প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর মিছিলে যোগ দিয়েছেন আরও ৪৩ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো ১৭৩৮ জনের। একই সময় দেশে আরও ৩৮০৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এর ফলে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৭ হাজার ৭৮৭ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৪০৯ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়েছেন মোট ৫৫ হাজার ৭২৭ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪০ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ৩৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আগের নমুনাসহ মোট পরীক্ষা করা হয় ১৮ হাজার ৯৯টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা হলো ৭ লাখ ৩০ হাজার ১৯৭টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৮০৯ জনের মধ্যে। শনাক্তের হার ২১ দশমিক ০৫ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের এ অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, নতুন করে যে ৪৩ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ২৯ জন ও নারী ১৪জন। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ২৬ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারী ৪৩ জনের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২১-৩০ বছর বয়সী দু্জন, ৩১-৪০ বছর বয়সী একজন, ৪১-৫০ বছর বয়সী সাতজন, ৫১-৬০ বছর বয়সী ১৩ জন, ৬১-৭০ বছর বয়সী ১২ জন এবং ৭১ থেকে ৮০ বছরের সাতজন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের একজন রয়েছেন।
এর মধ্যে ২১ জন ঢাকা বিভাগের, ১০ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, খুলনা বিভাগে তিনজন, রাজশাহী বিভাগে দুজন, সিলেট বিভাগে তিনজন, রংপুরে বিভাগে একজন, বরিশাল বিভাগে দুজন ও ময়মনসিংহ বিভাগে একজন রয়েছেন। হাসপাতালে ৩০ জন, বাড়িতে ১২ জন এবং বাসায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৭১৭ জনকে এবং এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ২৪ হাজার ৮১০ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৪৬১ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ১০ হাজার ২২৭ জন।
বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১৪ হাজার ৫২৩জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন হাজার ৯০ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন লাখ ৫৮ হাজার ২৭১ জনকে।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৪০৫ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৯৩ হাজার ৬৭৩ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬৪ হাজার ৫৯৮ জন।
গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানো করোনাভাইরাস গোটা বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৯ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মৃতের সংখ্যাও ৫ লাখ ছুঁই ছুঁই করছে। তবে ৫৩ লাখের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। আর প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ।
এর আগে শনিবারের (২৭ জুন) ব্রিফিংয়ে জানানো হয়েছিল- ৩ হাজার ৫০৪ জনের শরীরে জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে ৩৪ জনের প্রাণ কেড়ে নেয় এ ভাইরাস। এদিন দেশের ৫৮ ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা সংগ্রহ করা হয় ১৫ হাজার ৫৯টি। আগের নমুনাসহ মোট পরীক্ষা করা হয় ১৫ হাজার ১৫৭টি।