চাঁদপুর পৌরসভার ১৩ নং ওয়ার্ডের খলিশাডুলি এলাকায় মামলাবাজ ও ভূমিদস্যুদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে একাধীক নিরিহ পরিবার। বিশেষ করে দূর দূরান্ত থেকে এসে জমি ক্রয়করে বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান করতে গিয়ে তাদের বাঁধার সম্মুখিন হতে হচ্ছে।
শুধু তাই নয় এসব ভূমিদস্যুরা বাসতবাড়ি, দোকানপাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমি দখল করতে মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরিহ পরিবারদেরকে একের পর এক হয়রানি করে জমি দখল করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে সরোজমিনে গিয়ে জানাযায়, চাঁদপুর পৌরসভার খলিশাডুলি এলাকার স্থানীয় মৃত আমির আলী মজুমদারের পুত্র জৈনক মো. পারভেজ আখতার হিমু, মৃত মজিদ গাজীর পুত্র মো. শাহজাহান গাজী, মৃত মান্নান খলিফার পুত্র বিল্লাল খলিফা ও মৃত চাঁন কাজীর পুত্র বাবুল কাজীসহ একটি সিন্ডিকেট চক্র ওই এলাকার নিরিহ ও সাধারণ মানুষকে মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা দিয়ে হয়রানি করে জমি দখল করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগকারীদের মধ্যে মৃত কামরুল আহসানের স্ত্রী ও তিন কন্যা সন্তানের জননী জেসমিন আহসান জানান, তার স্বামী প্রায় ২৫ বছর যাবৎ খলিশাডুলী এলাকায় ২৭ শতক জমি কিনে বসতঘর করে মুরগির ফার্ম করে ব্যবসা ও বসবাস শুরু করেন। পরবর্তীতে তার দেবরা তাদের প্রাপ্প ১৬ শতক জমি স্থানীয় মৃত আমির আলী মজুমদারের পুত্র জাপান প্রবাসী মো. পারভেজ আখতার হিমুর কাছে বিক্রি করে দেয়। এরপর থেকে বাকী ১১শতক জমির উপর কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে ওই স্থানে দু’যুগেরও বেশি সময় ধরে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। কিন্তু পারভেজ আখতার হিমু তাদের বসবাসরত বাকী ১১ শতক জমি ক্রয় করতে দালাল লেলিয়ে দেন। কিন্তু তার সেই চেষ্টা ব্যার্থ হয়।
২০১৫সালে জেসমিন আহসানের স্বামীর মৃত্যুর পর পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়ে। সেই সুযোগে পারভেজ আখতার হিমু জমি ক্রয়ের পরিবর্তে দখল করার জন্য স্থানীয় বখাটেদের তাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়। তারা রাতের আঁধারে বাড়ির চালে ডিল মারা, একাধিক বার চুরির ঘটনা ঘটিয়ে স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকাসহ মালামাল চুরিসহ বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করতে থাকে। তখন ৩ কন্যা সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন বিধবা জেসমিন আহসান।
স্থানীয়রা জানায়, ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ পূনরায় ক্ষমতায় আসার পর পারভেজ আখতার হিমুসহ তার সহযোগিরা হঠাৎ করে চাঁতদপুর থেকে গাঁ ডাকা দেয়। কারন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদ-াদেশ প্রাপ্ত আসামি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) এম রাশেদ চৌধুরীর চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলায় রাশেদ চৌধুরীর ১.১৫ একর জমি জব্দ করে সরকার। সেই ভয়ে রাশেদ চৌধুরীর স্বজন (স্থানীয়দের তথ্য মতে খালাতো ভাই) এবং জাপানস্থ জামায়াত নেতা পারভেজ আখতার হিমু তার বিশাল সম্পাদ রক্ষার্থে গা-ঢাকা দেয়। অপরদিকে চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা শাহজাহান গাজী জ্বালাও পোরাও মামলায় আটকের ভয়ে পুরো পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে যায়।
এদিকে চলতি বছরে জেসমিন আহসানের বড় জামাতা ১১ শতক জমির মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩ শতক জমির উপর আধুনিক ও মানসম্মত শিক্ষা বিস্তারে স্থানীয় কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য “কে জি মর্ডান শিশু বিদ্যালয়”
নির্মানের উদ্যোগ নেয়। সেই লক্ষ্যে গত ১৪ জুন স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরীসহ আগত অতিথিরা নব নির্মিত স্কুলের ভিত্তি প্রস্তর কাজের উদ্বোধন করেন।
পারভেজ আখতার হিমু স্কুল ভবনের কাজের খবর পেয়ে হঠাৎ করে লোকজন নিয়ে চলতি বছরের গত ২ মে এসে হুমকি-ধমকি দিয়ে কাজ বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দিয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৫ জুন পুনরায় লোকজন নিয়ে এসে স্কুলের ভবনের কাজ বন্ধ রাখতে আবারো হুমকি দেয় এবং চাঁদা দাবি করে।
এ বিষয়ে পারভেজ আক্তার হিমুর এলাকায় গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। সে ঢাকায় অবস্থান করছেন, এমন খবরে তার মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।