জাটকা রক্ষা ও ইলিশ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার এলাকাকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করে আগামী দুই মাস সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞান বহাল থাকবে। এ সময় জেলে পরিবারগুলোকে ৪০ কেজি করে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে দুই মাসের অভয়াশ্রম অভিযান সফল করার জন্য চাঁদপুর জেলা টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির মতবিনিময় সভা অনু্ষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অালহাজ্ব নাসির উদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান, নৌ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন শিকদার, কোস্ট গার্ড এর প্রতিনিধি মোঃ আসাদ, প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, হাইমচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী হযরত আলী বেপারী, আলগী দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জলিল মাষ্টার, জেলা আওয়ামী মৎসজীবী লীগের সভাপতি মালেক দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক মানিক দেওয়ান প্রমূখ। এজেন্ডা ভিত্তিক আলোচনা করেন, জেলা মৎস কর্মকর্তা আসাদুল বাকী।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, আগামি নভেম্বর মাসে জেলের তালিকা হালনাগাদ করা হবে। এতে প্রকৃত জেলেদের রাখতে হবে। যারা মৃত, প্রবাসী কিংবা অন্য পেশায় যুক্ত হয়েছে, সেইসব জেলেদের কার্ড বাতিল করে নতুন করে প্রকৃত জেলেদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অভিযানের আগে থেকে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। প্রতিটি গ্রামে, হাট-বাজারে জাটকা রক্ষার অভিযানের বিষয়ে জানান দিতে হবে। একজন জেলে ভুল করে অভিযানের সময় যখন নদীতে নামলে তার যখন তাকে হাজতে যেতে হয়, তখন তার পুরো পরিবারই সেই শাস্তি ভোগ করে। তাই তাদের ভালো করে বুঝাতে হবে। বড় ধরনের কার্যক্রম করতে গেলে পরিকল্পনার দরকার পরে, পর্যালোচনা করে আমরা সে ধরনের একটি অ্যাকশন পরিকল্পনা করবো।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, আমি প্রকৃত জেলেদের পক্ষে, তবে দুর্বৃত্ত জেলের বিপক্ষে। দুর্বৃত্ত জেলের বিরুদ্ধে আমি কঠোর থেকে কঠোর হবো। সাধারণ জেলের পক্ষে আমি সবসময় আছি এবং থাকব। ভালোর সাথে থাকবো। আমরা সবাই মিলে
আন্তরিকতার সাথে কাজ করবো, যাতে দুই মাস কনো জাটকা ধরা না হয়।
জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য করে জেলা প্রশাসক বলেন, স্বদিচ্ছা থাকলে সবকিছু করা সম্ভব। জনপ্রতিনিধিরারা যদি মনস্থির করেন যে কোন জেলেকে নদীতে নামতে দিবেন না, তাহলে সম্ভব। এ কার্যক্রমে আপনাদের সহায়তা অনেক দরকার। জেলেদের সচেতন করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এ বিষয়ে আমরা আরো রুদ্রদার বৈঠঠক করবো। অভিযান চলাকালে নদীতে স্প্রিটবোট চলাচল বন্ধ থাকবে দুই মাস। চাঁদপুরে একটি বরফকল চলবে,বাকিসব বন্ধ থাকবে।
উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলি হরি, হাইমচর উপজেলা পরিষদ নির্বাহী কর্মকর্তা চাই থোয়াইহলা চৌধুরী, কচুয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাহী কর্মকর্তা দিপায়ন দাস, মতলব দক্ষিনের সহকারি কমিশনার (ভূমি) নুশরাত শারমিনসহ সংশ্লিষ্ট টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যবৃন্দ।
প্রসঙ্গত,জেলার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলায় তালিকাভুক্ত ৫১ হাজার ১৯০ জন জেলে রয়েছেন। এসব জেলেকে জাটকা নিধন থেকে বিরত থাকার জন্য তাদের প্রতিমাসে ৪০ কেজি করে চাউল প্রদান করা হয়।
প্রতিবেদক:আশিক বিন রহিম,২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১