Home / বিশেষ সংবাদ / স্কুল ছাত্রের সাঈদ ভ্যানে চলে সংসার-পড়াশোনা
স্কুল ছাত্রের সাঈদ ভ্যানে চলে সংসার-পড়াশোনা

স্কুল ছাত্রের সাঈদ ভ্যানে চলে সংসার-পড়াশোনা

বয়স মাত্র ১১ বছর। এই বয়সে বাবার আঙ্গুল ধরে তার স্কুলে যাওয়ার কথা। অথচ সেই তারই কাঁধে চেপে বসেছে সংসার, এমনকি নিজেরে স্কুলের পড়াশোনার খরচও।

কথা হচ্ছিল দিনাজপুর সদর উপজেলার ফাসিলাডাঙ্গা পরজপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে ও ফাসিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র মো. সাঈদ আলমের প্রসঙ্গে। এই শিশু যেমন ব্যাটারিচালিত ভ্যান চালিয়ে সংসারের খরচ যোগান দিচ্ছে, তেমনি পাল্লা দিয়ে মেধার প্রতিযোগিতা করছে সহযোগিতার সঙ্গে।

সাঈদ আলম জানায়, বাবা-মা’র অভাবের সংসারে সংগ্রাম করেই বাঁচতে হচ্ছে। সংসারে বাবা-মা, এক ভাই ও এক বোন রয়েছে। এদের মধ্যে একমাত্র বোন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ছে।

‘সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি বাবাই। তার পক্ষে আমাদের তিন বেলা খাওয়ার পাশাপাশি পড়াশুনা করানো সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বাবা আমার পড়াশুনা বন্ধ করে কাজে লাগিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।’

শিশু সাঈদ বলে, ‘আমি বাবাকে একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান কিনে দিতে বলি। বাবাও স্থানীয় একটি এনজিও থেকে টাকা উত্তোলন করে ভ্যান কিনে দেন আমাকে। এখন ভ্যান চালিয়ে এনজিও থেকে নেওয়া টাকা পরিশোধের পাশাপাশি নিজের ও ভাই-বোনের পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছি। আগামী বছর আমার ছোট ভাইকেও স্কুলে ভর্তি করতে হবে।’

যাত্রীসহ ভ্যানচালক সাঈদ ঈদ তার সংগ্রামমুখর দিনযাপনের গল্প তুলে ধরে বলে, ‘সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়া শেষ করে স্কুলে চলে যাই। স্কুল থেকে বাড়িতে ফিরে খাবার খেয়ে ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে যাই। রাত ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত আশপাশের এলাকাগুলোতেই ভ্যান চালাই। তবে, দূরে কোথায়ও যাত্রী নিয়ে যাই না।’

স্থানীয়রা তার ভ্যানে ভ্রমণের জন্য মোবাইলের মাধ্যমে তাকে ডেকে নিয়ে যায় বলেও জানায় সাঈদ।

ভ্যান চালিয়ে প্রতিদিন গড়ে আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা উপার্জন করে সাঈদ। এতেই সে তুষ্ট বলে জানায়।

স্থানীয় দাড়াইল দিঘি এলাকার আব্দুস সালাম রবিন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের আশপাশের বাজারগুলো যাতায়াতে সাঈদের ভ্যানই এখন জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। অনেকে তার সংগ্রামী জীবনের কথা ভেবে ভাড়া থেকেও অতিরিক্ত টাকা দেয়।

সাঈদ আলমের টিউশন শিক্ষক মো. রমজান আলী জানান, সাঈদ পড়াশোনায় খুবই ভালো। পড়াশোনার আগ্রহের কারণেই সাঈদ ভ্যান চালায়। সেজন্য তিনি সাঈদের কাছ থেকে পাঁচ মাস ধরে টিউশনি ফিও নিচ্ছেন না। (বাংলানিউজ)
নিউজ ডেস্ক:
আপডেট, বাংলাদেশ ৯:৩০ পি.এম, ৬ আগস্ট ২০১৭,রোববার।
এ.এস

Leave a Reply