Home / জাতীয় / করোনায় এশিয়ায় দ্বিতীয় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ
Garments

করোনায় এশিয়ায় দ্বিতীয় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ

এশিয়া মহাদেশে করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। শুক্রবার পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন প্রায় ৪ লাখ। জুলাইয়ে সংক্রমণ চূড়ায় উঠেছিল।

তবে বর্তমানে শনাক্তের হার শতকরা ৪০ ভাগের মতো কমেছে। এমনটাই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্স।

এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, বাংলাদেশে করোনা মহামারীর গতি ধীর হয়ে এসেছে। তা সত্ত্বেও চীনের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী দেশটি আবার মারাত্মক মন্দার মুখোমুখি।

কারণ, এরই মধ্যে তাদের মূল বাজার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় দফা করোনা সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। রয়টার্স জানায়, বাংলাদেশ করোনা নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতি করলেও তৈরি পোশাকের আন্তর্জাতিক খুচরা ক্রেতারা অর্ডার বিলম্বিত করছে অথবা দাম কম দাবি করছে। ফলে গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মীদের ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছেন।

কমপক্ষে ১০ লাখ গার্মেন্ট শ্রমিককে কাজ থেকে বাইরে রাখা হয়েছে, না হয় লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে। ইউনিয়ন নেতাদের মতে, জুলাইয়ের পর তিন ভাগের প্রায় এক ভাগকে কাজে নেয়া হয়েছে। শনিবার করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে গেছে এশিয়ায়।

এর মধ্য দিয়ে এ অঞ্চল করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার দিক দিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয়। ভারতে দ্রুত সংক্রমণের হার কমে যাওয়া সত্ত্বে এ অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বে করোনাভাইরাসে যে ৪ কোটি ২১ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন তার চার ভাগের প্রায় এক ভাগই এশিয়ার। এখানে মারা গেছেন কমপক্ষে এক লাখ ৬৩ হাজার। বিশ্বে করোনায় যে পরিমাণ মানুষ মারা গেছেন তার মধ্যে শতকরা ১৪ ভাগ এশিয়ার।

রয়টার্স পরিসংখ্যানটি তৈরি করেছে বিভিন্ন দেশের সরকারি হিসাবের ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু বাস্তবে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, করোনা পরীক্ষায় ঘাপলা আছে। অনেক দেশে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কম করে দেখানো হয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ভারত। বিশ্বে যে পরিমাণ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তার মধ্যে শতকরা প্রায় ২১ ভাগই ভারতের। আর মৃতের শতকরা ১২ ভাগ ভারতীয়। অন্যদিকে বিপরীত চিত্র চীন ও নিউজিল্যান্ডে। সেখানে করোনার বিস্তার দ্রুততর হতে পারেনি।

রয়টার্সের হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই বিশ্বে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ভারত। ভারতে দিনে গড়ে কমপক্ষে ৫৭ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এশিয়ার তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির এই দেশে প্রতি ১০ হাজার মানুষের মধ্যে আক্রান্তের শতকরা হার ৫৮। ভারতে গড়ে প্রতিদিন করোনায় মারা যাচ্ছেন ৭৬৪ জন।

ভারতে প্রায় ৭৮ লাখ মানুষ সংক্রমিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৫ লাখ মানুষ। ভারতে মারা গেছেন প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রে এ সংখ্যা ২ লাখ ২৪ হাজার ১২৮। তবে যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে ভারতে কমে আসছে। তা সত্ত্বেও চিকিৎসকদের আশঙ্কা ভারতে এই সংক্রমণের গতি আবার বৃদ্ধি পেতে পারে। কারণ সেখানে পুজোর ছুটি এবং সামনে শীতকাল।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় গত সপ্তাহে করোনায় ক্ষয়ক্ষতির দিক দিয়ে ফিলিপাইনকে ছাড়িয়ে গেছে ইন্দোনেশিয়া। সেখানে গত সপ্তাহে কমপক্ষে ৩ লাখ ৭০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। তারা করোনাকে নিয়ন্ত্রণে লড়াই করছে।

আগামী বছর তারা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক। তাই দেশটির সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ করোনা টিকা পাওয়ার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এখনও এই টিকা বাজারে আসেনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী বছরের শুরুর দিকে পাওয়া যেতে পারে এ টিকা।

বার্তা কক্ষ,২৪ অক্টোবর ২০২০