দক্ষিণ আফ্রিকায় কতিপয় সন্ত্রাসীর গুলিতে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। সোমবার (২২ জুলাই) বাংলাদেশ সময় রাত বারোটায় ওই দেশটির কেপ টাউন শহরের একটি দোকানে এ ঘটনা ঘটে। তার বাড়ি চাঁদপুরের মতলবের নারায়ণপু ইউনিয়নের দারিন্দা রসুলপুর গ্রামে। নিহত ওই ব্যক্তির নাম জিয়াউর রহমান (৩২)। তিনি ওই গ্রামের মৃত ওয়ালীউল্লাহ সরকারের বড় ছেলে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে-সোমবার মাগরিব নামাজ আদায় করতে দোকানে তাঁর এক কর্মচারীকে রেখে তিনি বাসায় চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর দু-তিনজন সন্ত্রাসী এসে ওই কর্মচারীর মাধ্যমে খবর দিয়ে পুনরায় তাঁকে দোকানে আসতে বলেন। তিনি সেখানে যাওয়া মাত্রই দু’জন সন্ত্রাসী তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে তাঁর মাথা,বুক ও শরীরের বিভিন্ন অংশ গুলিবিদ্ধ হয়। তাঁর শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি।
জিয়াউর রহমানের স্ত্রী তানজিনা আক্তার বলেন,‘সোমবার মধ্য রাতে তাঁর স্বামীর ভাগনে মো.সাজ্জিদ ঢাকা থেকে ফোন করে তাঁকে ঘটনাটি জানান। স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে তিনি ও তাঁর স্বামীর পরিবারের সদস্যরা শোকে পাথর হয়ে গেছেন।’
স্বামী বরাদ দিয়ে তিনি আরোও বলেন,‘কয়েকদিন ধরে তাঁর দোকানে এসে কতিপয় সন্ত্রাসী চাঁদা দাবি করেন। এতে তিনি অপারগতা জানালে সন্ত্রাসীরা তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত হন।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান,মতলব দক্ষিণ উপজেলার নিউ হোস্টেল এলাকায় একটি ভাড়া করা বাসায় কন্যাশিশু জিনিয়া আক্তারকে (১৮ মাস) নিয়ে থাকছেন তিনি। স্বামীর পাঠানো টাকায় সংসারের যাবতীয় খরচ মেটানো হতো। এখন স্বামীর মৃত্যুতে তাঁর সংসারের হাল কে ধরবে। স্বামীকে হারিয়ে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে বড়ই বিপাকে পড়েছেন।
বিদেশে তিনি (জিয়া) গেলেন আয়-রোজগার করতে। আর এখন ফিরবেন লাশ হয়ে। এ কষ্ট মেনে নেয়া কঠিন। দক্ষিণ আফ্রিকায় জিয়াউর রহমানের লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। আগামি বুধবারের কোনো এক সময় তাঁর লাশ দেশে আসবে। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হবে।
২০০৭ সালে জিয়াউর রহমান দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান। সে দেশের রাজধানী কেপ টাউনে নিজে একটি মুদি ও প্রসাধনী সামগ্রীর দোকান খুলে ব্যবসা করে আসছিলেন। ৭ নভেম্বর তিনি দেশে আসেন এবং কিছুদিন থেকে ২০ জুন পুনরায় সেখানে চলে যান।
মাহ্ফুজ মল্লিক
২৩ জুলাই ২০১৯
এজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur