চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় এক তরুণীকে বিয়ের প্রলোভনে এক যুবতী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় ধর্ষক মেহেদী হাসানকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মতলব দক্ষিণ উপজেলার ওই মেয়ে ঢাকার শ্যামপুর এলাকায় ফুফুর বাড়িতে থেকে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। সেখানে চাকরি করা অবস্থায় ফেসবুকের মাধ্যমে মেহেদী হাসান নামের এক যুবকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তিনি মালয়েশিয়ায় লেখাপড়া শেষ করে গত ১৬ নভেম্বর বাড়ি ফেরেন।
বাড়িতে আসার পর মেহেদীর সঙ্গে ওই তরুণীর যোগাযোগ আরও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
গত ২৭ জানুয়ারি বিকেলে লঞ্চযোগে ঢাকা থেকে চাঁদপুর হয়ে বাড়ি আসার উদ্দেশে এক সঙ্গে রওনা দেন ওই তরুণ-তরুণী। তাঁরা ওই লঞ্চের একটি কেবিন ভাড়া করেন। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সেখানে ওই তরুণীটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন ওই তরুণ।
এরপর গত ৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে তাঁরা দুজন বাড়ি থেকে চাঁদপুর হয়ে লঞ্চে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে ভাড়া করা কেবিনে ওই তরুণ আগের মতই একাধিকবার জোরপূর্বক তরুণীটিকে ধর্ষণ করেন। বাড়ি আসার পর গত ফেব্রুয়ারি জুড়ে ও চলতি মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত তরুণীটির বসতঘরে গিয়ে প্রায় প্রতি রাতে ওই তরুণ বহুবার তাঁকে ধর্ষণ করেন। তরুণীটি দেড় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তাঁকে বিয়ে করার জন্য ওই তরুণকে প্রস্তাব দেন। কিন্তু তাঁর প্রস্তাবে রাজি হন নি ছেলেটি।
মেয়েটি সাংবাদিকদের জানান, কয়েক দিন আগে ঘটনাটি তিনি তাঁর বাবা-মা ও খালাকে জানালে তাঁরা বিষয়টি ওই তরুণের ভাই ইউপি সদস্য আবু তাহের ও মামা আলমগীর হোসেনকে জানান।
পরে আবু তাহের ও আলমগীর বিষয়টি মীমাংসার জন্য চাঁদপুর শহরের ষোলঘর এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের একটি কক্ষে ওই তরুণী এবং তাঁর পরিবারের লোকজনকে ডেকে নেন। সেখানে বিয়ের পরিবর্তে আড়াই লাখ টাকার ঘটনাটি রফাদফার প্রস্তাব করা হয়।
মেয়েটির অভিযোগ, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছেলে বহুবার তাঁকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর সে প্রতিশ্রুতি ভুলে ঘটনাটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এতে তাঁর পরিবারের মানসম্মান ও তাঁর নিজের ভবিষ্যৎ নষ্টের পথে।
এ ব্যাপারে মতলব দক্ষিণ থানার ওসি স্বপন কুমার আইচ বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার হওয়া মেয়েটি নিজেই বাদী হয়ে মঙ্গলবার অভিযুক্ত মেহেদী হাসানসহ চারজনকে আসামি করে থানায় ধর্ষণের মামলা করেন। মেহেদী হাসানকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। মামলাটির তদন্ত চলছে।’
মাহফুজ মল্লিক,১৭ মার্চ ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur