হাজীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। কিছু কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মাঝে হট্রগোল সৃষ্টি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাওয়ায় পরিশ্চিতি স্বাভাবিক হয়। পরে স্বাভাবিক নিয়মে পুনরায় ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
৩০ জানুয়ারি শনিবার সকাল ৮ থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। তবে এবারের নির্বাচনে সকাল ৭ টা থেকে নারী পুরুষের অংশগ্রহনে প্রায় দুই থেকে তিনশত ফুট দূরত্বে ভোটারদের লাইনের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
সকাল ৯ টায় বর্তমান মেয়র আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আ স ম মাহবুব-উল আলম লিপন ভোট দিয়েছেন ৬নং ওয়ার্ড গালর্স বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ও বেলা ১০ টায় ভোট দিয়েছেন বিএনপির মনোনিত প্রার্থী সাবেক মেয়র আব্দুল মান্নান খান বাচ্চু একই কেন্দ্রে।
হাজীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে ১২টি ওয়ার্ডে মোট ভোট কেন্দ্র ২০টি। ভোট কক্ষ ১২৮টি এবং অস্থায়ী ভোট কক্ষ ১৯টি। নির্বাচনে মেয়র পদে ২ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫২ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। মোট ভোটার সংখ্যা ৪৫ হাজার ৩শ ৪৮জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২২ হাজার ৯৫৫ জন এবং মহিলা ভোটার ২২ হাজার ৯৩৩ জন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পৌর ৫নং ওয়ার্ড সিল্ডেন একাডেমীতে নতুন কেন্দ্রে সাময়িক ভোটারদের দাড়ানোর কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে। রান্ধুনিমুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১১ নং ওয়ার্ডে ভোটারদের উপস্থিতির কারনে ঠিকমত দাড়ানোর জায়গা খালি ছিল না। কিন্তু ব্যতিক্রম কেন্দ্র হিসাবে দেখা যায়, ১২ নং ওয়ার্ডের ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে। সেখানে মাঠ ও ভোট কক্ষ বড় হওয়ায় ভোটারদের তেমন কোন অসুবিধা পড়তে দেখা যায়নি।
দিনের শুরুতে তেমন কোন হট্রগোলের খবর পাওয়া না গেলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বেলা ১ টার দিকে পৌর ৩নং ওয়ার্ড খাটরা বিলওয়াই ভোট কেন্দ্রে বর্তমান কাউন্সিলর রায়হানুর রহমান জনির মাথায় আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটে পড়ে। কিন্তু কে বা কারা করেছে তা সঠিক জানা না গেলেও ভোট গ্রহণে তেমন কোন অসুবিধা পড়তে হয়নি।
এদিকে ৭ নং ওয়ার্ড টোরাগড়ে কাউন্সিলর প্রার্থীদের পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ ও প্রশাসনের এ্যাকশান লক্ষ করা যায়।
দুপুরের দিকে পৌর ৪নং ওয়ার্ড আমিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থীদের হট্রগোলে কিছু সময় ভোট গ্রহন বন্ধ থাকার পর পূণরায় চালু হয়।
দিনের শেষ সময় সাড়ে তিনটার দিকে পৌর ৫নং ওয়ার্ডে দুই কাউন্সিলর প্রার্থী রিটন চন্দ্র সাহা ও সুমন তফাদার সমর্থকদের মাঝে দাওয়া পাল্টা দাওয়া সৃষ্টি হলে সড়ক অবরোধ হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাওয়ায় দুই পক্ষের লোকজন ছত্রবঙ্গ হয়ে যায়। এখানে প্রায় ৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
এদিকে ভোট গ্রহন শেষ হলে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকদের পাশাপাশি নারী ও পুরুষ কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থকসহ সাধারণ মানুষ ফলাফলের অপেক্ষায় ঘন্টার পর ঘন্টা কেন্দ্রের সামনে অবস্থান নিতে দেখা যায়। সবগুলো কেন্দ্রের ফলাফল হাজীগঞ্জ উপজেলা ই-সেন্টারে যোগ হয়ে মেয়র পদে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
এদিকে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহনের লক্ষে সারাদিন ভোট কেন্দ্র ও তার আশপাশের এলাকায় নিয়োজিত ছিল ২ প্লাটুন র্যাব ও বিজিবি, ২ প্লাটুন র্যাব মোতায়নের পাশাপাশি প্রায় সাড়ে তিনশত পুলিশ মাঠে কাজ করতে দেখা যায়। এর বাহিরে ১২জন এক্িরকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এর আওতায় স্ট্রাইকিং ফোর্সও কাজ করেছে ।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.ওবায়েদুর রহমান জানান, নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি রেখে সম্পন্ন করা হয়েছে। শনিবার সকালে ভোট গ্রহনের পূর্বে আমরা প্রিসাইডিং অফিসারদের কাছে ব্যালট পেপার প্রেরণ করেছি।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তোফায়েল হোসেন বলেন, আমাদের কাজ হচ্ছে শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন উপহার দেওয়া। তা আমরা সম্পন্ন করতে পারায় ভোটার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই।
প্রতিবেদকঃজহিরুল ইসলাম জয় ৩০ জানুয়ারি ২০২১