সুন্দরী নারীদের নিয়ে ফাঁদ ‘হানিট্র্যাপ’

ফেসবুক থেকে বন্ধুত্বের শুরু। ধীরে ধীরে তা পরিণত হয় ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে। ভিডিওকলে আলাপচারিতা, আর সেই সুযোগে ঘনিষ্ঠ মুহুর্তের আপত্তিকর ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে ফেলা হয় ফাঁদে। এরপর ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নেওয়া হয় মোটা অংকের টাকা। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছে একটি চক্র।

এ চক্রের বাংলাদেশি দুই এজেন্টকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সাইবার ক্রাইম এন্ড স্পেশাল (দক্ষিণ) বিভাগ। গ্রেপ্তাররা হলেন টিপু সুলতান ও মোসলেম রানা। তবে মাস্টারমাইন্ড ভারতীয় নাগরিক শাকিলকে ধরতে পারেনি ডিবি।

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তার টিপু ও রানা দুজনেই কলেজ শিক্ষার্থী। টিপু রাজধানীর হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের ও মোসলেম রানা তিতুমীর কলেজে স্নাতকের শিক্ষার্থী। পড়াশোনার জন্য রাজধানীর কড়াইলে থাকতেন। চাকরিজীবি, শিক্ষার্থীসহ সমাজের প্রতিষ্ঠিতদের টার্গেট করে প্রতারণার ফাঁদ পাততেন তারা। এরপর এডিট করা ছবি/ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন।

ভুক্তভোগি এক যুবক জানান, প্রোফাইলে সুন্দরী নারীর ছবি দিয়ে টার্গেট ব্যক্তিদের ফেসবুক বা হোয়াটস অ্যাপে রিকোয়েস্ট পাঠাতো চক্রটি। এমনই একটি রিকোয়েস্ট আসে তার কাছেও। ভারতীয় মেয়ে বাংলাদেশে মেডিকেলে পড়তে চায়- এমন কথা বলে শুরু হয় কথোপকথন। কিছুদিন পর ভিডিও কলে কথা শুরু হলে ওই মেয়ের প্রেমের ফাঁদে পড়েন ওই যু্বক। এরপরই শুরু হয় ব্ল্যাকমেইল, অর্থ আদায়।

ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদ জানান, ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের প্রতারকরা এক হয়ে এমন অপরাধ করছে। দেশের উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুযা শিক্ষার্থীদের টার্গেট করতো চক্রটি। এ চক্রের মাস্টারমাইন্ড শাকিল। তিনি বিভিন্ন লোন অ্যাপস থেকে টার্গেট ব্যক্তিদের যোগাযোগের নাম্বার ও ফেসবুক লিংক সংগ্রহ করত। এরপর সুন্দরী তরুণীদের দিয়ে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ব্লাইকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নিতেন।

এজন্য ভুয়া ইউপিআই (ইউনিফাইড পেমেন্টস ইন্টারফেসে তাত্ক্ষণিক রিয়েল-টাইম অর্থপ্রদান ব্যবস্থা) ব্যবহার করতেন প্রতারকরা। যার লিংক পাঠানো হত বাংলাদেশি এজেন্ট টিপুকে। টিপু ইউপিআই পাঠাতেন পাকস্তিানি এজেন্ট পারভজকে। পারভেজ ভুক্তভোগীদেরকে কল দিয়ে/ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করতেন। সেই টাকা পাঠানো হত শাকিলকে। সেই টাকার ২৫ শতাংশ করে পেতেন এজেন্টরা।

টাইমস ডেস্ক/ ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩

Share