গায়ে ইস্ত্রি করা শার্ট, তার সঙ্গে মানানসই প্যান্ট, চকচকে পালিশ করা সু,টাই আর সানগ্লাস-হাত ঘড়িও ও বাদ যায়নি। এভাবেই একদম সাহেব সেজে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন সড়কে প্রতিদিন অটো রিকশা চালান ওমর আলী।
স্থানীয়দের দৃষ্টিতে তিনি স্মার্ট’ (সৌখিন) রিকশা চালক। ফ্যাশনের দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার পাশাপাশি তিনি শুদ্ধ বাংলায় কথা বলার চেষ্টাও করেন। তার বুদ্ধিমত্তা ও আচরণে মুগ্ধ হন যাত্রীসহ সবাই। তাই অধিকাংশ যাত্রীর কাছ থেকেই তিনি বকশিস হিসেবে পান বাড়তি ভাড়া।
রিশকা চালক মো. ওমর আলী কচুয়া উপজেলার কাদিরখিল এলাকার বাসিন্দা মো. আবিদ আলীর ছেলে। তিনি সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। এরপর অভাবের কারণে আর লেখাপড়া হয়নি। বর্তমানে তার সংসারে বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ও এক সন্তানকে নিয়ে তার অভাবী সংসার।
যুবক ওমর আলী জানান, এক বছর ধরে কচুয়াসহ ও পাশ্ববর্তী এলাকায় রিকশা চালান তিনি। স্মার্ট হয়ে রিকশা চালানোতে তিনি সহজেই মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘অনেকেই শখ করে আমার রিকশায় ঘুরে বেড়ায়, আমার সাথে সেলফি তোলে, চা খাওয়ায়। এগুলো আমার বেশ ভালো লাগে। এছাড়া অনেকেই আমার আচরণে খুশি হয়ে ২০ টাকার ভাড়া অনেক সময় অধিক টাকাও দিয়ে থোকেন। এভাবে প্রতিদিন গড়ে ৫-৬ শত টাকা রোজগার হয়।
তিনি বলেন, আমার আটটা প্যান্ট, আটটা শার্ট, তিন জোড়া জুতো, তিনটি টাই আর শীতে ব্যবহারের জন্য দু’টো ব্লেজার আছে। এসব আমি রিকশা চালিয়ে রোজগারের টাকা দিয়েই কিনেছি।’
‘মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিভিন্ন দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সুন্দর করে সাজানো হয়। তাই আমিও মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য পরিপাটি হয়ে সুন্দর পোশাক পড়ে প্রতিদিন রিকশা চালাতে রাস্তায় বের হই। এতে করে একই সাথে দুটো লাভ হয়, প্রথমত যাত্রী ও ভাড়া বেশি পাওয়া যায় এবং মনের দিক থেকে শরীর মন দু’টি ভালো থাকে। যতদিন বাচঁবো সুন্দর পোশাক পড়ে রিকশা চালানোর চেষ্টা করবো।’
জিসান আহমেদ নান্নু