বর্ষাকাল হলো ইলিশ ধরার মৌসুম। আর দু’মাস পরেই প্রায় মাসখানেকের জন্যে বন্ধ হয়ে যাবে ইলিশ ধরা। সাধারণত ভরা বর্ষা মৌসুমে সাগর থেকে দল বেধে মেঘনায় আসতে থাকে ছোট বড় মাঝারি ইলিশ।
ঝাঁকে ঝাঁকে উঠে আসে জেলেদের জালে। এসেছে বর্ষা, শুরু হয়েছে ইলিশ ধরার ধুম। তবে এখনো উৎসবমুখর হয়ে ওঠেনি ইলিশ শিকারিদের কাছে। তাই সারাদেশের মতো উৎপাদন ও বিপণন জেলা হিসেবে চাঁদপুরেও ইলিশের সরবরাহ অনেক কম। তাই দামও বেশ বাড়তি, বলা চলে অধিকাংশ মানুষের নাগালের বাইরে।
কথা হয় জেলে রাকিবুদ্দিনের সঙ্গে। যিনি ট্রলার নিয়ে নদীতে ইলিশ শিকার করেন। তার দাবি, ‘নদীতে এখনও ইলিশের বিচরণ শুরু হয়নি। ইলিশ এখন সাগরে অবস্থান করছে। আসছে ভাদ্র-আশ্বিন মাসে সাগরের ইলিশ নদীতে চলে আসবে। ওই সময়টাই ইলিশের ভরা মৌসুম। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরতে আমাদের আরও কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।’
গত বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) সকালে পাইকারী মৎস আড়ত ঘুরে দেখা যায়, ইলিশ বিক্রেতাদের ঘিরে অনেকে ভিড় জামিয়ে আছেন। কাছে যেতেই দেখা গেল, ইলিশের ডালা ঘিরে যারা দাঁড়িয়ে আছেন তাদের অধিকাংশই ইলিশ দেখছেন, দরদাম করছেন। অপরদিকে, বিক্রেতা দর হাকাচ্ছেন। ইলিশ বিক্রেতাদের দাবি খুব স্বল্প পরিমাণে ইলিশ বাজারে এসেছে, তাই দামও একটু বাড়তি।
পাইকারী এই আড়তে খুচরা বিক্রেতা ও হোটেল ব্যবসায়ীদের দেখা গেলো দরকষাকষি করে ইলিশ কিনছেন। সাধারণ ক্রেতারা দরদাম করছেন, কিন্তু অধিকাংশই ইলিশ না কিনে ফিরে যাচ্ছেন। কথা বলে জানা গেল, ইলিশের দাম নাগালের বাইরে।
কথা হয় ইলিশের খুচরা বিক্রেতা আরমান আলীর সঙ্গে। তিনি আড়তের ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ইলিশ কিনে সেখানেই খুচরা বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, ‘বাজারে ইলিশ নেই, যেগুলো আছে সেগুলোর বাড়তি দাম অনেক। তাই ক্রেতারা দাম জিজ্ঞাসা করে কিন্তু ইলিশ না কিনে চলে যায়।’একই কথা বললেন, পাশের খুচরা ইলিশ বিক্রেতা শাজাহান মিয়া।
বাজারে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ইলিশের দরদাম করে ফিরে যাচ্ছেন বাবুল। তিনিও বাড়তি দামের কথা জানালেন এই প্রতিবেদককে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ভেদে ইলিশের দাম কমবেশি। জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ছয়শ টাকা, নয়শ গ্রাম ওজনের ইলিশ এক হাজার দুই শত টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ এক হাজার চারশ থেকে এক হাজার ছয়শ টাকা, এক কেজি চারশ থেকে এক কেজি সাতশ গ্রাম ওজনের ইলিশ এক হাজার আটশ থেকে দুই হাজার টাকা, দুই কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশের দাম হাকানো হচ্ছে দুই হাজার চারশ থেকে দুই হাজার ছয়শ টাকা।
এক আড়তের ম্যানেজার জানান, ‘ইলিশ কম আসায় দাম একটু বাড়তি। কয়েক সপ্তাহ পর ইলিশের দাম কমতে পারে। কেননা কয়েক সপ্তাহ পর ইলিশের সরাবরাহ বাড়বে। তখন জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে।
বার্তা কক্ষ