Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জ / হাজীগঞ্জে মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে এলো ৮ ফুট লম্বা গুইসাপ
মাটি

হাজীগঞ্জে মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে এলো ৮ ফুট লম্বা গুইসাপ

নামের সঙ্গে সাপ আছে, এই যা। প্রকৃতার্থে এটি কোনো সাপ নয়। কামড়ায় না, সাপের মতো জিহ্বায় বিষ নেই। তারপরও এটিকে নিয়ে মানুষের কত বিচিত্র ভুল ধারণা। এসব ভুল ধারণার কারণে গুইসাপ আজ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা একটি প্রাণী। অথচ অত্যন্ত উপকারী বড় টিকটিকি আকৃতির এই প্রাণীটি একসময় গ্রাম বাংলায় চলতে-ফিরতে চোখে পড়ত।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌরসভার মকিমাবাদ এলাকায় একটি বসতঘর নির্মাণ করতে মাটি খুঁড়তে গিয়ে বেরিয়ে এলো বড় আকৃতির একটি গুইসাপ। নির্মাণশ্রমিক ও এলাকাবাসী গুইসাপটিকে জাল দিয়ে পাকড়াও করেছেন। গুইসাপটি লম্বায় প্রায় আট ফুট।

স্থানীয় বাসিন্দা বিপ্লব জানান, মাটি খুঁড়তে গিয়ে নির্মাণশ্রমিকরা বড় আকৃতির সাপটিকে দেখতে পান। সাপটিকে জালে বন্দি করে বন বিভাগকে অবহিত করা হয়। সকাল থেকে গুইসাপটিকে মাছ খেতে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কিছুই খায়নি।

নির্মাণাধীন বাড়ির মালিক বলাই চৌধুরী বলেন, ‘গুইসাপটি দেখে প্রথমে সবাই শিহরিত হয়ে পড়ি। পরে জালের ফাঁদে আটকে রাখা হয়।’

হাজীগঞ্জ উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে যাই। গুইসাপটি আট ফুট লম্বা। এটি এখানে নিরাপদ নয়। তাই শনিবার গুইসাপটিকে ঢাকা বন্য ও প্রাণী ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘গুইসাপ পরিবেশবান্ধব ও মানুষের জন্য অনেক উপকারী একটি প্রাণী। বর্তমানে এটি বিলুপ্তির পথে রয়েছে। এদের গড় আয়ু ২৫ থেকে ৩০ বছর। তবে অনেক সময় প্রাণীটি আরও দীর্ঘায়ু হয়।’

১৯৯০ সালে গুইসাপ হত্যার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বাংলাদেশ সরকার। নিষেধাজ্ঞার পর প্রাণীটির জীবনের প্রতি হুমকি অনেকটাই কমে এসেছে। তবে ইতোমধ্যে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে।

পরে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ ইউনিয়ন (আইইউসিএন) ২০০০ সালে প্রাণীটিকে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।

বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী গুইসাপ সংরক্ষিত। তাই এটি হত্যা, শিকার বা এর কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

স্টাফ করেসপন্ডেট, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩