হাজীগঞ্জে ৪০০ একর কৃষি জমি হুমকির মুখে

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার অভাবে প্রায় ৪০০ একর কৃষি মাঠে চাষাবাদ ব্যাহত হয়ে পড়েছে। বিএডিসির সেচ প্রকল্পের মটর থাকলেও পরিচালনার অভাবে কৃষকদের ইরি বোরো চাষাবাদে তেমন কোন কাজে আসছে না। তাইতো স্ক্রিম ম্যানেজার ও স্থানীয় কৃষকদের প্রাণের দাবি পানি নিষ্কাশনের সুবিধার্থে পাকা ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার বাস্তবায়ন চাই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ১১ নং হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের পাতানিশ, নোয়াপাড়া, সাদিপুরা চাঁদপুর ও সীমান্তবর্তী কচুয়া উপজেলার কালচোঁ এ চার গ্রামের ৪২০ একর কৃষি মাঠ। পানি নিষ্কাশনের জটিলতার কারনে এ মাঠের কিছু অংশে দুই ধরনের ফসল উৎপাদনের সুযোগ থাকে। গত কয়েক বছর ধরে সেচ প্রকল্পের জটিল দেখা দিলে অনেক আবাদি জমি চাষাবাদ ছাড়াই পড়ে থাকতে দেখা যায়। এরই মধ্যে উপজেলা বিএডিসি আওতায় মাঠের কিছু অংশে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করলেও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সঠিক ভাবে পানি পাচ্ছে না এখানকার কৃষকরা। তাছাড়া গত বছর বিএডিসি পাম্প থেকে পানি না উঠার দুর্ভোগে অনেক কৃষক চাষাবাদ করতে পারেনি বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

১৩ জানুয়ারি শনিবার এ মাঠের পাতানিশ ও কালচোঁ কৃষি মাঠে স্থানীয় স্ক্রিম ম্যানেজার দিদার হোসেনের প্রতিনিধি রাশেদের নেতৃত্বে পূর্বের ড্রেনে ভ্যাকু লাগিয়ে সেচের পানি লাইনের কাজ করছে। মূলত সমতাল ভাবে দূরবর্তী আবাদি জমিতে পানি প্রবেশের জন্যই কৃষকদের সুবিধার্থে এমন সুন্দর উদ্যোগ গ্রহন করে স্ক্রিম কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় কৃষক মুকলেছুর রহমান, মেহেরাজ ও মালেক মিয়া বলেন, আমাদের চার গ্রামের বৃহত্তর এ কৃষি মাঠে প্রায় ৪০০ একর আবাদি জমি রয়েছে। পূর্বে এ মাঠ থেকে মনে মনে ধান হতো। বর্তমানে পানি নিষ্কাশনের জটিলতা দেখা দেওয়ায় চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই কৃষকদের চাষাবাদের কথা মাথায় রেখে পাকা ড্রেনেজ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা।

মাঠ স্ক্রিম ম্যানেজার দিদার হোসেন বলেন, হাজীগঞ্জ কচুয়া সীমান্তে পাতানিশ, নোয়াপাড়া, চান্দু, কালচোঁ গ্রামের ৪২০ একর কৃষি মাঠ পানি নিষ্কাশনের দুর্ভোগে ভুগছেন স্থানীয় কৃষকরা। কৃষকদের চাষাবাদের সুবিধার্থে আমরা ভ্যাকু লাগিয়ে ড্রেন চালু করছি। পাকা ড্রেন হলে আর প্রতি বছর এ ভাবে ভ্যাকু বসানো লাগবে না।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সবুজ মিয়া চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, উপজেলা বিএডিসি আওতায় সেচ পানির জন্য যে মোটর লাইন সরকার দিয়েছে তা সঠিকমত জমিতে পানি যাচ্ছে না। মূলত ড্রেন পাকা করে যদি বৃহৎ লাইন করা যায় তাহলে সকল কৃষক সঠিক ভাবে জমিতে পানি পাবে।

হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএডিসি অফিসার মামুনুর রশিদ চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, আমরা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বৃহত্তর এ কৃষি মাঠে ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য চেষ্টা করবো কিন্তু সে ক্ষেত্রে কৃষক বা স্ক্রিম ম্যানেজার স্বাক্ষরিত আবেদনের মাধ্যমে এগিয়ে আসতে হবে।

হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, আমাদের এ মাঠে দুই ধরনের ফলন হয়। দেখা যায় দক্ষিণ অঞ্চলের ধান কাঠার সময় হলে উত্তর অঞ্চলের কৃষকরা জমিতে ধান রোপন করে। তার পরেও কৃষকদের সুবিধার্থে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার জন্য সুপারিশ রাখবো।

প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, ১৪ জানুয়ারি ২০২৪

Share