা এ বছর দেওয়া হয়।
গত বছর ২০২০ সালে ব্যক্তি হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট বাউল গবেষক অধ্যাপক শক্তিনাথ ঝা এবং সংগঠন হিসেবে ‘বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ’-কে জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক, বরেণ্য কথাশিল্পী শহীদ জননী জাহানারা ইমাম মৃত্যুবরণ করেন ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন। প্রতি বছর ২৬ জুন শহীদ জননীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে ‘জাহানারা ইমাম স্মারক বক্তৃতা’, আলোচনা সভা এবং ‘জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক’ দেওয়ার আয়োজন করে নির্মূল কমিটি।
ঢাকা ব্যুরো চীফ,২৬ জুন ২০২১