Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জ / হাজীগঞ্জে সাড়ে ৯ হাজার হেক্টরে ইরি-বোরো চাষাবাদ করবে কৃষকরা
amon-irri

হাজীগঞ্জে সাড়ে ৯ হাজার হেক্টরে ইরি-বোরো চাষাবাদ করবে কৃষকরা

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় ১ টি পৌরসভা ও ১২ টি ইউনিয়নের কৃষি মাঠে চলতি বছর সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।

হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি ইরি বোরো মৌসুমে ৯ হাজর ৫শ হেক্টর জমিতে এবার ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বিগত বছরে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ইরি আবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় চলতি বছর প্রায় ৭০ হেক্টর জমি কম থাকলেও বাম্পার ফলনের আশাবাদে কাজ করছে কৃষি অধিদপ্তর। ইতিমধ্যে পৌরসভাসহ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে প্রদর্শনী করতে কাজ শুরু করেছে বলে জানা যায়।
তবে গত কয়েক বছর খরচের তুলনায় ধানের ন্যার্য মূল্য না থাকার ফলে কৃষকরা আবাদে কম ঝুঁকে পড়তে দেখা যায়। এ বছর থেকে আশানুরুপ মূল্য পাওয়ায় উৎপাদন ভালো হলে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন তারা।

এদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এখানকার কৃষকরা এরইমধ্যে বিজতলার জন্যে কাজ করে যাচ্ছে। সেই সাথে বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে জমিতে কচুরি ও আবর্জনার নানা স্তপ করে রাখতে দেখা যায়। যা পরবর্তীতে এসব স্তুপ শুকানোর পর আগুন জ্বালিয়ে চাই তৈরি করে হাল দেওয়ার পর জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করবে বলে জানান এখানকার কৃষকরা।

এছাড়াও দেখা যায় গত কয়েক যুগ ধরে উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ মাঠে দুই ধরনের ফসল উৎপাদন হচ্ছে। উত্তর মাঠে দেখা যায় বর্ষার সময় আউস ধানের ফলনসহ খড়া মৌসুমে ইরি ধানের ফলনও উৎপাদন করছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। আর দক্ষিন অঞ্চলের মাঠগুলো নিচু হত্তয়ার কারনে ও একাধিক ব্রিক ফিল্ড গড়ে উঠায় শুধু মাত্র খড়া মৌসুমে ইরি-বোরো চাষাবাদ ছাড়া অন্য কোন ফসল উৎপাদন করতে দেখা যায় না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মনি সুত্রধর চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘চলতি মৌসুমে হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রায় সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদ হবে । সেই লক্ষ্যে কৃষকরা জমি পরিচর্যার কাজে নেমে পড়েছেন । সে সাথে সরকারী বীজের প্রজেক্ট ইতিমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি । সরকারি প্রাপ্তি স্বাপেক্ষে আনুমানিক ৫০টি প্রদর্শনী হবে । এই ৫০ টি প্রজেক্টের মাধ্যমে আমরা পৌর এলাকাসহ পুরো উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে একেক টি ইউনিয়নে ৩/৩৪ টি করে প্রদর্শনী করতে কাজ করে যাচ্ছি। দেখা যায় এরইমধ্যে বাড়ীর আঙ্গিনা কিংবা উচু জমিতে ধানের চারার জন্য ঘের তৈরি করা হয়েছে। আগামী ১৫/২০ দিন পর নিচু জমিতে পানি আটক করে ধানের চারা লাগানো হবে। বাকি মাঠ চাষাবাদের জন্য জানুয়ারি ও ফেব্রæয়ারি মাসে সম্পন্ন হবে বলে জানা যায়।

কৃষি অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, উপজেলায় প্রায় ছোট বড় দেড় শতাধিক কৃষি মাঠ রয়েছে। যা থেকে এ বছরেও ফসল উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে প্রায় দশ হাজার মেট্রিক টন। তবে এ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা গত কয়েক বছর ধরে সমান ভাবে থাকলেও চলতি বছর অনেক কৃষকই সার ও কীটনাশক বৃদ্ধিসহ নানা কারনে ইরি-বোরো চাষাবাদ না করে রবি শষ্য উৎপাদনে মনোনিবেশ হতেও দেখা যায় ।

এর কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘কৃষকরা চলমান চাষাবাদের খরচের সাথে ধান বিক্রয় কালে ন্যায্য মুল্য না পাওয়া। দক্ষিন অঞ্চলের কৃষি মাঠগুলো থেকে একাধারে ব্রিকফিল্ড মালিকরা মাটি উত্তলনে চাষাবাদে বিঘœ সৃষ্টি ।

এছাড়াও নানা প্রতিকূলতার কারণে দিন দিন ধান উৎপাদন কমে যাচ্ছে এ উপজেলায়।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে আরো জানা যায়, বোরো বাবদ ৫০ জনকে পদর্শনীতে অন্তভূক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া জিরাশাইল,পারিজা,ব্রি-২৮,২৯ ও ৫০ এবং বি-আর ১০ জাতের ধান রোপন করা হবে এখানকার প্রায় সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে।

কৃষি কর্মকর্তা নয়ম মনি সূত্রধর চাঁদপুর টাইমসকে আরো জানান, ‘উপজেলার আলু ল্যক্ষমাত্রার জন্য এক হাজার হেক্টর ও শরিসার লক্ষ মাত্রা প্রায় ৪শ হেক্টর নির্ধারন করা হয়েছে । এসব রবি শষ্য আবাদ উঠার পর আরও কিছু জমিতে বিলম্বে ধান রোপনের সম্ভাবনা রয়েছে।’

জহিরুল ইসলাম জয়
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮:১০ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭, রোববার
ডিএইচ