চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ১২নং আশ্রাফপুর ইউনিয়নের চাঙ্গিনীর গ্রামে গৃহে স্ত্রী ও দু’সন্তান থাকা সত্তে¡ও একই গ্রামের প্রবাসী মো. জাকির হোসেনের স্ত্রী শারমিন বেগমকে নিয়ে উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় নানান গুঞ্জনসহ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার পর রুবেলের প্রথম স্ত্রী রুমা বেগম চাঁদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ও প্রেমিকা শারমিন বেগমের শ্বাশুড়ি রাহেলা বেগম বাদী হয়ে কচুয়া থানায় পৃথক দু’টি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
শারমিন বেগমের শ্বাশুড়ী রাহেলা বেগমের কচুয়া থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১ মে সকাল অনুমান ৮টার দিকে তার ছেলে ওমান প্রবাসী মো. জাকির হোসেনের স্ত্রী মোসা. শারমিন আক্তার একই গ্রামের নুরুল ইসলামের বিয়ে পাগল ছেলে মো.রুবেল হোসেনের হাত ধরে উধাও হয়ে যায় । শারমিন আক্তার ঘর ছাড়ার সময় তার স্বামী জাকির হোসেনের গৃহ থেকে নগদ ৫ লক্ষ টাকাও ৪ভরি স্বনালংকার্র নিয়ে যায় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। শারমিন আক্তারের শ্বাশুড়ী রাহেলা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেল, প্রায় ২০ বছর আগে স্বামীকে হারিয়ে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে অনেক কষ্ট করে সংসার ধরে রেখেছি। পুত্রবধু এ ভাবে টাকা-পয়সা ও স্বর্ন গহনা নিয়ে চলে যাবে তা ভাবতে পারিনি বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি আবেগ জড়িত কন্ঠে বলেন, পুত্রবধু পর পুরুষের হাত ধরে চলে যাওয়ার বিষয়টি শারমিনের বাবা-মাকে জানানোর পর, তারা বলে মেয়েটি কারো কথা শুনেনা, বরং চলে যাওয়ায় ভালো হয়েছে, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া করেন।
অন্য দিকে রুবেল হোসেনের ১ম স্ত্রী মোসা. রুমা বেগমও চাঁদপুর পুলিশ সুপার (এসপি) শামসুন্নাহারের কার্যালয়ে স্বামী ও সন্তানদের অধিকার ফিরে পাওয়ার দাবিতে লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, ২০০৯ সালের ২৫ শে অক্টোম্বর কচুয়া উপজেলার চাঙ্গিনী গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মো. রুবেল হোসেনের সাথে চাঁদপুর সদর উপজেলার উত্তর ইচলী গ্রামের মো. আনোয়ার শেখের মেয়ে মোসা. রুমা বেগমের সাথে পছন্দ করে একে অপরকে বিয়ে করে। বিয়ের পর তাদের গৃহে তানিয়া আক্তার (৭) ও তামিম (৫) নামের দু’টি ফুটফুটে সন্তান জন্ম হয়। বিয়ের কয়েক বছর তাদের সংসার বেশ আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হলেও মাঝ পথে রুবেল হোসেন বায়না ধরে বিদেশ যাওয়ার। এ জন্য রুবেল হোসেন তার স্ত্রী রুমা বেগমকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে ওই টাকা হাতিয়ে নিয়ে কিছু দিন পর ঢাকায় আত্ম গোপন থেকে ইমু নাম্বারে ফোন দিয়ে বিদেশে যাওয়ার পথিমধ্যে ভারতে আটকে আছে বলে রুমা বেগমের পরিবারের কাছে পুনরায় ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। গৃহবধু রুমা বেগম জানান, বিয়ের পর স্বামীর সংসারে অনেক নির্যাতন সহ্য করেছি। বর্তমানে প্রায় বছর খানেক ধরে গরীবি বাবার পিত্রালয়ে রয়েছি। স্বামী যখন যা চেয়েছে তখন তাই দিয়েছি, তার পরেও স্বামীর মন পাইনি। সংসারে দু’সন্তান রয়েছে। তন্মেধ্যে বড় মেয়েটি শারীরিক প্রতিবন্ধি তবুও সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমি স্বামীর সংসারে সন্তানদের নিয়ে থাকতে চাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রুবেল হোসেনের বাবা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে দোষী হলে আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবি করছি। তিনি আরো জানান, এ নিয়ে গত ৯ মে চাঁদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে দু’ পক্ষের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়েছে। এতে রুবেল হোসেন প্রবাসী জাকির হোসেনের স্ত্রী শারমিন বেগমকে নিয়ে উধাও হয়ে যায়নি বলে দাবি করেন।
কচুয়া করেসপন্ডেন্ট