হাইমচর

হাইমচর উচ্ছেদ অভিযান : প্রভাবশালীরা বহাল তবিয়তে

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার তেলির মোড়স্থ (সাবেক খাসের দীঘির পাড়) সরকারি খাস ভুমি হতে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান চলছে। গতবছরের ১৭ মার্চ এ অভিযান শুরু করেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহি অফিসার এস এম সরওয়ার কামাল। ওই অভিযান অজ্ঞাত কারনে মাঝ পথে এসে থমকে পড়ে।

রোববার পুনরায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন নবাগত উপজেলা নির্বাহি অফিসার আবু হাসনাত মোঃ মঈনউদ্দিন।

অভিযানে দরিদ্র বিধবা শুরাইয়া বেগমর বসত ঘর ভেঙ্গে দিলেও উচ্ছদের নোটিশ পাওয়া ৮ প্রভাবশালীদের দোকান পাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ না করায় এলাকাবাসীর মাঝে উচ্ছেদ অভিযান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।

উচ্ছেদ হওয়া দরিদ্র পরিবারটি সাবেক উপজেলা পরিষদ (অস্থায়ী) মেঘনার ভাঙ্গনের কবলে পড়লে শুরাইয়া বেগম তার ৭০ উর্ধ্ব বৃদ্ধা মাকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলো। চার কুলে তার কেউ না থাকায় এখান থেকে অন্যত্রে স্থানান্তরিত হয়ে উঠে নি।

গত ১২ ফেব্রয়ারি হাইমচর উপজেলা ভ’মি অফিস থেকে দখল মুক্ত করার জন্য ১২জন দখলদারকে নোটিশ দেয়্ াহয়। উচ্ছেদের নোটিশ প্রাপ্তির পরও দখল না ছাড়ায় গতকাল ভ’মি অফিসের লোকজন বিধবা শুরাইয়া বেগম, মৎস্য আড়তদার আহসান বেপারী, চা দোকানী নান্টু পাটওয়ারীসহ ৪ জনের বসত ঘর ওদোকান পাট উচ্ছেদ করা হয়।

এ ব্যাপারে শুরাইয়া জানায় আমি দখলকৃত ভ’মি আমার নামে বন্দোবস্ত দেয়ার জন্য আবেদন করেছি। তার পরও তারা আমারে একদিনের সময় দিলো না। কিন্তু সার্ভেয়ার আমাকে সময় দেয়া দুরে থাক গালমন্দ সহ মহিলা চকিদার দ্বারা আমাকে আটকের হুমকি দিয়ে বসত ঘরটি ভেঙ্গে দেয়। কিন্তু জমিনের সামনে দখলদার বড়ওয়ালাদের উচ্ছেদ করা হয় না। এটা কেমন বিচার।

মৎস্য আড়তদার আহসান বেপারী বলেন ‘বিগত ইউএনও স্যার ভ’মি অফিস নির্মানের জন্য উত্তর দিক থেকে উচ্ছেদ শুরু করেন। ইতিপূর্বে সেখানে ভ’মি অফিস করার জন্য সয়েল টেস্ট করান। কিন্তু সার্ভেয়ার প্রভাবশালীদের ইশারায় এখন আবার দক্ষিণ দিকে ভূমি অফিস করার কথা বলে আমাদের উচ্ছেদ করেন।’

তিনি ভূমিহীন অসহায় দরিদ্র বিধবা শুরাইয়া ও শরীয়তীকে এ ভাবে উচ্ছেদ অমানবিক বলে মন্তব্য করেন।

সরকারি ভূমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া বীরবিক্রম মরহুম এলাহী বক্স পাটওয়ারীর ছেলে সাবেক যুবলীগ সভাপতি শাহআলম পাটওয়ারী বলেন, ‘আমাকে ১বছর আগে কোন নোটিশ ছাড়া উচ্ছেদ করা হলেও ওই সম্পত্তিতে অন্যান্যরা বহাল তবিয়তে রয়েছে এমনকি অনেকেই নতুন করে ঘর উঠিয়ে দখল করেছে। কিন্তু এখন আবার দক্ষিণ দিক থেকে উচ্ছেদ এক প্রকার ষড়যন্ত্র। আমি এ ব্যাপারে আইনের আশ্রয় নিবো।’

একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ‘উচ্ছেদ না করার কথা বলে ভিটা প্রতি তাদের কাছ থেকে ১হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছে। যারা টাকা নিয়েছে আজ তাদের ঘর ঠিকই রয়েছে, যারা টাকা দিয়েছে তাদেরটা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।’

এ ব্যাপারে হাইমচর উপজেলা নির্বাহি অফিসার আবু হাসনাত মোঃ মঈনউদ্দিন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘এখানে ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও মৎস্য ফিসিং জোন নির্মাণের জন্য সরকারি সম্পত্তি দখল মুক্ত করতেছি, অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

প্রতিবেদক- বিএম ইসমাইল
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৫: ০০ এএম, ০৬ মার্চ ২০১৭, সোমবার
ডিএইচ

Share