Home / স্বাস্থ্য / মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথায় করণীয়
মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথায় করণীয়
ফাইল ছবি

মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথায় করণীয়

‎Sunday, ‎24 ‎May, ‎2015 03:02:50 PM

চাঁদপুর টাইমস স্বাস্থ্য ডেস্ক :

মেয়েদের মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথা আমাদের দেশে একটা সাধারণ ব্যাপারই বলতে হয়। কিন্তু একটু সচেতন হলেই এই ব্যথা এড়িয়ে চলা যায়। কোন বোতলে গরম পানি ভরে বা কাপড় গরম করে তলপেটে ২০/২৫ মিনিট ছ্যাক লাগাতে হবে। এটা সপ্তাহে টানা ৩/৪ দিন করে করতে হবে। এতে ধীরে ধীরে মাসিকের সময় ব্যাথা কমে যাবে।

এছাড়া আরেকটা পদ্ধতি আছে- সিজ বাথ। ৩ মিনিট গরম পানিতে কোমর ডুবিয়ে বসে থাকতে হবে। পরের ২/১ মিনিট ঠাণ্ডা পানিতে। এভাবে ২০/২৫ মিনিট সিজ বাথ নিতে হবে। এটাও সপ্তাহে টানা ৩/৪দিন নিতে হবে। শুধু পানি বা পানিতে কিছু লবন, বেকিং সোডা বা ভিনেগারও ব্যবহার করা যায়।

আরেকটা পদ্ধতি আছে- কেজেল ব্যায়াম। এটাও খুব উপকারী। এগুলো করলে যোনি মধ্যে রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত না হয়ে আবার ঠিকঠাক হয়ে যাবে, ব্যাথাও কমে যাবে।

কেজেল ব্যায়াম/কেজেল এক্সারসাইজ:
কেজেল ব্যায়াম/কেজেল এক্সারসাইজ/ কেজেল এক্সারসাইজ (Kegel exercises) প্রস্রাবের উপর নিয়ন্ত্রণ এবং শ্রোণী এলাকা (পেলভিস) অর্থাৎ তলপেটের নিম্নভাগের মাংশপেশীর সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে। এখানে কেগেল ব্যায়াম কিভাবে সঠিক ভাবে করতে হয় তার একটা স্টেপ বাই স্টেপ গাইড দেয়ার চেষ্টা করা হলো।

কেগেল ব্যায়াম শ্রোর্ণী মেঝের পেশীকে দৃঢ এবং শক্তিশালী করে যা জরায়ু, মূত্রথলি এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাকে সাহায্য করে। আপনি প্রায় যে কোনো সময়ে শুয়ে বা বসেকেগেল ব্যায়াম করতে পারেন। এমনকি গর্ভবতী অবস্থায়ও করা যেতে পারে। কেন কেগেল ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ- সেটা আগে বুঝতে হবে।

অনেক কারণে আপনার শ্রোর্ণী মেঝের মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যেতে পারে। গর্ভাবস্থা থেকে সন্তান প্রসব, বয়স বৃদ্ধি, এমনকি মুটিয়ে গেলে বা ওজন বৃদ্ধি পেলেওএমন হতে পারে। এ কারণে শ্রোণী অঙ্গ থেকে যোনির অনেক পেশী ঢিলা হয়ে নিচেরদিকে নেমে যেতে পারে। এতেপ্রস্রাবের চাপ সহ্য করার ক্ষমতা কমে যাওয়া সহআরো অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

কেগেল ব্যায়াম কিছু অবশ্যম্ভাবী ঘটনাকে বিলম্বিত করে, শ্রোর্ণী অঙ্গ স্থানচ্যুতি এবং সম্পর্কিত উপসর্গ প্রতিরোধ করে আপনার তারুণ্য অনেকদিন ধরে রাখতে পারে। এছাড়া যাদের চরমপূলক লাভে সমস্যা হয় তাদের জন্যও এটা উপকার হতে পারে।কিভাবে কেগেল ব্যায়াম করতে হয়- সেটা জানার আগে আপনার শ্রোর্ণী মেঝের পেশী চিহ্নিত করে নিতে হবে এবং কিভাবে পেশী সংকুচন এবং প্রসারণ করতে হয়।

প্রথমে পেশী খুঁজে নিতে হবে। যোনির ভিতর আঙ্গুল ঢুকিয়ে পার্শ্ববর্তী পেশীগুলো সংকুচন করার চেষ্টা করুন। আপনার যোনি আঁটা এবং আপনার শ্রোর্ণী মেঝের পেশীগুলো ঊর্ধ্বাভিমুখী মনে হবে। তারপর পেশী শিথিল করে দিন। দেখবেন শ্রোণীপেশীগুলো আবার আগের অবস্থানে ফিরে এসেছে।

প্রস্রাব করার সময় দু-একবার প্রস্রাব করার প্রবাহ বন্ধ করে দিন। সফল হলে বুঝলেন প্রাথমিক ধাপটা পার হতে পারছেন। (প্রস্রাব করার প্রবাহ বন্ধ করাটা বার বার বা অভ্যসে পরিণত করবেন না।) মূত্রথলি পরিপূর্ণ অবস্থায় বা প্রস্রাব করার সময় কেগেল ব্যায়াম করবেন না। এতে পেশী আরো শিথিল হয়ে যাবে বা প্রস্রাব করা অপূর্ণ থেকে যাবে যা মূত্রনালিতে সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

এবার পূর্ণ পদ্ধতি। শ্রোণী এলাকা (পেলভিস) অর্থাৎ তলপেটের নিম্নভাগের মাংশপেশীর অবস্থান নির্ণয় করা হয়ে গেলে বা বুঝতে পারার পর মূত্রথলি সম্পূর্ণ খালি করবেন। তারপর চেয়ারে বসে বা মেঝে/বিছানায় শুয়ে পড়বেন। পেলভিস মাসল সংকুচন করুন। ৫ সেকেণ্ড ধরে রাখুন। ৫ সেকেণ্ড পরেশিথিল করে দিন। এভাবে একটানা ৪/৫ বার করুন। এভাবে ধীরে ধীরে ৫ সেকেণ্ডের জায়গায় ১০ সেকেণ্ড করে করার চেষ্টা করুন।

শুধু শারীরিক ভাবে নয়, মানসিক ভাবেও পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। ভালো ফলাফলের জন্য শুধু পেলভিস মাসলের উপরই মনোযোগ দেবেন। খেয়াল রাখবেন- পেটের পেশী, উরু, নিতম্বের পেশীতে যেন টান না পড়ে বা সেগুলো সংকুচিতনা হয়। শ্বাস-প্রশ্বাস ধরে বা বন্ধ রাখবেন না। স্বাভাবিক অবস্থায় যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস নেন, এই ব্যায়ামের সময়ও সেভাবে নেবেন।

ব্যায়ামটি ১০ বার পুনরাবৃত্তি করে ৩ টি সেটকরবেন এবং দিনে ৩ বার করার চেষ্টা করবেন। এজন্য আলাদা সময়ের দরকার নাই। অন্যান্য কাজের ফাঁকেই এটা করতে পারেন। যেমন কম্পিউটারের কাজ করার সময় বা সোফায় বসে টিভি দেখার সময়, বিছানায় গড়াগড়ি দেয়ার সময়।ব্যায়ামটি চেষ্টা করেও করতে না পারলে লজ্জিত হবার কিছু নাই। এখানে প্রশ্ন করতে পারেন বা আপনার ডাক্তারের পরামর্শনিতে পারেন।

যদি একাগ্রতার সাথে সঠিক ভাবে কেগেল ব্যায়াম করতে পারেন তাহলে ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যেই ফলাফল দেখতে পাবেন। আর ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ হবে না। সেক্সের সময় যোনি মধ্যে ব্যথা কমে যাবে, বেশীক্ষণমিলিত হতে পারবেন, মিলনে আগের চেয়ে বেশী সুখানুভূতি হবে। আরো অনেক সুবিধা পাবার জন্য এটা করা অব্যাহত রাখা উচিত।
ভিডিও টি দেখুন:

 

আমাদের দেশের অনেক মেয়েদেরই শারীরিক ফিটনেস ভালো নয় বলে এরকম সমস্যা বেশি হয়। একে একে এই পদ্ধতিগুলোর কথা সবাইকে বলে দিন। একজন আরেকজনকে বলে দিন। এই অবাঞ্চিত সমস্যা থেকে মুক্ত থাকুক আমাদের নারী সমাজ।

চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/২০১৫

 

নিয়মিত ফেসবুকে নিউজ পেতে লাইক দিন : www.facebook.com/chandpurtimesonline/likes

চাঁদপুর টাইমস’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।