চাঁদপুরের সোনালী, অগ্রণী, জনতা, কৃষি ও ইসলামী ব্যাংকের ৮৭ টি শাখায় ২০১৭ এর ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০৩৭ কোটি টাকার বৈদেশিক র্যামিটেন্স অর্জন হয়েছে।
চাঁদপুরের জনশক্তি ও কর্মসংস্থান কার্যালয় সূত্র মতে, মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চাঁদপুরের বৈধ ২ লাখ ৬৬ হাজার শ্রমজীবী নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে তাদের নিকটতম স¦জনদের কাছে ব্যাংক ও অন্যান্য এজেন্সির মাধ্যমে র্যামিটেন্স প্রেরণ করে থাকেন। অবৈধ রয়েছে আরো অসংখ্য, যার কোনো পরিসংখ্যান জানা সম্ভব হয়নি।
চাঁদপুরের প্রবাসীদের শ্রমের বিনিময়ে পাঠানো র্যামিটেন্স জেলার প্রায় দু’শতাধিক ব্যাংক শাখায় ,ক’শ শপিংমলে ও হাটবাজারে অর্থের তারল্য সৃষ্টি করছে।
জেলার ব্যবসা-বাণিজ্যে,শিক্ষা, কৃষি ,স্ব-স্ব এলাকায় অবকাঠামোর উন্নয়ন, মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রের চিত্র পাল্টে দিয়েছে প্রবাসীদের বৈদেশিক র্যামিটেন্স। দিন দিন নতুন নতুন ভবন নির্মিত হচ্ছে। এক শ্রেণির কর্মজীবি মানুষের কর্মসংস্থান বাড়ছে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো.আব্দুল সবুল মন্ডল কিছ’দিন পূর্বে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের এক আলোচনা সভায় বলেছেন,
‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ১ কোটির মত বাংলাদেশি প্রবাসী রয়েছে। প্রবাসীর বেলায় দেশের অন্যান্য জেলার মধ্যে চাঁদপুরের অবস্থান এখন ৬ষ্ঠ।’ নদীমাতৃক চাঁদপুরের জন্য এটি একটি বিশাল প্রাপ্তি মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে চাঁদপুরের প্রবাসীদের বেশিরভাগই মধ্যপ্রাচ্য তথা আরব দেশগুলোতে শ্রম ব্যয় করছেন। বর্তমানের কিছুটা সমস্যায় পড়েছে সৌদি প্রবাসীরা ।
এ ছাড়া মালয়েশিয়া, ইতালি, ফ্রান্সসহ, সিংগাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ অনেক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাঁদপুরের প্রবাসী কর্মজীবী রয়েছে। তাঁরাই ওই সব র্যামিটেন্স পাঠাচ্ছেন।
চাঁদপুরের সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও কৃষি ব্যাংকের আঞ্চলিক কার্যালয়গুলো সূত্রে জানা যায়, সোনালী ব্যাংকের ২০ টি শাখা চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ কোটি ৭১ লাখ টাকা। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ২৮ টি শাখায় ৫৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। জনতা ব্যাংকের ১৭ টি শাখা ৩৯১ কোটি টাকা। অগ্রণী ব্যাংকের ২০ টি শাখা ৫৮০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা বৈদেশিক র্যামিটেন্স অর্জন করেছে ।
চাঁদপুরের প্রবাসীরা প্রতি মাসে এ সব র্যামিটেন্স বিভিন্ন অর্থলগ্নী আন্তর্জাতিক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে এসব র্যামিটেন্স প্রেরণ করে থাকে।
কোনো কোনো ব্যাংক কেবলমাত্র গোপন একটি পিন নাম্বারের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করছেন। অনেক প্রবাসী গ্রাহক তাদের ব্যক্তিগত হিসাবেও অর্থ প্রেরণ করেন । বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেনতুন নতনি শ্রম বাজার উম্মুক্ত হওয়ায় প্রবাসী সংখ্যা ও বৈদেশিক র্যামিটেন্স অর্জন বাড়ছে ।
প্রবাসীরা টাকা প্রেরণের কয়েক মিনিটের মধ্যেই ব্যাংক তার গ্রাহককে কাংখিত অংকের টাকা প্রদান করতে সক্ষম। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত বিভিন্ন অর্থলগ্নি এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশি প্রবাসীরা তাদের নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে ওই অর্থ প্রেরণ করেন বলে অগ্রণী ব্যাংকের একজন কর্মকর্ত বলেন।
এদিকে চাঁদপুরের উত্তরা, রূপালী, ফার্মাস, মার্কেন্টাইল, প্রাইম, ডাচ বাংলা, সিটি, ন্যাশানাল, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল, ট্রাস্ট প্রভৃতি ব্যাংকগুলো প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ লেনদেন করলেও চাঁদপুরে এসব ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণকারী বিভাগীয় অফিস কুমিল্লা থাকায় তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।
প্রতিবেদক : আবদুল গনি
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০:৩০ পিএম, জানুয়ারি ২০১৮,শুক্রবার
ডিএইচ