নিজ কক্ষে সিলিং ফ্যানের সাথে গায়ের ওড়না জড়ানো অবস্থায় চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী মিতা রাণী সরকারের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১৮ মার্চ বুধবার দুপুরে চাঁদপুর শহরের ১০নং ওয়ার্ড কদমতলা এলাকার পোদ্দার বাড়ির ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়। মৃত মিতা রানী সরকারের কচুয়া উপজেলার মাছিমপুর উত্তর বাজারে হরিমোহন সরকারের মেয়ে।
চাঁদপুর শহরের কদমতলা এলাকার কাজল পোদ্দারের বাড়ির নিচ তলার পশ্চিম পাশের ফ্ল্যাটটিতে ফরিদগঞ্জ উপজেলার বৈজাতলী গ্রামের ফার্মেসী ব্যবসায়ী সবুজ হাওলাদার স্ত্রী ও শালিকা নিয়ে বসবাস করতেন। এ বাসায় থেকেই মৃত মিতা রানী সরকার গত বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এক বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় আগামী ২ এপ্রিল এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল।
গত ১৭মার্চ বিকেলে বোনের বাসায় কিছু বই রেখে আসছে বলে গ্রামের বাড়ি থেকে ফ্ল্যাটের চাবি নিয়ে ফ্ল্যাটটিতে ঢুকে। পরদিন অর্থাৎ গতকাল সকাল আনুমানিক ১০টায় বাড়ির মালিক ফ্ল্যাটের দরজায় কড়া নাড়লে ভিতর থেকে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের পুলিশকে অবহিত করে। মডেল থানার অফিসার ইচনার্জ নাসিম উদ্দিন তাৎক্ষনিক একজন এসআইকে নিদের্শনা দিলে এসআইস আওলাদ হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেছিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় মিতা রানী সরকারের মৃতদেহ দেখতে পায়।
এসআই আওলাদ হোসেন মৃত মিতা রানী সরকারের দেহ থেকে প্রচুর পরিমান রক্ত ঝরায় তাৎক্ষণিক মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করলে, অফিসার ইনচার্জ নাসিম উদ্দিন বিষয়টি পিবিআইকে জানান। সংবাদ শুনে পিবিআইয়ের ইন্সফেক্টর কবির আহমেদ ও আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌছেন।
এব্যাপারে পিবিআই ইন্সফেক্টর কবির আহমেদের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমরা সদর মডেল থানা থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে মিতা রানী সরকারের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই। প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করেছি। পরবর্তীতে ঘটনা উদঘাটনে তদন্ত চলছে এবং আমরা ওই রুম থেকে একটি হ্যান্ডনোটও পেয়েছি যাতে লেখা ছিল আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। তবে তদন্ত করে জানা যাবে এটি মিতা রানী সরকারের হাতের লেখা কি না।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার এসআই আওলাদের সাথে কথা বললে, তিনি জানান, আমরা ঘরের দরজা শাবাল দিয়ে ভেঙ্গে ঢুকে দেখতে পাই মিতা রানী সরকার ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে, লাশের দেহে রক্তক্ষরনের কারণে আমি বিষয়টি ওসি স্যারকে ফোন করে বলি এবং ওসি স্যার পিবিআইকে খরব দিয়েছে বলে আমাদেরকে নিশ্চিত করেন।
এ রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত চাঁদপুর সদর মডেল থানা একটি অপমৃত্যু মামলার প্রস্তুতি চলছে।
প্রতিবেদক : মাজহারুল ইসলাম অনিক, ১৯ মার্চ ২০২০