এম ভি ময়ূর-২ ভুলভাবে চালানোর কারণে ধাক্কা লেগে এমএল মর্নিং বার্ড লঞ্চটি ডুবে গেছে। এ ঘটনায় ময়ূর-২ লঞ্চের চালকদের দায়ী করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে দুই তদন্ত কমিটি।
৬ জুলাই সোমবার গভীর রাতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে তা জমা দেয়।
এর আগে একইদিন বিকালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) গঠিত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। আজ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করবে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
নৌ মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটির প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে চাইলে নৌ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেয়েছি।
এটি প্রকাশ করা হবে। এ উপলক্ষে প্রেস ব্রিফিং ডাকা হয়েছে। অপরদিকে বিআইডব্লিউটিএ-র প্রতিবেদন সম্পর্কে সংস্থাটির চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, প্রতিবেদনটি পুরো দেখা হয়নি। যতটুকু জানি, ময়ূর-২ লঞ্চের চালকদের অসতর্কতা ও অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
দুই কমিটি সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবেদনে ময়ূর-২ লঞ্চের অনিয়ন্ত্রিত গতিকে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ময়ূর-২ লঞ্চটি রং সাইডে চলছিল।
এটি মর্নিং বার্ডের ডানদিকে দিয়ে চলার কথা থাকলেও বাঁ-দিকে চলেছে। এ দুর্ঘটনার জন্য ময়ূর-২ লঞ্চের চারজন চালককে দায়ী করা হয়েছে।
তারা হলেন : প্রথম মাস্টার মো. আবুল বাশার মোল্লা (২য় শ্রেণির মাস্টার), দ্বিতীয় মাস্টার জাকির হোসেন (৩য় শ্রেণির মাস্টার), প্রথম ড্রাইভার শিপন হাওলাদার (২য় শ্রেণির ড্রাইভার) ও দ্বিতীয় ড্রাইভার মো. শাকিল সিপাই (৩য় শ্রেণির মাস্টার)।
দুটি প্রতিবেদনে দুর্ঘটনা এড়াতে বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করা, কেরানীগঞ্জের চর কালীগঞ্জ ও চর মীরেরবাগ এলাকা থেকে ডকইয়ার্ড অন্যত্র স্থানান্তর, লঞ্চ অলস বসে থাকার ঘাট অন্যত্র সরিয়ে নেয়া, ঢাকা নদীবন্দরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের সংখ্যা বাড়ানো (বর্তমানে ৭ জন আছেন) ও লঞ্চে দক্ষ ড্রাইভার ও মাস্টারের উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
২৯ জুন সোমবার ঢাকা নদীবন্দরের (সদরঘাট) কাছাকাছি এমভি ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় মর্নিং বার্ড লঞ্চ ডুবে যায়। ওই ঘটনায় মারা গেছেন ৩৪ জন।
ঘটনা তদন্তে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও নৌপরিবহন অধিদফতর পৃথক তিনটি কমিটি গঠন করে।
দুটি কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে। নৌপরিবহন অধিদফতর গঠিত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেয়ার আরও কয়েকদিন সময় রয়েছে।
মিরাজ-৬ লঞ্চের চালকদের গ্রেফতার : রোববার বুড়িগঙ্গা নদীতে মিরাজ-৬ লঞ্চের ধাক্কায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় করা মামলায় সোমবার মিরাজ-৬ লঞ্চের মাস্টার, ড্রাইভার ও সুকানিকে গ্রেফতার করেছে নৌ পুলিশ।
বার্তা কক্ষ,৭ জুলাই ২০২০