হাসান সাইদুল :
সারাদেশে যেন লু হাওয়া বইছে। জ্যৈষ্ঠে গরম এমনিতেই সবচেয়ে বেশি থাকে। তার ওপর যোগ হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব। ঘরে, রাস্তায়, অফিসে – কোথাও রেহাই নেই এই গরম থেকে। সারাদিনের তাপ গায়ে লাগিয়ে রাতে যেন উনুন হয়ে থাকে ঘরটি। গরমে ঘুম হয় না। যাদের এসি নেই, তাদের সবারই এখন এই অবস্থা।
কিন্তু, একটু মাথা খাটালে আর সামান্য কিছু নিয়ম মানলেই সাধারণ একটা টেবিল ফ্যানেই এসির প্রশান্তি আনা সম্ভব। কীভাবে? জেনে নিই আসুন।
১. বেছে নিন ‘সুতি’কাপড়
সাটিন, সিল্ক বা পলিয়েস্টারের বেডশিট শীতের রাতের জন্য তুলে রাখুন। পাতলা সুতি চাদর দিয়ে সহজে বাতাস চলাচল করতে পারে। আরামদায়ক ঘুমের জন্য অবশ্যই বিছানায় পাতলা সুতি চাদর ব্যবহার করুন।
২. ফ্রিজ বার্ন
বিছানোর কিছুক্ষণ আগে বিছানার চাদরটি একটি প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে কয়েক মিনিটের জন্য ফ্রিজ বা ফ্রিজারে রেখে দিন। চমৎকার ঠাণ্ডা অনুভূতি নিয়ে ঘুমুতে চাইলে এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন।
৩. হট ওয়াটার ব্যাগ
বাসায় হট ওয়াটার ব্যাগ থাকলে সেটাকে ভরে ফেলুন বরফঠাণ্ডা পানি দিয়ে, আর ঘুমোনোর সময় বিছানায় এটাকে ব্যবহার করুন ‘আইস প্যাক’ হিসেবে।
৪. টেবিল ফ্যান
সিলিং ফ্যান থাকুক। সঙ্গে টেবিল ফ্যানটিকে জানালার দিকে মুখ করে চালিয়ে দিন। এতে ঘরের গরম বাতাস সহজে বেরিয়ে যেতে পারবে, আর ঘরকে রাখবে ঠাণ্ডা।
৫. মিশরিয় পদ্ধতি
গরম তাড়ানোর মিশরিয় এই পদ্ধতি হাজার বছরের পুরোনো। একটি সুতি চাদর বা গামছা ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে, পানি ঝরিয়ে গায়ের ওপর জড়িয়ে রাখতে পারেন। ভেজা চাদরের নিচে একটি শুকনো চাদর দিলে শরীর ভিজে যাবে না।
৬. আরেকটি প্রাচীন পদ্ধতি
একটি অগভীর পাত্র বরফে ভর্তি করে টেবিল ফ্যানের সামনে রাখুন। দেখুন মুহূর্তেই শীতলতায় ভরে যাবে আপনার চারপাশ।
৭. কাজে লাগান পালস পয়েন্ট
খুব দ্রুত শরীর ঠাণ্ডা করতে ব্যবহার করুন আপনার শরীরের পালস পয়েন্টগুলো। হাতের কব্জি, কনুই, ঘাড়, কুঁচকি, গোড়ালি আর হাঁটুতে কিছুক্ষণ আইস প্যাক ধরে রাখুন। মূহুর্তেই ঠাণ্ডা হবে শরীর।
৮. হয়ে যান খোলামেলা
খুব বেশি গরম লাগছে? ঘুমানোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন হ্যামক বা সাধারন কট। এগুলো খোলামেলা হওয়ায় অনেক বেশি বাতাস চলাচল করতে পারে।
৯. পানি আর পানি!
ঘুমের সময় নড়চড়া আর ঘামের কারণে শরীর থেকে অনেক পানি বের হয়ে যায়। এজন্য এক গ্লাস পানি পান করে ঘুমোতে যান। এতে আপনার শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়বে না। তবে, এক গ্লাসের বেশি পানি না পান করাই ভালো।
১০. গোসল
শরীর থেকে উত্তাপ আর ঘামের আঁঠালো অনুভূতি দূর করতে ঘুমানোর আগে একটা গোসল খুব কাজের। এটি শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে দিয়ে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে।
১১. একটু নিচে নামুন
গরম বাতাস সবসময় উপরের দিকে উঠে যায়। এজন্য অপেক্ষাকৃত নিচু বিছানা ব্যবহার করুন। নয়তো, ফ্লোরেই করে নিতে পারেন আপনার ঘুমুনোর আয়োজন।
১২. অন্ধকারকে কাজে লাগান
যে কোনো ধরনের বাতি থেকে তাপ সৃষ্টি হয়। ঘরকে ঠাণ্ডা রাখতে বাতি বন্ধ করে রাখুন। এমনকি, তাপ সৃষ্টি করে এমন সব বৈদ্যুতিক গৃহস্থালী সামগ্রী বা গেজেট ব্যবহার থেকে বিরত থাকলেও ঘর ঠাণ্ডা থাকবে।
১৩. ভেজা চাদর
খোলা জানালায় একটি ভেজা চাদর ঝুলিয়ে দিন। বাইরের বাতাস ঘরে ঠাণ্ডা হয়ে ঢুকে ঘরের তাপমাত্রা কমিয়ে দেবে।
১৪. এক বালতি পানি
বিছানার কাছে বালতিতে পানি রাখতে পারেন। খুব বেশি গরম লাগলে, বালতির পানিতে কিছুক্ষণ পা ডুবিয়ে রাখুন। পায়ের গোড়ালিতে ঠাণ্ডা অনুভূতি আপনার শরীরকেও ঠাণ্ডা করে দেবে।
এই নিয়মগুলো সুবিধামতো প্রয়োগ করে দেখুন। জ্যৈষ্ঠের এই দাবদাহেও হবে স্বস্তির ঘুম।
শুক্রবার ০৫ জুন ২০১৫ : ১২:২৯
চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur