ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরুতে তার ওই রকম পরিচিতি ছিল না। তবে তার ব্যাপক পরিচিতি এনে দিয়েছে দেশব্যাপী চরম আলোচিত কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত হওয়াটা। আন্দোলনকারী সংগঠনের নাম দেয়া হয় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। নেতৃত্ব দেয়ার কারণে এ সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয় তাকে।
পটুয়াখালীতে জন্ম নেয়া এই শিক্ষার্থী কোটা সংস্কার আন্দোলন করতে গিয়ে হামলা, মামলা ও কারাবরণের মুখোমুখি হন। এমনকি ডাকসু নির্বাচন চলাকালে নির্বাচনে অনিয়মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ছাত্রলীগের নারী প্রার্থীদের দ্বারা মারধরের শিকার হয়ে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। তারপরও তাকে দমিয়ে রাখা যায়নি। শেষ পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়ে তাকেই নেতা নির্বাচিত করেছেন।
ডাকসু নির্বাচনে তার প্রাপ্ত ভোট ছিল ১১ হাজার ৬২টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন পান ৯ হাজার ১২৯ ভোট।
এতক্ষণ যার কথা হলো তিনি নুরুলহক নুর। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে সরাসরি ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন। দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন হলো। আর এতেই ক্যারিশমা দেখালেন পটুয়াখালীর এই সন্তান।
সোমবার (১১ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হয়। নুরুল হক সোমবার দুপুরে নিজ ক্যাম্পাসে ‘হামলার শিকার’ হয়ে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। নুরুল হক তার ভিপি নির্বাচিত হওয়া ও ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেছেন,‘এ রকম নির্বাচন আমাদের কারোরই প্রত্যাশা ছিল না। ২৮ বছর পর এই নির্বাচন হয়েছে। সারা দেশের মানুষ তাকিয়ে ছিল। জাতীয় নির্বাচনের পর নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর মানুষের যে অনাস্থার সৃষ্টি হয়েছি-আমরা ভেবেছিলাম সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সেখানে আশার আলোর সঞ্চার করা হবে।
কিন্তু প্রশাসনের সহায়তায় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন যে কারচুপি করেছে তা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয় পুরো দেশকে হতাশ করেছে। আমর মনে করি ১১ মার্চের নির্বাচন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়।
শিক্ষার্থীরা যাকে এত আশা-আকাঙক্ষা নিয়ে নেতা নির্বাচিত করল তিনি শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব নেবেন কি-না সেটি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ তিনি আগেই ভোট বর্জন করেছেন। বর্জন করা ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি নুর ডাকসুর ভিপি হিসেবে শপথ নেবেন কিনা সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে অপেক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শপথ নেবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নুরুল হক নুর বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন বাদে বাকি সব সংগঠন এই নির্বাচন বর্জন করেছে। তাই তাদের সঙ্গে কথা বলেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এই নির্বাচন নিয়ে নুরের অভিমত, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করেছে। এই নির্বাচন পুরো দেশবাসীকে হতাশ করেছে।
বার্তা কক্ষ
১২ মার্চ,২০১৯
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur