প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও অনিয়ম স্বীকার করে শিক্ষামন্ত্রীকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু। আর তিনি পদত্যাগ না করলে তাকে বরখাস্ত করে নতুন মন্ত্রী নিয়োগ করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্তের অনুরোধ করেন সরকারের শরীক জাতীয় পার্টির সাবেক এ মহাসচিব। এ সময় তার বক্তব্যের শেষে ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, নিশ্চিয়ই প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি শুনেছেন, তিনি তার বিবেক-বিচেনায় জাতির স্বার্থে যতটুকু করার প্রয়োজন অবশ্যই তিনি করবেন।
জিয়া উদ্দিন বাবলু বলেন, প্রশ্নফাঁস মহামারী আকারে বিস্তার লাভ করছে। এটি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বলা হয়েছিল যে প্রশ্নফাঁসকারীকে ধরিয়ে দিতে পারলে তাকে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কৃত করা হবে। অথচ আজ তুষার শুব্র নামে একটা সাইডে বলা হয়েছে ইংরেজি প্রশ্ন আছে, সংগ্রহ করতে হলে এত টাকা লাগবে?
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হয়েছে, হচ্ছে। বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ কয়েক বছরে আমাদের অনেক অর্জন হয়েছে। কিন্তু আগামী প্রজন্মকে যদি সত্যিকার শিক্ষায় শিক্ষিত করতে না পারি, আর শুধু সনদ বিক্রির জন্য যদি শিক্ষিত করি তাহলে তো কিছুই শেখবে না। এ শিক্ষা অর্থহীন। আমরা আগামীতে কাদের হাতে দেশটা দিয়ে যাব। শিক্ষিত সমাজ ছাড়া সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারব না। আমরা চাই সত্যিকার শিক্ষা। প্রধানমন্ত্রী চান জ্ঞানভিত্তিক সমাজ, আমরাও চাই জ্ঞানভিত্তিক সমাজ।
বাবলু বলেন, ‘কয়েকদিন আগে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষা অধিদফতরের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন আপনারা ঘুষ খান সহনীয় পর্যায়ে। তিনি এও বলেছেন, আমিও ঘুষ খাই, অন্য মন্ত্রীরাও ঘুষ খান। এটা বলার পরে উনি মন্ত্রী হিসেবে থাকতে পারেন? আর একজন মন্ত্রী একথা বলতে পারেন? এটা যখন ছাত্ররা শুনবে মন্ত্রী বলছেন সহনীয় পর্যায়ে ঘুষ খেতে, তাহলে প্রশ্নফাঁস ঠেকাবেন কীভাবে। উনার উচিত ছিল সেদিনই পদত্যাগ করা। প্রধানমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি।
যে মন্ত্রী ঘুষ সহনীয় মাত্রায় খেতে বলেন, সেই মন্ত্রীর কথা তো কেউ শুনবেই না। তার সচিব শুনবেন না, অধিদফতরের কর্মকর্তারা শুনবেন না, কেউ শুনবেন না। মন্ত্রী যেখানে ঘুষ খেতে উৎসাহিত করছেন, তাহলে কীভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ন্ত্রণ করবেন, এটা আমার বোধোদয় হয় না। তাই অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রী তার ব্যর্থতা, দুর্নীতি, অনিয়ম স্বীকার করে নিয়ে পদত্যাগ করুন। অথবা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি তাকে বরখাস্ত করে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য এবং শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে নতুন মন্ত্রী নিয়োগ করবেন।
(জাগো নিউজ)
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০: ৫৫ এ.এম, ০৬ ফেব্রুয়ারি২০১৮,মঙ্গলবার ।
এএস.